কড়া ডায়েট, সঙ্গে নিয়ম করে দু’বেলা শরীরচর্চা, সকালে সুইমিং- চটজলদি রোগা হতে নানা উপায় মেনে চলছেন। কষ্ট করে তার ফল মিলছে। পুজোর আগে ৩০ দিনেই ৫-৬ কেজি ওজন কমাতে বদ্ধ পরিকর অনেকেই। আর তাই অল্প সময়ে সাফল্য পেতে উঠে পরে লেগেছেন অনেকেই। কারণ পুজোর আগে যে মনের মতো শরীর চাইই চাই। তবে এত দ্রুত ওজন কমানো কি আদৌ ভাল? বিশেষজ্ঞদের মতে কিন্তু এটি আপনার শরীরের জন্য মোটে ভাল নয়। একধাক্কায় ওজন না কমিয়ে ধাপে ধাপেই তা কমানো ভাল।
এক মাসে কতটা ওজন কমানো স্বাস্থ্যকর?
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-র মতে, সপ্তাহে ৫০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজন কমলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর নয়। অর্থাৎ এক মাসে ২ থেকে ৪ কেজি ওজন কমানো যেতে পারে। তাতে কোনও ক্ষতি নেই।
এক ধাক্কায় অনেকটা ওজন একসঙ্গে কমানো কিন্তু মোটে ভাল কথা নয়। এর প্রভাব আমাদের শরীরে পড়বেই। এতে শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। বিপাকহার কমে যেতে পারে এতে। ধীরে ধীরে ওজন কমলে শরীর শারীরিক বদলগুলির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। এর ফলে কেবল শরীরের অতিরিক্ত মেদই গলে। পেশিতে তার প্রভাব পড়ে না। তবে দ্রুত ওজন ঝরাতে গেলে অনেক সময় মেদের বদলে শরীর থেকে জল কমে যেতে পারে, এমনকি পেশিও দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
দ্রুত ওজন কমাতে গিয়ে ক্যালোরির অভাব হওয়া খুব সাধারণ একটি সমস্যা। সাধারণত দৈনিক একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলার ১২০০ ক্যালোরি এবং পুরুষদের ১৫০০ ক্যালোরি প্রয়োজন। কিন্তু তা না পেলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।
আবার কড়া ডায়েটে রোগা হতে গিয়ে যদি কার্বোহাইড্রেট বা ফ্যাট জাতীয় খাবার একদম বাদ চলে যায় তাহলেও সমস্যা। খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাটের সঠিক সামঞ্জস্য প্রয়োজন। ফল, সব্জি শরীরে ভিটামিন ও খনিজের চাহিদা মেটায়। ওজন ঝরাতে গিয়ে পুষ্টিকর খাবার বাদ পড়লে কিন্তু শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। আচমকা অনেকটা ওজন কমলে শরীরে জলশূন্যতা, পুষ্টির অভাব, খনিজের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যেতে পারে। তাই সাবধান! চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই এই ধরনের অভ্যাসে নিজেকে ঠেলে দেওয়া উচিত। নাহলে বড় সমস্যা হতে পারে।