শরীরের যে কোনও আঘাতই সব সময় গুরুত্বের (Head Injury)। সামান্য কোনও আঘাত হলেও তা অবহেলা করার মানসিকতা রাখবেন না। আর যদি মাথায় আঘাত লাগে তাহলে কিন্তু তড়িঘড়ি চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। মাথায় লাগলে বা হাতে-পায়ে আঘাত লাগলে কিন্তু ততক্ষনাৎ বোঝা যায় না। তার ফল প্রকাশ পায় পরে। কিন্তু যে সময় প্রকাশ পায় তখন পরিস্থিতি আরও অনেক জটিল হয়ে যায়। আর তাই আঘাত লাগলে, চিকিৎসা করানো কিন্তু খুবই জরুরি। মাথায় আঘাত লাগলে অনেক সময় অভ্যন্তরীণ ( Brain Hemorrhagic stroke) বেশ কিছু ক্ষতি হয়। টিস্যু ছিঁড়ে যায়। সেই সঙ্গে রক্তনালীতে আঘাত লাগে। ফলে আভ্যন্তরীন রক্তক্ষরণও (Internal Bleeding) হয়। কোথাও পড়ে গিয়ে বা দুর্ঘটনা জনিত কারণে মাথায় আঘাত লাগতে পারে। সমীক্ষা বলছে, প্রতি বছর প্রায় ৭ কোটিরও বেশি মানুষ ভোগেন এই মাথায় আঘাত জনিত সমস্যায়। মাথায় চোট লাগার ঘটনা কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাক্সিডেন্ট সংক্রান্ত। তবে অনেক সময়ই শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি এবং যাদের রক্তনালী পাতলা তাদের ক্ষেত্রেও কিন্তু মস্তিষ্কে আঘাত জনিত সমস্যা হতে পারে।
যাঁরা নিয়মিত ভাবে অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ খান, তাঁদের রক্ত পাতলা হয়। সেই সঙ্গে তাঁদের মধ্যে মস্তিষ্কে আঘাতের সম্ভাবনাও কিন্তু বেড়ে যায়। এমনকী এঁদের যদি কোথাও কেটে যায় তাহলে কিন্তু রক্তপাত বন্ধ হতে বেশ খানিকটা সময় লেগে যায়।
বয়স্ক ব্যক্তি, যাঁরা ডিমনেশিয়া এবং অন্যান্য স্মৃতি সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের ক্ষেত্রেও কিন্তু মানসিক আঘাত গুরুতর হতে পারে। অনেক সময় আঘাত লাগলে তাঁরা নিজেরাই বুঝতে পারেন না। ফলে চিকিৎসায় দেরি হয়ে যায়। আর সেখান থেকে আরও জটিল হয় শরীরের নানা সমস্যা।
যদি কোনও কারণে মাথায় আঘাত লাগে তাহলে প্রথমেই যা করবেন-
স্থির হয়ে বসুন। আঘাত নিয়ে অতিরিক্ত দৌরাত্ম্য ভাল নয়। স্থির হয়ে বসুন
পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করুন। ক্ষতস্থানে হালকা চাপ দিন। তবে শক্ত বা জোরে চাপ দেবেন না। এতে খুলিতে চাপ পড়তে পারে।
এরপর দেখতে হবে রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক আছে কিনা। নইলে ততক্ষনাৎ CPR দিতে হবে।
মাথায় আঘাত লাগতে পারে এমন সম্ভাব্য সব কারণ থেকে দূরে থাকুন। সতর্ক থাকুন। পড়ে গিয়ে আঘাত লাগতে পারে এমন জিনিস বাড়ি থেকে আগেই বাইরে বের করে দিন। মেঝেতে জল পড়লে তা শুকনো করে মুছে নিন। ঘরের পাপোশ যাতে অতিরিক্ত স্লিপারি না হয়ে যায় সে দিকেও কিন্তু নজর রাখবেন। রাস্তাঘাটে আরও সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতে হবে। গাড়ি চালানোর সময় এবং গাড়িতে সহযাত্রী হিসেবে থাকলে অবশ্যি কিন্তু সিটবেল্ট পরতে হবে। এমনকী সাইকেল বা বাইক চালালে কিংবা স্কেটিং করার সময় মাথায় হেলমেট রাখুন।
মাথায় আঘাত লাগলে বা মাথা ফেটে গেলে সেই ব্যক্তি যদি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তাহলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। এছাড়াও মাথায় আঘাত লাগার পর মাথা ব্যথা, আলোর দিকে তাকাতে না পারা, বমি, মাথা ঘোরা, স্মৃতিভ্রম, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া, কান বা নাক থেকে রক্তপাত, প্রচুর পরিমাণে ঘাম, খিঁচুনি এসবই কিন্তু গুরুতর সমস্যার লক্ষণ।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Hot Flashes: মেনোপজ পরবর্তী সময়ে হট ফ্লাশের শিকার? সমাধান দিলেন সেলেব্রিটি পুষ্টিবিদ