মাইগ্রেনের ব্যথা একমাত্র যার হয় সেই বোঝে যে এর কষ্ট কতখানি। মাইগ্রেনের সমস্যা হলেই মাথার একপাশে প্রচন্ড ব্যথা হয়। সঙ্গে ভোঁ ভোঁ আওয়াজ অনুভূত হয় কানে। সেই সঙ্গে গা গোলানো, বমি ভাব, কিছু ক্ষেত্রে বমি, আলো এবং শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা এসবই মূলত দেখা যায়। মাইগ্রেন একবার শুরু হলে একটানা কয়েক ঘন্টা চলতেই থাকে। এমনকী তিনদিন পর্যন্ত তা স্থায়ী হতে পারে। এই ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে রোজকার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও ব্যাহত হয়। মাইগ্রেনের কারণ অনেক সময় জেনেটিক হয়। এছাড়াও লাইফস্টাইলের পরিবর্তনের কারণেও কিন্তু হতে পারে এই মাইগ্রেনের সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রকট হল মাইগ্রেনের সমস্যা। বিশ্বব্যাপী ৭ জনের মধ্যে অন্তত ১ জনের মধ্যে রয়েছে এই মাইগ্রেনের সমস্যা। পুরুষদের তুলনায় এই সমস্যা মহিলাদের মধ্যে প্রায় ৩ গুণ বেশি।
দীর্ঘদিন ধর মাইগ্রেনের সমস্যা হলে সেখান থেকে হৃদরোগ আর উচ্চরক্তচাপের মত সমস্যা আসে। এছাড়াও ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি, অনিদ্রা, মানসিক চাপের মত সমস্যাও জাঁকিয়ে বসে। তাই মাইগ্রেনের সমস্যায় কফি, অ্যালকোহল একেবারেই এড়িয়ে চলতে বলা হয়। কফির মধ্যে যে ক্যাফেন থাকে তা মাইগ্রেনের ব্যথা আরও বেশি বাড়িয়ে দেয়। তাই আগে কফি খাওয়া বন্ধ করুন। শুধু কফি নয়, যে কোনও চকোলেট জাতীয় খাবারই বাদ রাখুন রোজকারের তালিকা থেকে। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে কফিতে আসক্ত তাঁরা যদি প্রথমেই কফি বন্ধ করে দেন তাহলে সমস্যায় পড়তে পারেন। কাজেই আগে কফি খাওয়ার অভ্যাস বন্ধ করুন। এছাড়াও রোজকার কিছু অভ্যাসে কিছু বদলও অভস্যই আনতে হবে।
অতিরিক্ত চাপ নেওয়া বন্ধ করতে হবে- মাইগ্রেনের সমস্যায় অতিরিক্ত পরিশ্রম চলবে না। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিশ্রম হলেই সেখান থেকে আসে শারীরিক সমস্যা। একই সঙ্গে যাঁরা অত্যধিক যৌনতায় আসক্ত তাঁদের ক্ষেত্রেও হতে পারে মাইগ্রেন।
অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকা- মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে সময়ে ঘুমনোর চেষ্টা করুন। বেশি রাত পর্যন্ত জেগে থাকলে মাইগ্রেনের সমস্যা বেশি হয়। একটা সময় পর ঘরের আলো বন্ধ করে দিন। কারণ দিনের পরদিন যদি ঘুম ঠিক করে না হয় তাহলে মাইগ্রেনের সমস্যা আসতে বাধ্য। আর তাই ঘুম যাতে ভালভাবে হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
কর্মক্ষেত্রে চাপ কমান- কর্মক্ষেত্রে যদি মাত্রাতিরিক্ত চাপ থাকে, টেনশন থাকে সেখান থেকেও ঘুম কম হয়। মানসিক চাপ বাড়ে। তাই রোজ নিয়ম করে প্রাণায়ম করুন। লম্বা শ্বাস নিন। এতেই মানসিক সমস্যা থাকে নিয়ন্ত্রণে।
খাওয়ার ব্যাপারে যত্ন নিন- প্রক্রিয়াজাত খাবার, অত্যধিক নুন দেওয়া খাবার, পনির এসব খাবার এড়িয়ে চলতে পারলেই ভাল। সবুজ শাকসবজি, বাদাম, মাছ, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল কমিয়ে দেয় মাইগ্রেনের ঝুঁকি।