পাস্তা (Pasta) ভালো লাগে? ভালো লাগে পিজ্জাও (Pizza)? মনে হয় সকাল, দুপুর আর রাত শুধু পিজ্জা আর পাস্তা খেয়েই কাটিয়ে দেওয়া যায়? তাতে অবশ্য মুশকিল একটাই। শুধু পিজ্জা আর পাস্তা খেলে যে শরীরে কোনও পুষ্টিই ঢুকবে না! শরীর দিনকে দিন দুর্বল হতে থাকবে। অথচ দেহ হবে স্থূল! তাহলে উপায়? উপায় একটাই— পিজ্জা, পাস্তা আর নুডলসে মেশান অরিগ্যানো (Oreganos)। এমনিতেই খাবারগুলির সঙ্গে অরগ্যানো মেশালে স্বাদ আরও বেড়ে যায়। তবে জানলে অবাক হবেন, কেবলমাত্র স্বাদবর্ধক হিসেবেই নয়, অরিগ্যানোর রয়েছে প্রচুর স্বাস্থ্যগুণও। এই বিশেষ ভেষজটির ব্যাপারে রন্ধনশিল্পীদের সম্যক জ্ঞান রয়েছে। ফলে তাঁরা বেশিরভাগ রান্নাতেই ভেষজটি ব্যবহার করেন। তার ফলে তাঁদের তৈরি পদগুলি যেমন উপাদেয় হয়, তেমনই হয়ে ওঠে স্বাস্থ্যকর।
ভারতে বাজারে তাজা অরিগ্যানোর পাতা নাও মিলতে পারে। তবে কিছু নার্সারিতে অরিগ্যানোর খোঁজ করতে পারেন। ভাগ্য সঙ্গ দিলে মিলেও যেতে পারে অরিগ্যানো গাছ। সেক্ষেত্রে বাড়িতেই লাগাতে পারেন গাছটি। প্রতিদিন উপকারী উপাদানে ঠাসা অরিগ্যানো পাতা ব্যবহার করতে পারবেন রান্নায়।
অবশ্য, না পেলে দুঃখ করার দরকার নেই। সুপারমার্কেটে শুকনো অরিগ্যানো পাতা বিক্রি হয়। শুকনো পাতাতেও থাকে প্রচুর স্বাস্থ্যগুণ। এমনকী অরিগ্যানো তেলও পাওয়া যায়। সেই তেলেরও রয়েছে একাধিক ভেষজগুণ।
দেখা যাক কোন কোন গুণের কথা বলা হচ্ছে…
• অরিগ্যানোয় রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর আমরা এখন সবাই জানি, শরীরে তৈরি হওয়া ফ্রি র্যাডিকেলস-এর সঙ্গে লড়তে পারে একমাত্র অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আমাদের মনে রাখতে হবে, এই ফ্রি র্যাতডিকেলসই হার্ট অ্যাটাকে ইন্ধন জোগায়। অতএব অরিগ্যানো খেলে তার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি র্যা্ডিকেলসকে ধ্বংস করে।
• অরিগ্যানোয় অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদানও রয়েছে। এই ভেষজটিতে রয়েছে কার্ভক্রল। উপাদানটির অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি গুণ আছে যা শরীরে যে কোনও ধরনের প্রদাহ বা ইনফ্ল্যামেশন রোধ করতে পারে।
• অরিগ্যানোয় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফ্যাঙ্গাল উপাদানও আছে। ফলে যে কোনও ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সংক্রমণের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তোলে ভেষজটি।
• শরীরে ফ্রি র্যাডিকেলস-এর মাত্রা বেড়ে গেলে দেখা দিতে পারে ক্যান্সার অসুখটি। আগেই বলা হয়েছে অরিগ্যানোয় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেলসকে ধ্বংস করে। ফলে ক্যান্সারও প্রতিরোধ করে। এমনকী অরিগ্যানোয় এমন কিছু উপকারী যৌগ থাকে যা ক্যান্সারযুক্ত কোষের বৃদ্ধিতেও বাধা তৈরি করে।
• অরিগ্যানো নিজেই একটি অ্যান্টিইউরোলোথিক। ফলে কিডনিতে পাথর তৈরি হওয়া প্রতিরোধ করতে পারে অরিগ্যানো। অরিগ্যানোয় রয়েছে স্যাপোনিন, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং অ্যালকালয়েড যা পাথর তৈরি হওয়া প্রতিরোধ করে।
মনে রাখবেন
খাবারে যে কোনও ধরনের ভেষজ ব্যবহার সবসময় স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। তবে হ্যাঁ বাড়াবাড়ি কোনও কিছুতেই ভালো নয়। অধিক মাত্রায় অরিগ্যানো ব্যবহার শুরু করলে তা শরীরের পক্ষে নেতিবাচক হতে পারে। কারণ মাত্রাতিরিক্ত অরিগ্যানো রক্তে সুগারের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে যা থেকে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হওয়ার ভয় থাকে।