গর্ভাবস্থায় ধূমপান এবং মদ্যপান হবু মা এবং গর্ভস্থ সন্তানের শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক, এবিষয়ে সব সময় সতর্ক করেন চিকিৎসকেরা। শুধু হবু মায়েরাই নন, যে কোনও সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে একরকম বিষ হল তামাক। প্রতি বছর এই তামাকে আসক্তি থেকেই প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়। তামাক ক্যানসারের অন্যতম কারণ, বিজ্ঞাপনী প্রচারের পরও সেই অর্থে কমেনি ধূমপায়ীর সংখ্যা। যে কারণে বিশ্বব্যাপী এই ৩১ মে দিনটি পালন করা হয় বিশ্ব তামাক বিরোধী দিবস হিসেবে (World No-Tobacco Day)। সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতেই তামাক বর্জন করতে হবে। সপ্তাহে একদিন শখের হুক্কা হোক কিংবা ধোঁওয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য, সিগার, সিগারিলো, তামাক-রোল, পাইপ তামাক, বিড়ি, সিগারেট- সবকিছুই কিন্তু শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। একদিন থেকেই তা অভ্যাসে পরিণত হয়। এই একদিনে যে পরিমাণ তামাক শরীরে যায় সেখান থেকেই আসতে পারে শারীরিক জটিলতা। তাই যখন পরিবার পরিকল্পনা ( Family Planning) করছেন তখন থেকেই এই সব অভ্যাস ছাড়ার চেষ্টা করুন।
কেন ধূমপান গর্ভাবস্থায় জটিলতা বাড়ায়?
বিশেষজ্ঞরা সব সময়ই গর্ভবতীদের ধূমপান না করার কথা বলেন। এমনকী প্যাসিভ স্মোকিংও তাঁদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। সিগারেটের মধ্যে যে তামাক থাকে তা, হবু মায়েদের জন্য একরকম বিষ। হতে পারে মৃত্যুর কারণও। চরম ক্ষতি হতে পারে গর্ভস্থ সন্তানের। সিগারেটের মধ্যে থাকে নিকোটিন, কার্বন মনোক্সাইড এবং টার-সহ একাধিক ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ। যে কারণে যাঁরা অতিরিক্ত ধূমপান করেন তাঁদের ক্ষেত্রে সন্তানধারণ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এমনকী হতে পারে বন্ধ্যাতের কারণও।
গর্ভাবস্থায় ধূমপান গর্ভস্থ শিশুর কোষের উপর প্রভাব ফলে। প্রধানত ফুসফুস আর মস্তিষ্কের গঠন ব্যাহত হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে ধূমপান কিন্তু ঠোঁট ফাটারও অন্যতম কারণ।
এছাড়াও ধূমপানের সঙ্গে যোগ রয়েছে গর্ভপাতের (Miscarriage)। তামাকের মধ্যে থাকা কার্বন মনোক্সাইড শিশুর বিকাশে প্রভাব ফেলে। শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন পায় না। সেখান থেকে মিসক্যারেজের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এছাড়াও শিশুর বেড়ে ওঠায় জটিলতা তৈরি করে। ফলে শিশুর বিভিন্ন আচরণ গত সমস্যা, দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি হ্রাস পাওয়া, সেই সঙ্গে একাধিক প্রতিবন্ধকতাও আসতে পারে।
গর্ভস্থ শিশুর উপর যে সমস্ত প্রভাব পড়ে-
হবু মা যদি গর্ভাবস্থাতেও ধূমপানের নেশা ছাড়তে না পারেন তাহলে সন্তানের ফুসফুস দুর্বল হয়ে পড়ে। ফুসফুসের গঠনও ঠিক ভাবে হয় না।
ধূমপানের ফলে মৃতপ্রসব, জন্মগত ত্রুটি, শিশুর হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া একাধিক সমস্যা হতে পারে।
ধূমপানের কারণে প্ল্যাসেন্টাল অ্যাব্রাপেশন হতে পারে। কিংবা হতে পারে অ্যাক্টোপিক প্রেগন্যান্সি। যে খান থেকে মা ও গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
কী ভাবে ছাড়বেন ধূমপানের নেশা?
জের করে এই নেশা ছাড়া যায় না, আগে থেকে মনকে প্রস্তুত করুন। নিজের মতো বিশেষ একটি দিনক্ষণ ঠিক করে ধূমপান ছেড়ে দিন।
পরিচিতদেরও উৎসাহিত করুন এ ব্যাপারেছ। ব াড়ির মধ্যে কাউকে ধূমপান করতে দেবেন না। যিনি ধূমপান করেন তাঁর থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।
কফি, অ্যালকোহলও এড়িয়ে চলুন। কারণ ক্যাফেইন বাড়িয়ে দেয় ধূমপানের নেশা।
মুখে সুগার ফ্রি চুইংগাম রাখুন। এতেও উপকার পাবেন।
বার-ক্লাব এড়িয়ে চলুন।
নিজের মত করে ব্যায়াম করুন, বই পড়ুন, নিজের ইচ্ছেমত সময় কাচান। কোনও শখ থাকলে আবার নতুন করে তা শুরু করতে পারেন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।