Singer KK Death: কেকে-র মৃত্যু ফের তুলল প্রশ্ন, হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ উপেক্ষা করি না তো আমরা?

TV9 Bangla Digital | Edited By: megha

Jun 03, 2022 | 2:24 PM

Heart Attack: কেকে-র অসুস্থ হয়ে পড়া এবং কালক্রমে মৃত্যু- এই বিষয়টিকে কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, গাইতে গাইতে দরদর করে ঘামতেও দেখা গিয়েছিল গায়ককে।

Singer KK Death: কেকে-র মৃত্যু ফের তুলল প্রশ্ন, হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ উপেক্ষা করি না তো আমরা?

Follow Us

জীবনের শেষ গানটা গাইলেন কলকাতার নজরুল মঞ্চে। ‘হম, রহে ইয়া না রহে কল….’ তারপরের ছবিটা এখনও মেনে নিতে পারছেন না কেউই। বলিউডের তারকা-গায়ক কেকে আর নেই। নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান শেষ করেই চলে যান চৌরঙ্গীর বিলাসবহুল হোটেলে। সেখানে পৌঁছে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় গায়ককে। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। মঙ্গলবার তখন ঘড়িতে বাজে রাত সাড়ে ন’টা। চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে কেকে-র। তবে ময়নাতদন্তে রিপোর্ট এখনও এসে পৌঁছায়নি।

গান গাইতে গাইতেই চলে গেলেন কৃষ্ণকুমার কুনাথ ওরফে কেকে। বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। সম্পূর্ণভাবে সুস্থ থাকার সত্ত্বেও এত কম বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না কেউই। এই আকস্মিকতাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠছে। অভিযোগ অনুষ্ঠান চলাকালীন বাতানুকুল যন্ত্র ঠিক করে কাজ করছিল না বলে অভিযোগ। অনুষ্ঠানের সময় স্পট লাইট নিভিয়ে দেওয়ারও অনুরোধ করেন শিল্পী। তার ওপর বেসামাল ভিড়। গান গাইতে-গাইতে ঘামতেও দেখা গিয়েছে গায়ককে। তবু কেউই আন্দাজটুকুও করতে পারেননি এর পরমুহূর্তে কী ঘটতে চলেছে। ইতিমধ্যেই নজরুল মঞ্চে কেকে-র শোয়ের বেশ কিছু ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, শো শেষ করে শিল্পী মঞ্চ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে দৃশ্যত বিধ্বস্ত লাগছিল। আয়োজকরা তাঁকে ঘিরে ঘরে মঞ্চ থেকে বার করে নিয়ে যান। পিছনে ছিলেন অনুরাগীরা।

কিন্তু যে বিষয়টা একেবারেই উপেক্ষা করা যায় না তা হল মধ্য-পঞ্চাশের এক আপাত ‘ফিট’ মানুষের হার্ট অ্যাটাক। আগে মানুষের মধ্যে একটা ধারণা ছিল যে, বার্ধক্যের সঙ্গে দেখা দেয় হৃদরোগ। কিন্তু এখন দুর্ভাগ্যবশত বদলে গিয়েছে চিত্রটা। কম বয়সেও মানুষ শিকার হচ্ছে হার্ট অ্যাটাকের। আর পরিণাম হচ্ছে মৃত্যু। যদিও কম বয়সে হার্ট অ্যাটাকের পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ দায়ী। ইয়ং জেনারেশনের খাদ্যাভাস, ধূমপান, মানসিক চাপ এবং নিয়মিত শরীরচর্চা না-করা হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতাকে বাড়িয়ে তুলছে। কম বয়সিদের মধ্যে ফাস্ট ফুড খাওয়ার চল বেশি, আর এই ফাস্ট ফুডে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট রয়েছে যা হার্টের ক্ষতি করে। যাঁরা নিয়মিত জিম করেন এবং তার সঙ্গে খাদ্যাভাস বজায় রাখেন তাঁদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক কম। কিন্তু যাঁরা দ্রুত ফল পাওয়ার জন্য অত্যধিক জিম করেন এবং যাঁরা ব্যায়ামের সঙ্গে খাদ্যাভাস বজায় রাখেন না, তাঁদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বেশি। এছাড়াও জেনেটিক এই রোগের অন্যতম একটি কারণ। তবে এমন নয় যে, ফ্যামিলি হিস্ট্রি না-থাকলে হার্ট অ্যাটাক হবে না।

কিন্তু কেকে-র অসুস্থ হয়ে পড়া এবং কালক্রমে মৃত্যু—এই বিষয়টিকে কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, গাইতে-গাইতে দরদর করে ঘামতেও দেখা গিয়েছিল গায়ককে। এটা কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের একটি অন্যতম লক্ষণ। প্রাথমিক ভাবে আমাদের জানা দরকার হার্ট অ্যাটাক কী? হার্ট অ্যাটাক হল একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি যেখানে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচল হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। ডাক্তারি ভাষায় একে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বলে।

শারীরিক অস্বস্তি হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম সাধারণ লক্ষণ, যা উপেক্ষা করা উচিত নয়। অনেকেই এই বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং এখানেই বিপত্তি ঘটে। হার্ট অ্যাটাক হলে বুকে ব্যথা (যন্ত্রণা), বুকে চাপ লাগা (অস্বস্তি), বুকের ডান বা বাঁ দিক অথবা উভয় দিকেই ব্যথা, বুকে ব্যথা শুরু হয়ে তা বাঁ হাত দিয়ে নেমে যেতে পারে অথবা চোয়াল দিয়ে ওপরে উঠে যেতে পারে। আরেকটি উপসর্গ হল অত্যধিক পরিমাণে ঘাম হওয়া।

এর পাশাপাশি আরেকটি বিষয়কে কোনও উপেক্ষা করা যায় না। তা হল অত্যধিক গরম পরিবেশ। মঙ্গলবারের সন্ধ্যায় কলকাতা এক পশলা বৃষ্টিতে ভিজলেও তাপমাত্রা কমেনি। তার ওপর অভিযোগ, নজরুল মঞ্চে এসি সঠিকভাবে কাজ করছিল না। সব মিলিয়ে দমবন্ধ করা পরিবেশ তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, গরমের প্রখর তাপও হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। অত্যধিক তাপমাত্রা রক্তচাপ কমাতে পারে, যার ফলে হৃৎপিণ্ড দ্রুত স্পন্দিত হয়। প্রচণ্ড গরমের সময়, শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক করার জন্য আরও রক্ত পাম্প করার জন্য হার্টের উপর অতিরিক্ত বোঝা পড়ে। এতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই ভাবে বেড়ে যায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

Next Article