চুল নিয়ে চুলোচুলি এখন সকলকেই করতে হয়। মুঠো মুঠো চুল ঝরে যাওয়া, চুল উঠে যাওয়া, রুক্ষ্ম হয়ে যাওয়া এই সব অভিযোগ সকলেই করেন। বাড়ি থেকে বেরনোর আগে এই চুল নিয়েই পড়তে হয় সবচেয়ে বেশি সমস্যায়। দূষণ, আবহাওয়া এই সব মিলিয়ে অধিকাংশেরই চুল প্রচণ্ড রুক্ষ্ম। সব সমস্যার সমাধান হিসেবে এখন তাই সকলেই ছোটেন চুল স্ট্রেট করতে। রূপকথার গল্পের মত কেশবতী রাজকন্যার দেখা পাওয়া ভার। চুল উঠে যাওয়ার ভয়ে অধিকাংশই চুল ছোট করে কেটে রাখেন। যে টুকু চুল থাকে সেই চুলই সকলে যত্ন করে রাখতে চান। তাই স্মুথনিং, কেরাটিন ট্রিটমেন্ট আর স্ট্রেটনিং-এর এত রমরমা। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের ইউটেরিন ক্যানসারের এক সমীক্ষায় সম্প্রতি উঠে এসেছে অন্য এক তথ্য। সেই সমীক্ষা অনুসারে যে সব মহিলারা রাসায়নিক পণ্য ব্যবহার করে হেয়ার স্ট্রেট করেন তাদের মধ্যে জরায়ুর ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। অন্যদিকে যাঁরা চুলে কোনও রকম রায়ায়নিক ব্যবহার করেন না তাদের মধ্যে এই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম।
আজকাল মহিলাদের মধ্যে জরায়ু ক্যানসারের প্রবণতা বেড়েছে। আর তাই এই ক্যানসারকে সাধারণ ক্যানসার হিসেবেই দেখেন বিশেষজ্ঞরা। জরায়ু ক্যানসার মূলত ২ রকমের হয়। এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার যা মূলত এন্ডোমেট্রিয়ামে ঘটে থাকে। এছাড়াএ জরায়ুর ভিতরের আস্তরণে এবং সারকোমায় জরায়ুর পেশীর মধ্যে মায়োমেট্রিয়ামে বাড়তে থাকে এক ধরণের ক্যানসার। যা চিকিৎসা পরিভাষায় এন্ডোমেট্রিওসিস নামেই পরিচিত। তবে এই এন্ডোমেট্রিওসিস থেকে ক্যানসার খুবই বিরল। আর এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার হলে তা খুব দ্রুত শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আর তাই প্রাথমিক পর্যায়ে এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা জরুরি।
আমেরিকায় ১১ বছর ধরে ৩৩,৪৯৭ জন মহিলার উপর একটি গবেষণা চালানো হয়। সেই গবেষণা থেকে উঠে এসেছে৩৫-৭৪ বছর মহিলাদের মধ্যে এই জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি। গবেষকরা দেখিয়েছেন, যে সব মহিলারা প্যারাবেনস, বিসফেনল এ, ফরমালডিহাইডের মত রাসায়নিক যৌগ একটানা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করেন তাদের জরায়ু ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। স্ট্রেটনিং যদি প্রতি বছর করান তাহলে সেই সম্ভাবনাও দ্বিগুণ হয়ে যায়।
মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত জরায়ুর ক্যানসারের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। বিশেষ করে মেনোপজের পর হঠাৎ করে যদি রক্তক্ষরণ শুরু হয় তাহলে সেখান থেকেও হতে পারে এই সমস্যা। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে, ওবেসিটি, পারিবারিক ইতিহাসে ক্যানসার থাকলে, ১২ বছর বয়সের আগে পিরিয়ড শুরু হলে, কাউডেন সিনড্রোম বা লিঞ্চ সিন্ড্রোমের মতো জেনেটিক সমস্যা থাকলে, PCOS- এর সমস্যা থাকলে সেখান থেকে বাড়ে এই জরায়ুর ক্যানসারের ঝুঁকি।
যে সব লক্ষণ দেখলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করবেন
পিরিয়ডে পরিবর্তন
যোনি থেকে অস্বাভাবিক রক্তপাত
পিরিয়ডের মধ্যে কোনও গ্যাপ না থাকা
দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব
হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
প্রস্রাব করতে সমস্যা
অন্ত্রের সমস্যা
পেটে ব্যথা
এছাড়াও স্তন ক্যানসারের চিকিৎসায় যে ট্যামোক্সিফেন ব্যবহার করা হয় সেখান থেকেও হতে পারে এই সমস্যা।