সম্প্রতি ভারত -সহ ৯টি দেশের বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনায় উঠে এসেছে সাক্ষরতার হার যাদের মধ্যে কম তাদের মধ্যে মানসিক সমস্যা সবচাইতে বেশি। সাক্ষরতার অভাবের কারণেই বাড়ছে ডিপ্রেশন, উদ্বেগ, একাকিত্বের মত ঘটনা। মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড সোশ্যাল ইনক্লুশন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাটি। সেখানেই দেখা গিয়েছে সাক্ষরতা এবং মানসিক সমস্যার মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে। সেই গবেষণাতে এমন তথ্যও উঠে এসেছে যে অল্প শিক্ষা মহিলাদের জন্য খুবই ভয়ংকর। বিশ্বের নিরক্ষরদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত দুই তৃতীয়াংশই মহিলা। গত ৫০ বছরে সাক্ষরতার হার অনেকটাই বেড়েছে। তবুও বিশ্বব্যাপী এখনও প্রায় ৭৮ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ রয়েছেন যাঁরা লিখতে কিংবা পড়তে জানেন না।
সেই সঙ্গে গবেষকরা এটাও জানিয়েছেন যে যাঁরা অধিক শিক্ষিত তাঁরা নিজেদের জন্য সব সময় আরও ভাল চাকরি, বাসস্থান, ভাল বেতন এবং ভাল খাবারের খোঁজ করতে থাকেন। ফলে দুই শ্রেণির মধ্যেকার বিভাজন তখন আরও অনেক বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যিনি লিখতে পড়তে জানেন তাঁদের মধ্যে স্বাভাবিক একটা প্রবণতা থাকে কম সাক্ষরিতদের আটকে রাখা। যে কারণে এক শ্রেণি দারিদ্রের মধ্যেই আটকে থাকে তারা আর এগিয়ে আসার সুযোগ পায় না।
সাক্ষরতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে কেমন যোগসূত্র রয়েছে তার জন্য এটাই প্রথম গবেষণা। গবেষকরা মোট ১৯ টি গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন। আমেরিকা, চিন, নেপাল, থাইল্যান্ড, ইরান, ভারত, ঘানা, পাকিস্তান, ব্রাজিল- এই ৯ দেশ থেকে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ জড়িত এই গবেষণার সঙ্গে। সেখানেই তাঁরা সাক্ষরতার সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের একটি গভীর যোগসূত্র পেয়েছেন। এমনকী বিশ্লেষণ করেও দেখিয়েছেন কী ভাবে তা প্রভাব ফেলছে মানুষের মনে। এই গবেষণা দলের অর্ন্তভুক্ত ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর ক্লিনিকাল সাইকোলজির প্রশিক্ষক লুসি হুন যেমন বলেছেন, ‘নিম্ন সাক্ষরতার অর্ন্তভুক্ত মানুষের মধ্যে মানসিক সমস্যা এবং স্বাস্থ্য বেশ উদ্বেগের বিষয়’। শুধু তাই নয়, মানসিক স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হওয়ার নেপথ্যে আরও অনেক কারণ ছিল বলেই দায়ী করেছেন গবেষকরা। সাক্ষর এবং নিরক্ষরদের মধ্যে ক্রমশ বিভাজন এতটাই স্পষ্ট হচ্ছে যে তা প্রভাব ফেলছে মানসিক স্বাস্থ্যে।