শরীরের সব অঙ্গ যখন ঠিকমতো কাজ করে তখন বর্জ্য পদার্থ তৈরি হবেই। শরীরের কাজে লাগে না এমন সব পদার্থ ছাঁকনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেওয়ার কাজ করে কিডনি। আর যাবতীয় বর্জ্য বেরনোর রাস্তা হল প্রস্রাব। যে কারণে নিয়মিত ভাবে প্রস্রাব হওয়া খুবই জরুরি। তবে ভুলভাল খাওয়া দাওয়া করলে কিংবা কোনও শারীরিক অসুস্থথা থাকলে তখন শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বেরিয়ে আসতে পারে না। দিনের পর দিন তা জমতে থাকে শরীরেই। আর এর ফলেই রক্তে বাড়ে ইউরিয়ার পরিমাণ। যা শরীরের জন্য মোটেই ভাল নয়।
লিভার নাইট্রোজেন আর অ্যামোনিয়া ভেঙে অনেক রকম রাসায়নিক যৌগ তৈরি করে। যা ইউরিয়াতে রূপান্তরিত হয়ে কিডনিতে জমতে থাকে। যা কিডনি ফেইলিওয়ের অন্যতম কারণ। কিডনিতে যত বেশি বর্জ্য পদার্থ জমতে থাকবে ততই তার ছাঁকন ক্ষমতা কমতে থাকবে। এর ফলে কিডনির উপর চাপ বাড়ে আর কিডনি দুর্বল হতে থাকে। রক্তে ইউরিয়া বেড়ে যাওয়ার এই ঘটনাকে ইউরেমিয়াও বলা হয়। যার কারণে শরীরে একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
রক্তে ইউরিয়া বাড়লে তার বিভিন্ন লক্ষণ থাকে। ওজন বাড়তে পারে বা হঠাৎ করে খুব বেশি ওজন কমে যেতে পারে। এছাড়াও বমি বমি ভাব, ত্বকের চুলকানি, অতিরিক্ত ক্লান্তি, দিনের বেলা ঘুম ঘুম ভাব, শরীরে ব্যথা, কোনও কাজে সঠিক ভাবে মনোনিবেশ না করতে পারা, ক্ষুধামন্দা, শ্বাসকষ্ট, পেশীতে ব্যথা, নিঃশ্বাসে তীব্র কটূ গন্ধ- এসবই হল এর প্রধান লক্ষণ। ইউরিয়ার পরিমাণ বাড়লে প্রস্রাবেও দুর্গন্ধ ওঠে। জল দেওয়ার পরও কোনও ভাবে তা যেতে চায় না। এই সমস্যাকে বলা হয় ইউরেমিক ফেটার, যে কারণে নিঃশ্বাসেও প্রস্রাবের মত দন্ধ থাকে।
কোন কোন খাবার খেলে রক্তে ইউরিয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়?
বিভিন্ন ধরণের বাদাম, মুসুর ডাল, পিনাট বাটার, সোয়াবিন, সামুদ্রিক মাছ, উচ্চ চর্বিযুক্ত মাংস এসব খেলে রক্তে ইউরিয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। আর তাই লিভার বা কিডনির সমস্যা থাকলে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন বা প্রোটিন রয়েছে এমন খাবার খাওয়া যাবে না। এই ভাবেই রক্তে ইউরিয়ার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। প্রয়োজনে ৬ মাস অন্তর রক্তপরীক্ষা অবশ্যই করাবেন।