বর্ষাকাল অনেকেই উপভোগ করেন। কিন্তু এই বর্ষাকাল বিভিন্ন ধরণের ভাইরাস ও ব্যাক্টিরিয়াজাত রোগেরও বাহক। আর ঠিক এই কারণেই, বর্ষাকালে আপনার বিশেষ ভাবে নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা দরকার।
ইন্ডাস হেলথ প্লাসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাঞ্চন নাইকাওয়াড়ি (Kanchan Naikawadi) বলেন, “বর্ষায় চোখ খুব বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হয়। যদিও কোভিডের কারণে যে প্যান্ডেমিক হয়েছে তার দৌলতে আমরা মুখ, নাক এবং হাতের সুরক্ষা সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন হয়েছি। কিন্তু আমরা অনেকেই আমাদের চোখের সুরক্ষার কথা বিশেষ খেয়াল রাখি না।
* হাইজিনিক থাকুন: সবসময় মুখ তোয়ালে, ন্যাপকিন, রুমাল দিয়ে পরিষ্কার রাখুন। আপনার চোখের ধারে কাছে যা কিছু পৌঁছতে পারে তা যেন পরিষ্কার থাকে। আপনার ব্যক্তিগত জিনিস যেমন তোয়ালে, চশমা, কন্টাক্ট লেন্স ইত্যাদি কারো সাথে শেয়ার করবেন না।
* ঘর থেকে বেরনোর সময় একজোড়া সানগ্লাস বা চশমা পরুন: এগুলি চোখকে যেকোনো বাইরের নোংরা এবং ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার মতো সংক্রামকের সাথে যোগাযোগ করতে বাধা দেয়।
* আপনার চোখের অনেক যত্ন সহকারে চিকিৎসা করুন: প্রতিদিন ঠান্ডা জল দিয়ে আপনার চোখ ধুয়ে নিন। ঘুম থেকে ওঠার পরে বা কন্টাক্ট লেন্স খুলে ফেলার পরে আপনার চোখ খুব জোরে ঘোষবেন না। জোরে জোরে চোখ ঘোষলে কর্নিয়ার স্থায়ীভাবে ক্ষতি হতে পারে।
* বর্ষাকালে কন্টাক্ট লেন্স না পরার চেষ্টা করুন: এগুলি চোখের মধ্যে তীব্র শুষ্কতা সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে চোখে লালচে ভাব কিংবা চোখ জ্বালা করতে পারে। আপনার চশমা পরিষ্কার এবং শুকনো রাখুন।
* জলাবদ্ধ এলাকা এড়িয়ে চলুন: এগুলিতে প্রচুর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক রয়েছে যা চোখে ঢুকে যেতে পারে এবং ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে।
* সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার খান: যেকোনো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আপনার শরীরকে সুস্থ রাখা প্রয়োজন। এতে রোগ সংক্রমণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই, চোখের কোনোরকম ক্ষতি হলে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে শরীরকে সুস্থ রাখা বিশেষ প্রয়োজন।
যে রোগগুলি প্রায়ই চোখে হয়ে থাকে সেগুলি হল:
১. কনজাংটিভাইটিস বা চোখের ফ্লু: এটি আদপে আমাদের চোখের সাদা অংশের জ্বালা বা প্রদাহ। এটি অত্যন্ত সংক্রামক এবং এমনকি সামান্যতম যোগাযোগে এলেও ছড়িয়ে পড়ে। যদিও সংক্রমণ কয়েক দিনের মধ্যে চলে যায়, তবে আপনার যদি এই সংক্রমণ হয় তবে চোখ ঢেকে রাখা প্রয়োজন।
২. স্টাই: এই সংক্রমণে চোখের পাতার প্রান্তে লাল ফোঁড়া বা ফুসকুড়ির মতো বস্তু তৈরি হয়। স্টাইস সাধারণত চোখের পাতার ভিতরের অংশে তৈরি হয়। একটি স্টাই কয়েক দিনের মধ্যে নিজেই অদৃশ্য হতে শুরু করবে। তবে, নিয়মিত উষ্ণ জলে ভেজানো পরিষ্কার কাপড় দিয়ে সেই স্থান মোছা জরুরি। ফাটানোর চেষ্টা একদমই করবেন না।
৩. কর্নিয়াল আলসার: এটি কর্নিয়াতে একটি খোলা কালশিটে তৈরি হয়। এতে পুঁজ বেরোতে থাকে, তীব্র ব্যথা হয় এবং দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়। এটি একটি মারাত্মক সংক্রমণ যা সঠিকভাবে চিকিৎসা না করলে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস হতে পারে। এমনকি স্থায়ী অন্ধত্বও হতে পারে।
আরও পড়ুন: আপনার পুষ্টিতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার কতটা জরুরি? বিস্তারিত জেনে নিন এই ভিডিয়োতে