Brain Tumor: অজানা কণ্ঠস্বর ক্রমাগত বলে চলেছিল ব্রেন টিউমার আছে তাঁর, কী হল শেষমেশ?

TV9 Bangla Digital | Edited By: megha

Sep 13, 2022 | 12:50 PM

Voices 'told woman' she had brain tumor: যেদিন তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠলেন, সেদিন ওই কণ্ঠস্বর শেষবার বলেছিল, 'আমরা আপনাকে সাহায্য করতে পেরে খুশি।'

Brain Tumor: অজানা কণ্ঠস্বর ক্রমাগত বলে চলেছিল ব্রেন টিউমার আছে তাঁর, কী হল শেষমেশ?

Follow Us

চিকিৎসা ক্ষেত্রে এমন অনেক ঘটনা ঘটতে থাকে যার সম্মুখীন হয়তো চিকিৎসকরাও প্রথমবার হন। কিন্তু সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি হল রোগের লক্ষণ যখন প্রকাশ পায় না এবং রোগ নির্ণয়ে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। আবার কেউ কেউ নিয়মিত চেক-আপের মাধ্যমে রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করে। কিন্তু চিকিৎসাজগতে আশির দশকে এমন একটি গঠনে ঘটেছিল যা আজও সমগ্র বিশ্বে বিরল। ১৯৮৪ সালে ব্রিটেনের এক মহিলার ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। কিন্তু এই ‘ধরা পড়া’ স্বাভাবিক ছিল না। ইতিহাস বলছে, ওই মহিলা প্রতিনিয়ত একটি কণ্ঠস্বর শুনতেন যেটা তাঁকে জানান দিত ব্রেন টিউমারের কথা। কিছুটা হ্যালুসিনেশন বললেও ভুল হবে না।

১৯৪০-এর দশকে ওই মহিলা ইউরোপে জন্মগ্রহণ করে। প্রায় দু’দশক পর তিনি যুক্তরাজ্যে স্থায়ী বসবাস করতে শুরু করেন। তিনি বিয়ে করেন, পরিবার শুরু করেন। ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ১৯৮৪ সালে। স্বাভাবিক জীবনযাপনের মধ্যেই তিনি বার বার কানে একটা কণ্ঠস্বর শুনতে পান। ওই কণ্ঠস্বর তাঁকে বার বার বলতে থাকে একটাই কথা: আপনার মাথায় টিউমার রয়েছে। ১৯৮৪ সালে এক শীতের রাতে যখন তিনি প্রথমবার ওই কণ্ঠস্বর শুনতে পান, নিজের কণ্ঠস্বরের চেয়ে বেশি আলাদা মনে হয়েছিল তাঁর।

এমনকী ওই কণ্ঠস্বর মহিলাকে বলেছিল, “দয়া করে ভয় পাবেন না। আমি জানি এভাবে আপনার সঙ্গে কথা বলায় আপনি চমকে উঠছেন কিন্তু এটাই সবচেয়ে সহজ উপায়। আমি এবং আমার বন্ধু গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিটে চিলড্রেন হাসপাতালে কাজ করতাম এবং আমরা আপনাকে সাহায্য করতে চাই।” শুধু তাই নয়, ব্রেন টিউমার মহিলার মাথার ঠিক কোন অংশে রয়েছে সেটাও জানিয়ে দেয় ওই কণ্ঠস্বর।

আপনার আশেপাশে কেউ নেই, কণ্ঠস্বর আপনার পরিচিতও নয়, তবু বার বার কানের মধ্যে ভেসে আসছে ওই শব্দগুলো। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই বিষয়টিকে বিভ্রান্তি ভেবে ওই মহিলা দ্বারস্থ হন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে। কিন্তু ওই মহিলার আদতে কোনও মানসিক সমস্যাই ছিল না। চিকিৎসক তাঁকে কয়েকদিনের জন্য শহরের বাইরে ছুটি কাটানোর পরামর্শ দেন। ওই মহিলা যথারীতি ছুটি কাটিয়ে আবার ব্রিটেনে ফিরে আসেন। ততদিনে তিনি ওই কণ্ঠস্বর আর শুনতে পান না। কিন্তু ব্রিটেনে ফিরে আসা মাত্রই কয়েকদিনের মধ্যে আবার তাঁর কানে বাজতে থাকে ‘আপনার ব্রেন টিউমার আছে’।

শেষ অবধি লন্ডনের একটি হাসপাতালে তাঁর ব্রেন স্ক্যান করা হয়। পরীক্ষায় ধরা পড়ে যে তাঁর টিউমার রয়েছে এবং এটি মস্তিষ্কের স্টেমে ধীরে ধীরে প্রদাহ তৈরি করছে। কিন্তু ওই মহিলার ব্রেন টিউমারের কোনও লক্ষণই প্রকাশ পায়নি। রয়্যাল ফ্রি হাসপাতালে ওই মহিলার চিকিৎসা হয় এবং তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। এরপর থেকে তিনি আর ওই কণ্ঠস্বর কোনওদিন শোনেননি। তবে যেদিন তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠলেন, সেদিন ওই কণ্ঠস্বর শেষবার বলেছিল, ‘আমরা আপনাকে সাহায্য করতে পেরে খুশি।’

এটা গল্প হলেও সত্যি। Dr. Ikechukwu Azuonye-এর লেখা ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে ওই মহিলার ঘটনা উল্লেখ রয়েছে। এই ঘটনা চিকিৎসাজগতে বিরল। ১৯৮৪ সালের পর ২০১৭ সালে সুইজারল্যান্ডে এই ধরনের আর একটি ঘটনার খোঁজ পাওয়া যায়। সেখানেও একটি মহিলা এমন একটি কণ্ঠস্বর বার বার শুনতে পান। সেই কণ্ঠস্বরও তাঁকে ব্রেন টিউমারের কথাই বলত।

কিন্তু সুইজারল্যান্ডের ওই মহিলা বয়সের বিভিন্ন ধাপে এসে বার বার ওই কণ্ঠস্বর শুনতে পেতেন। ১৩, ২১, ৩২ এবং ৪১ বছর বয়সে তিনি কণ্ঠস্বর শুনেছিলেন। এই কারণে তিনি কম বয়সে মানসিক রোগ হিসেবে চিকিৎসাও করান। কিন্তু ৪০-এর কোঠায় গিয়ে ব্রেন টিউমার পরীক্ষা করলে তা ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা জানান, এই ব্রেন টিউমার ছোট থেকেই ধীরে ধীরে বৃদ্ধি হচ্ছিল মহিলার শরীরে। এবারেও সুইজারল্যান্ডের এই মহিলার শরীরে ব্রেন টিউমারের কোনও লক্ষণ প্রকাশ পায়নি।

Next Article