পৃথিবীতে আশ্চর্য ধরনের বহু মানুষ থাকেন। বিস্ময়ের উদ্রেক করা এই ধরনের মানুষেরা বেঁচে থাকেন আপন মতাদর্শ অনুসরণ করে। ভিয়েতনামে থাকেন এমনই একজন মহিলা যিনি অদ্ভুত পদ্ধতিতে জীবন কাটান। এই ভদ্রমহিলার দাবি, তিনি গত ৪১ বছর ধরে কোনও শক্ত খাবার দাঁতে কাটেননি। বরং তিনি জলে কিছু সাধারণ দ্রব্য মিশিয়ে পান করে জীবনধারণ করছেন! তাঁর আরও দাবি, তিনি ২২ বছর বয়স থেকেই শক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এখানেই শেষ নয়। তিনি শুধু লেবুর উপর ভরসা করেই বেঁচে আছেন। অবাক করার মতো বিষয় হল, তাঁর এহেন অভ্যেস স্বাস্থ্যেও কোনও বিরূপ প্রভাব ফেলেনি! শিকাঞ্জি বা লেবু জল সাধারণত আমরা গ্রীষ্মকালে খাই ডিহাইড্রেশন ঠেকাতে ও শরীরে একটা তাজা ভাব আনতে। এছাড়া কেউ কেউ ওজন কমানোর উদ্দেশ্যে সকালে ঘুম থেকে উঠে ঈষদুষ্ণ জলে লেবুর রস মিশিয়ে পান করেন। অথচ আমাদের একবেলার ব্যবহারের সেই লেবু জলই হয়ে উঠেছে ওই মহিলার প্রাণধারণের উপায়। লেবুজলই নাকি তার শরীরের যাবতীয় পুষ্টি উপাদানের জোগান দেয়!
বিষয়টি অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। শক্ত খাদ্য ছেড়ে দেওয়ার পরেও ওই মহিলা যথেষ্ট স্বাস্থ্যবতী। ৬৩ বর্ষীয় ওই মহিলার নাম গন। ষাটোর্ধ্ব হলেও বয়সের তুলনায় বরং ওই মহিলা অনেক বেশি সুঠাম ও ফিট!. এনার্জি ও স্বতঃস্ফূর্ততার কোনও অভাব নেই। তিনি একাধিক ধরনের যোগাসন করেন। তাঁর দাবি, যোগাসনই তাঁকে বয়সের তুলনায় অনেক বেশি তরুণ করে রেখেছে!
তিনি জানিয়েছেন, সারাদিনে খাদ্য হিসেবে তিনি কয়েক গ্রাম নুন, চিনি, এবং লেবুর রস জলে মিশিয়ে খান। বিগত ৪১ বছর ধরেই তিনি একই রুটিন অনুসরণ করে চলেছেন। তিনি আগে শক্ত খাদ্য যেমন ভাত ও রুটি খেতেন। তবে ক্রমাগত পেটের গণ্ডগোলে ভুগছিলেন তিনি। চোখেও কিছু সমস্যা তৈরি হয়। রোগপরীক্ষা করে দেখা যায় তাঁর রক্ত সম্পর্কিত অসুখ রয়েছে। একাধিক রকমের ওষুধ খাওয়ার পর তিনি একসময় বিরক্ত হয়ে খাবার খাওয়া ছেড়ে দেন ও শিকাঞ্জি পান করা শুরু করেন। কয়েকদিনের মধ্যেই শরীর থেকে সবধরনের সমস্যাও দূর হয়। দৃষ্টিশক্তিরও উন্নতি হয়।
ওই মহিলা জানিয়েছেন, তিনি লেবুজল পান করা শুরু করেন এক চিকিৎসকের পরামর্শে। তবে পদ্ধতিটি সম্পূর্ণরূপে অবৈজ্ঞানিক। তাই ওই চিকিৎসকের নাম তিনি করেননি। মহিলার পরিবারের বাকি লোকেরা ভেবেছিল, তিনি হয়তো আর বাঁচবেন না। এমন জীবনশৈলী অনুসরণ করা হয়তো মহিলার পক্ষে সম্ভব হবে না। অথচ বাস্তবে দেখা যায় সম্পূর্ণ উল্টো ঘটনা। তিনি একটানা লেবুজল পান করতে থাকেন। ধীরে ধীরে তাঁর সমস্ত অসুখ সেরে যায়। বরং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে থাকেন তিনি। বর্তমানে তিনি সকল সাধারণ মানুষকে যোগা এবং লেবুজলের গুণের ব্যাপারে বলে বেড়ান।