বারবিকিউ, বনফায়ার, ঠান্ডা আবহাওয়া, মনোরম সকাল। শীতকালের মতো আরামদায়ক ঋতু আর বোধ হয় নেই। শুধু মনোরমই নয়, শীতের দিনগুলিতে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা যায়। সাধারণ ফ্লু তো রয়েছেই, শ্বাসকষ্টের মতো রোগেরও বৃদ্ধি ঘটে। ঠান্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়ায় আমাদের ত্বকও শুষ্ক হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, শুষ্ক চোখের সমস্যাও দেখা যায় এই সময়। আপেক্ষিক আর্দ্রতা হ্রাসের কারণে এই সমস্যার সম্মুখীন অনেকেই। তবে এমনটা হলে এড়িয়ে যাবেন না, বরং কীভাবে চোখের আর্দ্রতা ফেরানো যায় তার চেষ্টা করা উচিত।
চোখ হল শরীরের সবচেয়ে সংবেদনশীল একটি অংশ। তাই শীতকালে চোখের বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। প্রতিনিয়ত পরিবেশের সংস্পর্শে এসে বিষাক্ত গ্যাস, দূষণ, ধূলিকণা, শুষ্ক বাতাসের মুখোমুখি হতে হয়ে চোখকে। আর এইসবের থেকে চোখকে রক্ষা করতে চোখের মধ্যে রয়েছে তিনটি স্তর। একটি ভেতরের মিউসিন স্তর, একটি জেলের মতো পদার্থ, যা মূলত অন্য দুটি স্তরকে রক্ষা করে। তরলের মতো একটি মাঝারি জলীয় স্তর টিয়ার ফিল্মটির বেশিরভাগ অংশ গঠন করে থাকে। একটি বাইরের সবচেয়ে তৈলাক্ত স্তর, যা অন্য দুটি স্তরকে আবরণ করে থাকে। গাড়ির উইন্ডশিল্ড ওয়াইপারের মতো আচরণ করে এইস্তরগুলি। যে কোনও ধুলোবালি থেকে চোখকে সুরক্ষিত রাখতে ও পরিস্কার করতে এই ত্রিস্তরীয় অংশটি সতেজ থাকে। চোখকে পরিস্কার করতে ও আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। বর্তমানে শিশু ও বয়স্ক, উভয়েই অত্যাধিক গ্যাজেট ব্যবহারের সঙ্গে চোখের মধ্যে ইতোমধ্যেই চাপ তৈরি করেছে। পাশাপাশি শীতকালে শুষ্ক বায়ু চোখের স্বাস্থ্যকে আরও গুরুতর করে তুলছে।
চোখকে ভাল রাখতে হলে চোখের পাতাগুলিকে নন-টিয়ার শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার করে নিন। তাতে জমে থাকে ধুলো ধুয়ে যাবে অনায়াসে। এছাড়া সংক্রমণের আশঙ্কাও থাকে না। যাঁরা চোখের মেকআপ ব্যবহার করেন, তাঁদের জন্য এই পদ্ধতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চোখের মেকআপের সলময় রাসায়নিক পণ্য ব্যবহার না করাই ভাল।
– যদি আপনি কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন তাহলে মনে রাখা উচিত দিনে ৬-৭ ঘণ্টার বেশি লেন্স পরবেন না। ভাল করে হাত পরিস্কার করার পর ও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী লুব্রিকেন্ট ড্রপ ব্যবহার করুন।
– শীতকালে গরম কম্প্রেস ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। চোখের জন্য এই পদ্ধতি বেশ আরামদায়কও টিয়ার ফিল্মের তৈলাক্ত স্তরের জন্য অপরিহার্য।
– চোখ ও স্বাস্থ্যের জন্য ঘরের মধ্যে এয়ার হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। শীতকালে ঘরের ভিত আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। শুষ্ক ত্বক প্রতিরোধ করতে ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্যও উপকার হবে।
– ঘরের বাইরে গেলে চোখে যেন সরাসরি ঠান্ডা না লাগে। যদি স্কুটার বা দুচাকার গাড়িতে ভ্রমণ করেন, তাহলে চশমা ব্যবহার করা অবাশ্যক।
অত্যাধিক গ্যাজেট ব্যবহার করাটা সীমার মধ্যে আনার চেষ্টা করে। অন্তত – ঘন ঘন বিরতি দিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। শুধু চোখের জন্যই নয়., ঘার ও পিঠের জন্যও ভাল।
– ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলার ব্যাপারে সচেতন হোন। কারণ যখন আমরা কাজে মনোনিবেশ করি, তখন সাধারণত স্ক্রীন টাইমে ব্লিঙ্ক রেট কমে যাওয়ার প্রবণতা থাকে।
– ধূমপান শুষ্ক চোখের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। দীর্ঘস্থায়ী ধূমপায়ীদের শুষ্ক চোখের প্রবণতা বেশি থাকে।
– চোখের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং ঘুম নিশ্চিত করুন। শোবার সময় আপনার ফোন ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন, একটি ভাল নিরবচ্ছিন্ন ঘুম আপনার চোখের পাশাপাশি মন এবং শরীরের জন্য সর্বোত্তম!