এখন পাঁচ জনের মধ্যে তিন জন ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগছেন। তবুও ইউরিক অ্যাসিড নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা নেই। গাঁটের ব্যথায় প্রায় এক সপ্তাহ কষ্ট পাওয়ার পর দ্বারস্থ হন ডাক্তারের কাছে। রক্ত পরীক্ষা করলে জানা যায় শরীরে বেড়ে গিয়েছে ইউরিক অ্যাসিড। বাড়ি ফিরেই মুসুর ডাল, টমেটোর দানা খাওয়া বন্ধ করে দিলেন। কিন্তু উইকএন্ডে বন্ধুদের সঙ্গে চুমুক দিচ্ছেন ঠান্ডা বিয়ারের বোতলে। তাহলে কি কোনওভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা?
ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে ডায়েটের উপর নজর দিতে হয়। দানা জাতীয় খাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে বলেন পুষ্টিবিদেরা। কিন্তু এত খাওয়া-দাওয়া মেনেও আপনি যদি অ্যালকোহল পান করেন তাহলে কোনও কাজের কাজই হবে না। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বিয়ার এবং মদ উভয়ই রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে।
অ্যালকোহল বাড়িয়ে দেয় ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা। আপনি এখন জোর গলায় বলতেই পারেন যে বিয়ারে অ্যালকোহলের পরিমাণ ন্যূনতম থাকে। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন অন্য কথা। বিয়ারের মধ্যে কম পরিমাণে হলেও অ্যালকোহল রয়েছে। আর এই সামান্য পরিমাণ অ্যালকোহলও শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।
অ্যালকোহলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পিউরিন পাওয়া যায়। শরীর এই পিউরিন ভেঙে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করে। শরীরে পিউরিন ভেঙে তৈরি হয় ইউরিক অ্যাসিড। ইউরিক অ্যসিড রক্তে দ্রবীভূত হয়ে প্রস্রাবের সঙ্গে কিডনি দিয়ে যায়। কিন্তু অনেক সময় তা বেরোতে না পেরে রক্তেই জমা হতে শুরু করে। অন্যদিকে, অত্যধিক পরিমাণে অ্যালকোহল সেবন করলে পিউরিনের মাত্রাও বেড়ে যায়। সব মিলিয়ে বেড়ে যায় শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা।
রক্তে ইউরিক অ্যাসিড একবার বাড়তে শুরু করলেই শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। তখন গাঁটে ব্যথা শুরু হয়ে যায়। তবে এই লক্ষণটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শুধু পায়েতেই দেখা দেয়। পাশাপাশি ইউরিক অ্যাসিড মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে কিডনিতে পাথর হওয়ার সমস্যাও দেখা দেয়।
আপনার যদি ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকে, তাহলে এড়িয়ে চলুন বিয়ার ও অন্যান্য অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়। এর পাশাপাশি ডায়েটের দিকেও নজর দিন। ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ অত্যধিক বেড়ে গেলে পালং শাক, পুঁই শাক, মুসুর ডাল, বিউলি ডাল, মাটন, সামুদ্রিক মাছ এড়িয়ে চলুন। তবে প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে মাছ, চিকেন বা ডিম খেতেই পারেন। পাশাপাশি টমেটো, ঢেঁড়শ রান্না করে খেলে কোনও ক্ষতি নেই।