এখন প্রতিটা বাড়িতে একজন করে হলেও বাতের সমস্যা, কোলেস্টেরল, হাই ব্লাড প্রেশার, সুগারের রোগী আপনি পেয়ে যাবেন। একটু খেয়াল করে দেখুন, আপনার বাড়ির একজন সদস্য হলেও গাঁটের ব্যথায় (Gout Health) কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু এর পিছনে কোন কারণ দায়ী সেটা কি জানেন? বেশির ভাগ মানুষের মধ্যে এখন এই জয়েন্টে ব্যথা (Joint Pain), পেশিতে ব্যথার সমস্যা বেড়ে গিয়েছে। মূলত এর পিছনে দায়ী অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা। ডাক্তার দেখাতে গেলে, তিনিও সবশেষে একটাই কথা বলেন যে, এক্সারসাইজ (Exercise) না করার অভাবেই মূলত এই সব সমস্যা দেখা দেয়। পাশাপাশি রয়েছে ভিটামিনের অভাব। কিন্তু প্রথমেই গাঁটের ব্যথার সমস্যা দেখা দিলে সেটা বাতের সমস্যা নাকি ইউরিক অ্যাসিড (Uric Acid) বৃদ্ধির লক্ষণ, সেটা বুঝবেন কীভাবে?
দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজ করা, শরীরচর্চা না করা, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া- এই সব কিছুই কোথাও গিয়ে প্রভাব ফেলে আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্যের উপর। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে যখন গাঁটে ব্যথা শুরু হয়, তখন প্রথমেই অনেকে ভেবে নেন এটা ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ। ৬০-এর উপর বয়স হলে তবু অনেকে ভাবেন আর্থ্রাইটিসের সমস্যা হতে পারে। কিন্তু ৪০-৫০ কোটায় কেউ মানতে নারাজ যে গাঁটের ব্যথার কারণ ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু আসল সত্যিটা কী?
গাঁটে ব্যথা মানেই যে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি, তা কিন্তু নয়। এর পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ দায়ী হতে পারে। যার মধ্যে একটি হল অস্টিও আর্থ্রাইটিস। আর্থ্রাইটিসেরই একটি অংশ হল অস্টিও আর্থ্রাইটিস। এখন বেশিরভাগ মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। অস্টিও আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হলে হাঁটু ও কোমরে মূলত ব্যথা হয়। এই রোগের পিছনে ওবেসিটি মূল দায়ী। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ক্ষয় দেখা দেয়, সেখান বাড়ে এই রোগের ঝুঁকি। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।
গাঁটের ব্যথার পিছনে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসও অন্যতম কারণ। যদিও এটা একটি অটোইমিউন রোগ। এই ক্ষেত্রে হাতের আঙুলে মূলত ব্যথা হয়। আর এই যন্ত্রণা এমন পর্যায়ে চলে যায় যে আঙুল বেঁকে যায়। তাই রোগ নিয়ে সচেতন থাকতে হবে।
তবে এমন নয় যে, ইউরিক অ্যাসিড থেকে গাঁটের ব্যথা হয় না। কোলেস্টেরল বাড়লে যেমন শরীরে হাজারো সমস্যা হয় ঠিক তেমনটা হয় ইউরিক অ্যাসিডের ক্ষেত্রেও। শরীরের দূষিত রেচক হল এই ইউরিক অ্যাসিড। শরীরে পিউরিন ভেঙে তৈরি হয় ইউরিক অ্যাসিড। ইউরিক অ্যসিড রক্তে দ্রবীভূত হয়ে প্রস্রাবের সঙ্গে কিডনি দিয়ে যায়। কিন্তু অনেক সময় তা বেরোতে না পেরে রক্তেই জমা হতে শুরু করে। আর রক্তে ইউরিক অ্যাসিড একবার বাড়তে শুরু করলেই শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। তখন গাঁটে ব্যথা শুরু হয়ে যায়। জায়গাটা লাল হয়ে যায়। তবে এই লক্ষণটা শুধু পায়েতেই দেখা দেয়।
রোগ চিনবেন কীভাবে?
এই ক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিড স্টেট করানো ছাড়া এবং চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। এই ক্ষেত্রে সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড টেস্ট, রিউম্যাটয়েড ফ্যাক্টর টেস্ট, এক্সরে ইত্যাদি করতে হয়। চিকিৎসার ক্ষেত্রে লক্ষণ দেখা মাত্র চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।