বিশ্ব এখন কাঁপছে ফুটবল জ্বরে। তারই মাঝে উদ্বেগ তৈরি করল ‘ক্যামেল ফ্লু’। ফুটবল বিশ্বকাপের মাঝে আবারও এক অতিমারি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। এই ‘ক্যামেল ফ্লু’-এর জেরে লন্ডভন্ড হয়ে যেতে পারে কাতারের ফুটবল বিশ্বকাপ। করোনার পর এখন নতুন আতঙ্ক এই ‘ক্যামেল ফ্লু’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাতারে আসা পর্যটকদের। ‘ক্যামেল ফ্লু’ নামের এই ভাইরাসের উৎস উট। যদিও চিকিৎসা পরিভাষায় এটি ‘মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম’ বা মার্স নামে পরিচিত। সাধারণত মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা যায়।
এই মুহূর্তে ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ কাতারে উপস্থিত। এই পরিস্থিতিতে যদি ‘ক্যামেল ফ্লু’-এর সংক্রমণ বাড়ে তাহলে এটি মহামারির আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিকভাবে রোগের কোনও উপসর্গ দেখা দেয় না। হঠাৎ করে প্রবল জ্বর, তার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট ও কাশির উপসর্গ দেখা দেয় ‘ক্যামেল ফ্লু’-তে আক্রান্ত হলে।
বিশ্বের একাধিক দেশে এখনও পর্যন্ত হাজার-হাজার মানুষ ‘ক্যামেল ফ্লু’-তে আক্রান্ত হয়েছেন। বিগত দশকে মোট ২,৬০০ জন ‘ক্যামেল ফ্লু’-তে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যু হয়েছিল ৯৩৫ জনের। সুতরাং এই ভাইরাস যে ‘প্রভাবশালী’ নয় এমনটা ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। ‘নিউ ইনফেকশনস’ জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষা থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, ‘ক্যামেল ফ্লু’ ভেস্তে দিতে পারে কাতারে বিশ্বকাপের উন্মাদনা।
শুধু ‘ক্যামেল ফ্লু’ নয়, করোনা ভাইরাস এবং মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও এক সমীক্ষা বলছে, কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে আসা পর্যটকেরা ডায়েরিয়া, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, হেপাটাইটিস এ এবং বি-এর মতো রোগেও আক্রান্ত হতে পারেন। তবে কাতার এই ‘ক্যামেল ফ্লু’ সংক্রমণ নিয়ে বেশ সচেতন। এই ধরনের পরিস্থিতি যাতে না তৈরি হয়, তার জন্য কাতারে রুটিন টিকাকরণ এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য-পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি জানানো হয়েছে যে, সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কোনও পরিস্থিতি তৈরি হলে, তা সামাল দেওয়ার জন্য সে দেশের হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রয়েছে।
কিন্তু সামগ্রিকভাবে কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে আসা পর্যটকদের সচেতন থাকার বার্তা দিয়েছে ‘হু’। যেহেতু উট থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে, তাই মরুদেশের প্রাণী থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উটকে কোনওভাবেই স্পর্শ করা চলবে না। আর যদি হঠাৎ করে প্রবল জ্বর আসে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সাহায্য নিতে বলা হচ্ছে।