কোলেস্টেরল শুধু যে বয়স বাড়লেই ধরা পড়ে—এই ধারণা মনে পুষে রাখার কোনও কারণ নেই। আজকাল ৩০-এ পা দেওয়ার আগেই তরুণ-তরুণীদের রক্তে জমাট বাঁধছে কোলেস্টেরল। নেপথ্যে যে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস দায়ী, এ কথা বলে দেওয়ার অবকাশ রাখে না। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগলে হানা দেয় হৃদরোগও। ধমনীতে এই মোম জাতীয় পদার্থ জমতে থাকলে দেহে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। আর তখনই শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাই আগে থেকে সাবধান না থাকলে কোলেস্টেরলের বাড়বাড়ন্তকে বশে রাখা খুব কঠিন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সময় থাকতে উচ্চ কোলেস্টেরল ধরা পড়ে না। সবার চেয়ে চোখের কোণে হলদেটে ভাব দেখা দেবে কিংবা ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হবে, এমনটা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই ওজন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু তার পিছনে অন্য কারণও হতে পারে। কোলেস্টেরল যে বেড়েছে তা সবচেয়ে ভাল বোঝা যায় হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করার সময়। একটু জোরে হাঁটলেই পায়ে ব্যথা হতে থাকে। এটা কোলেস্টেরল বৃদ্ধি অন্যতম লক্ষণ।
দেহের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সঞ্চালন ঘটে ধমনীর মধ্য দিয়ে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে থাকলে এটি ধমনীর ভিতর ফ্যাটের আস্তরণ তৈরি হয়। একে ‘অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস’ বলে। এর জেরে দেহে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটে। প্লাক তৈরি হয়। এই প্লাক তৈরি হলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে ঠিকমতো রক্ত চলাচল হয় না। বিশেষত, দেহের নিম্নাংশে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। এই অবস্থাকে পেরিফেরাল আর্টারি ডিজ়িজ় (পিএডি) বলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই সমস্যা পায়ে দেখা দেয়।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে পায়ে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। পায়ে রক্ত চলাচল কমে যায়। এছাড়া পায়ের পাতা অবশ হয়ে যাওয়া, পায়ের ত্বকের রং বদলে যাওয়া, নখের বৃদ্ধি কমে যাওয়া, পায়ের পাতা ও গোড়ালিতে নানা সমস্যা দেখা দেওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। সুতরাং, একটু দ্রুত জোরে হাঁটলেই পায়ে ব্যথা হতে শুরু হয়। এই ধরনের কোনও উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই কোলেস্টেরল পরীক্ষা করিয়ে নিন এবং চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।