দিন দিন বেড়ে চলেছে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আজকাল প্রায় প্রতিটা বাড়িতেই একজন করে সুগারের রোগীর দেখা মেলে। কিন্তু সমস্যা হল এই রোগ একবার শরীরে বাসা বাঁধলে তা সহজে পিছু ছাড়ে না। পাশাপাশি এটি শরীরের অন্যান্য অঙ্গের উপর প্রভাব ফেলে। চোখ থেকে শুরু করে কিডনির সব কিছু নষ্ট করে দিতে পারে সুগার। সুতরাং সাবধান না হলে, কমে আসতে পারে আপনার আয়ু। আর রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ডায়েটের উপর নজর দেন সকলেই। যদিও খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আর শরীরচর্চা ছাড়া সুগারকে বশে রাখার কোনও উপায় নেই। কিন্তু পানীয়র দিকে কতটা নজর দেন?
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে চিনি, মিষ্টি, মিষ্টি পানীয়, কার্বোহাইড্রেট, ফাস্টফুড, ভাজা খাবার, অতিরিক্ত তেল মশলা সবই ছেঁটে ফেলার কথা বলা হয়। পছন্দের অনেক খাবারের উপরই মায়া ত্যাগ দিতে হয়। সেই সঙ্গে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হয়েছেন শুনলে পড়শি থেকে আত্মীয়স্বজন সকলেই নিজের জ্ঞান ভান্ডার খুলে বসেন। সবাই তখন বিশেষজ্ঞ, নিজের মত উপদেশ দিতে একে অন্যের জুড়ি মেলা ভার। ডায়াবেটিস রোগীদের কোন খাবার খাওয়া উচিত আর কোনটা উচিত নয় তাই নিয়ে সবার মধ্যে তর্ক বিতর্ক চলতেই থাকে। কেউ বলেন করলার জুস খেতে তো কেউ আমলকীর। কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন অন্য কথা। আমলকী বা করলার রসে নয় বরং শুধু ‘জল’ খেলেই সুস্থ থাকবেন আপনি।
শরীরে জলের বিকল্প কিছু হয় না। ডায়াবেটিস কেন, অন্য যে কোনও রোগকে দূরে রাখতে চাইলে নিয়ম করে ৮ গ্লাস জল আপনাকে অবশ্যই খেতে হবে। এতে শরীরে হাইড্রেশনের ঝুঁকি পুরোপুরি কমে যায়। পাশাপাশি কমে একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও। আসলে জল আমাদের শরীর থেকে সমস্ত দূষিত পদার্থ বার করে দিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে। আর ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে জলের ভূমিকা বিশাল।
শুধু জল পান করে আপনি যেমন ওজন কমাতে পারবেন তেমনই রক্তে শর্করার মাত্রাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। সম্প্রতি আমেরিকায় একটি গবেষণায় বলা হয়েছে ২০২২-২৫ সালের মধ্যে স্থায়ী রোগে পরিণত হবে ডায়াবিটিস। আর তাই আমেরিকানদের জন্য একটি ডায়েট চার্ট প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেই বলা হয়েছে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল অবশ্যই খেতে হবে।
অ্যাকাডেমি অফ নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটিক্স অনুসারে, মহিলাদের প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস এবং পুরুষদের প্রতিদিন অন্তত ১১ গ্লাস জল খাওয়ার প্রয়োজন। পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় সবুজ শাক-সবজি, রঙিন ফল, বীজ অবশ্যই রাখবেন। খাবার থেকে যাতে অন্তত ২০ শতাংশ জলের চাহিদা পূরণ হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে। প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর জল পান করুন। ডাবের জল, তাজা ফলের রস, ডিটক্স ওয়াটারও পান করতে পারেন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।