রাতে ভরপেট বিরিয়ানি কিংবা রুটি চিকেন খেয়েও এমন অনেকেই আছেন যাঁদের আবার মধ্যরাতে খিদে পেয়ে যায়। তখন চিপস, চকোলেট, বিস্কুট, চানাচুর, মিষ্টি- হাতের সামনে যা পান তাই সরাসরি চালান করে দেন মুখে। আর মাঝরাতের খিদে মানেই মিষ্টি কিংবা ভাজাভুজি এসব খাওয়ার দিকেই মন থাকে বেশিরভাগের। এর জন্য দায়ী কিন্তু আমাদের হরমোন। রাতে বেশিক্ষণ জেগে থাকলে শরীরের হরমোন ঠিক করে কাজ করে না। ফলে মস্তিষ্কে সব নির্দেশও ঠিকমতো যায় না। সেখান থেকেই শুরু হয় এসব উল্টো পাল্টা খাওয়ার বাসনা। শুধুমাত্র আপনি একা নন, এই তালিকায় কিন্তু আরও অনেকেই আছেন। এই সমস্যাকে বলা হয় নাইট ইটিং সিনড্রোম। এমন অভ্যাস পাল্টাতে না পারলে কিন্তু মুশকিল। রোজ রাতে এমন সব খাবার খেলে যেমন আসে ওবেসিটির সমস্যা তেমনই ডেকে আনে ডায়াবেটিস, ট্রাইগ্লিসারাইডের মত জটিল অসুখও।
রাত জেগে এসব ভুলভাল খাওয়াদাওয়ার একাধিক কারণ থাকে-
১.মধ্যরাত অবধি জেগে থাকলেইন খিদে পায়। আর তখন চিপস বা ভাজাভুজি ছাড়া আর কিছুই খেতে ইচ্ছে করে না।
২.২৫ শতাংসের বেশি রাতের খাবার খাওয়া
৩.চিনি ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার প্রবল ইচ্ছা
৪.কোনও কারণে যদি সকালে এবং বিকেলে খিদের অনুভূতি কমে যায়।
এছাড়াও মুখ্য কারণ হিসেবে যা কিছু উঠে এসেছে সমীক্ষায়
রাত জেগে কাজ করা- অনেকেরই রাত জেগে পড়াশোনা করার অভ্যাস। রোজকার পড়াশোনা আর কাজের চাপে অনেকেরই ঠিকমতো ঘুম হয় না। রাতের খাবার খেতেও প্রয়োজনের তুলনায় দেরি হয়। সেই খাবার ঠিকমতো হজম তো হয় না উল্টে বডি ক্লক পরিবর্তিত হয়ে যায়। যে কারণে অনেক রাত পর্যন্ত জাগলে খিদে পায়। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকলে মস্তিষ্কের কাছে সব সংকেত ঠিক মতো পৌঁছয় না। যে কারণে খিদে পায়।
মানসিক বিষন্নতা- যদি মন খারাপ থাকে তাহলে সেখান থেকেও এমন সমস্যা হয়। মানসিক সমস্যা থাকলে ঘুম হয় না, খাবারের ুপরেও থাকে না নিয়ন্ত্রণ। কারণ মস্তিষ্ক ঠিক মতো সংকেত পাঠাতে পারো না। ফলে পেট ভরে গেলেও অনেকে খেতে থাকেন।
দিনে ঠিকমতো পেট না ভরলে- অনেকেই আছেন যাঁরা দিনে কাজের চাপে ঠিকমতো খাওয়ার সুযোগ হয় না। পেট ভরে না বলেই তাঁরা রাতে অতিরিকত্ত খাবার খান।
দায়ী জিনও- অনেক ক্ষেত্রে এই সমস্যার সূত্রপাত জিন থেকেও হয়ে থাকে। যদি পরিবারে কারোর এরকম সমস্যা থাকে, দিনভর ঘুমিয়ে রাতে ঘুমনোর অভ্যাস থাকে তাহলেও কিন্তু নাইট ইটিং সিনড্রোম হয়।
কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন
বিভিন্ন থেরাপির সাহায্য এই সমস্যার সমাধান করা যায়। ফ্রিজ আর রান্নাঘরে যাওয়া থেকে নিজেকে আটকাতে হবে।
সেরোটোনিন রিউপটেক ওষুধ খেতে পারেন। ভাল ঘুম হতে সাহায্য করে এই ওষুধ। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ কিন্তু একেবারেই খাবেন না। সেই সঙ্গে চেষ্টা করুন রোজকার জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।