Health Tips: মেদ ঝরানো থেকে শুরু করে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা—এই ৩টে জিনিস সঙ্গে রাখুন

Weight Loss: মাল্টিভিটামিনের মধ্যে ভিটামিন সি, বি১২ ও ভিটামিন ডি রয়েছে, যা পেশিতন্তু গঠনে ও পেশির বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। জিমে গিয়ে কসরত করার ফলে পেশির যে ক্ষয় হয়, সেটাও পুনরুদ্ধার করে মাল্টিভিটামিন। এই ভিটামিনগুলো বিপাকীয় হার বৃদ্ধি করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।

Health Tips: মেদ ঝরানো থেকে শুরু করে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা—এই ৩টে জিনিস সঙ্গে রাখুন
Follow Us:
| Updated on: Apr 22, 2024 | 3:56 PM

শরীরচর্চা ছাড়া কোনওভাবেই ওজন কমানো সম্ভব নয়। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে মেটাবলিজম বা বিপাক ক্রিয়া উন্নত হয়। পাশাপাশি দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। তার সঙ্গে পেশি শক্তিশালী হয়, এনার্জি লেভেল বাড়ে এবং কার্ডি‌ওভাস্কুলার সহ একাধিক রোগের ঝুঁকি কমে। রোজ নিয়ম করে যোগব্যায়াম করলে দেখবেন চেহারাতে বেশ বদল এসেছে। পেশি টোনড হয়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে আত্মবিশ্বাসও। কিন্তু শরীরচর্চাই সুস্থ থাকার একমাত্র উপায় নয়। দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিও জরুরি। দেহে যদি পুষ্টির ঘাটতি না থাকে, তাহলে ব্যায়াম করেও কোনও ফল পাবেন না। আর দেহে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার জন্য জরুরি সুষম আহার। খাবার মাধ্যমে আপনি দেহে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার, প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পেতে পারেন। কিন্তু চাইলে সবসময় ব্যালেন্সড ডায়েট মেনে চলা যায় না। কিংবা খাবারের মাধ্যমেও সব পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হয় না। সেক্ষেত্রে কাজে আসতে পারেন Multivitamin

ভিটামিনের কাজ

দেহের শারীরবৃত্তীয় কাজ যাতে সুষ্ঠ‌ভাবে সম্পন্ন হয়, তার জন্য ভিটামিন ও মিনারেল অপরিহার্য। সাধারণত শাকসবজি, ফল, মাছ, মাংস, ডিম ও দানাশস্য থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়। কিন্তু সবসময় এই সব ধরনের খাবার একসঙ্গে খাওয়া সম্ভব হয় না। তখনই দেহে পুষ্টির ঘাটতি তৈরি হতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি মাল্টিভিটামিন বা পরিপূরক গ্রহণ করতে পারেন।

এই খবরটিও পড়ুন

শরীরচর্চা‌য় মাল্টিভিটামিনের ভূমিকা

আপনি যদি নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, জিমে যান, সেক্ষেত্রে মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করলে অন্যদের তুলনায় বেশি উপকার পাবেন। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা শরীরকে ফিট রাখার জন্য, বডি ব্লিডিংয়ের জন্য, কার্ডি‌ওভাস্কুলার স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য জিমে যান। সেক্ষেত্রে ভিটামিন ও মিনারেলের প্রয়োজনীয়তা বেশি। বিশেষ করে আয়রন বা প্রোটিনের মতো পুষ্টি দরকার পড়ে। এক্ষেত্রে মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট আপনার দৈনিক ভিটামিনের চাহিদার ১০০% পূরণ করতে পারে। শরীরচর্চা শুরু করার আগে বা পরে মাল্টিভিটামিন খেলে ভাল ফল পাবেন।

মাল্টিভিটামিনের মধ্যে ভিটামিন সি, বি১২ ও ভিটামিন ডি রয়েছে, যা পেশিতন্তু গঠনে ও পেশির বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। জিমে গিয়ে কসরত করার ফলে পেশির যে ক্ষয় হয়, সেটাও পুনরুদ্ধার করে মাল্টিভিটামিন। এটাও প্রমাণিত যে, ভিটামিন বি, সি, ডি, ই এবং কে—এই মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টগুলি পেশির মেরামত, রক্ষনাবেক্ষণ করে এবং ফ্যাট বার্ন করে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এই ভিটামিনগুলো বিপাকীয় হার বৃদ্ধি করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।

তবে, মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করছেন বলে, শরীরচর্চার পর শরীরকে বিশ্রাম দেবেন না, এই ভুল একদম নয়। এমনকি সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য পুষ্টিকর খাবারও খেতে হবে। ক্রীড়াবিদদের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা মাল্টিভিটামিনও আছে।

পুরুষদের সুস্বাস্থ্যের পিছনে হরমোনের ভূমিকা

যৌন স্বাস্থ্য উন্নত করা থেকে শুরু করে পেশির ভর ও হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে পুরুষদের দেহে টেস্টোস্টেরন হরমোন বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই হরমোন পুরুষদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করার ক্ষেত্রে অপরিহার্য। পেশি ও হাড়ের বৃদ্ধিতেও টেস্টোস্টেরন হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ভারী ওয়ার্কআউট, পুষ্টির অভাব, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, শারীরিক অসুস্থতা—এরকম একাধিক কারণ রয়েছে পুরুষের দেহে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে যাওয়ার। T booster হল টেস্টোস্টেরন বর্ধক। এই সম্পূরক (সাপ্লিমেন্ট) গ্রহণ করলে আপনার দেহে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়তে পারে। মেথি, জিঙ্ক, ম্যাকা (maca) ও অশ্বগন্ধার মতো উপাদান দিয়ে তৈরি এই সাপ্লিমেন্ট।

টেস্টোস্টেরন হরমোন হাড়ে মিনারেলের ঘনত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে। তাই বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এই হরমোনের মাত্রা কমলে পুরুষদের দেহে হাড়ের ঘনত্বও কমে। যার জেরে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে।

টেস্টোস্টেরন শরীরে চর্বি ঝরাতে এবং মাসল মাস বাড়াতে সাহায্য করে। এতে ওজন কমে এবং কাজ করার এনার্জির পাওয়া যায়। যেসব পুরুষের দেহে এই হরমোনের মাত্রা কম, তাঁরা স্ট্রেন্থ ট্রেনিং ও কার্ডিওর সাহায্যে টেস্টোস্টেরন বাড়াতে পারেন। এই দুটির মধ্যে কার্ডিও আপনাকে ফ্যাট বার্ন করতে, আর স্ট্রেন্থ ট্রেনিং পেশিযুক্ত, স্লিম শরীর গঠনে সাহায্য করে। এর সঙ্গে সাপ্লিমেন্ট হিসাবে যদি টি-বুস্টার খান তাহলে অবশ্যই মনের মতো ফল পাবেন।

জীবনধারায় যে সব পরিবর্তন এনে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াবেন-

স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাদ্য খাওয়া: পুষ্টিকর খাবার দেহের স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখতে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। আর ডায়াবেটিস টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দেয়।

নিয়মিত শরীরচর্চা করুন: অ্যারোবিক এবং অ্যানেরোবিক ব্যায়াম শরীরকে ফিট রাখে। পাশাপাশি ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় এবং টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।

ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলুন: দেহে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বজায় রাখতে চাইলে ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন। এই বদঅভ্যাস টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দেয়।

ওপিওড এড়ানো: অপিওডস, যেমন মরফিন টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এই অভ্যাস থাকলে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন।

ফ্যাট দরকার কিন্তু অতিরিক্ত নয়

সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা জন্য ফ্যাট বা চর্বি দরকার। শরীরের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফ্যাট ক্যালোরি আকারে প্রয়োজনীয় এনার্জির জোগান দেয়। ফ্যাট শরীরকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন শোষণে সাহায্য করে যেমন ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে। কিন্তু প্রয়োজনের বেশি ফ্যাট দেহে রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ডেকে আনে কার্ডিওভাস্কুলার রোগ।

ফ্যাট ঝরানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় হয়, প্রতিদিন যে পরিমাণ ক্যালোরি পোড়াতে পারবেন, তার চেয়ে কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। এতে শরীরে ক্যালোরির ঘাটতি তৈরি হয়। এর জেরে দেহের অতিরিক্ত চর্বি বার্ন হয় এবং মেদ ঝরে।

ফ্যাট গলানোর আরেকটি উল্লেখযোগ্য উপায় হল, কার্ডিওভ্যাস্কুলার ওয়ার্কআউট- যার মধ্যে রয়েছে হাঁটা, দৌড়ানো ও সাইকেল চালানোর কাজ। এসব কাজ আপনার বিপাকক্রিয়া হার বাড়িয়ে ফ্যাট গলাতে সাহায্য করে।

যখন কিছুতেই কমছে না ফ্যাট-

হাজার ওয়ার্কআউট করে, ডায়েট মেনে খাবার খেয়েও অনেক সময় ফ্যাট ঝরতে চায় না। তখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে ফ্যাট বার্না‌র। এতে ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার, ক্যাফেইন ও ভেষজ উপাদান রয়েছে। ফ্যাট বার্নার তিনভাবে মেদ গলিয়ে ওজন ঝরাতে সাহায্য করে- বিপাক হার বৃদ্ধি করে, শরীর যে ফ্যাট শোষণ করে তার পরিমাণ কমায়, খিদে কমায়।

ফ্যাট বার্নারগুলি সাপ্লিমেন্ট হিসাবে বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে আপনি সহজেই ওজন কমাতে পারে এবং স্বাস্থ্যেরও উন্নতি হয়।

চর্বিহীন, পেশিযুক্ত, ছিপছিপে শরীর আপনাকে যে শুধু সুন্দর চেহারা দেয়, তা নয়। এগুলো আপনাকে সুস্থভাবে জীবনযাপনেও সহায়তা করে। অতিরিক্ত ফ্যাট ও ওজন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য ক্রনিক অসুখের সম্ভাবনা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। ওজন হ্রাস, বিশেষত পেটের ও শরীরের চর্বি গলানো, রক্তনালিগুলির কার্যকারিতা এবং ঘুমের মান উন্নত করে। নিয়মিত শরীরচর্চা ও পরিমিত সুষম আহারে সঙ্গে সঙ্গে সাপ্লিমেন্ট হিসাবে মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট, টি-বুস্টার এবং fat burner গ্রহণ করলে আপনার মনের মতো ফল পাবেন।