Food Waste: ৭৮ কোটি বাঁচে খিদে নিয়ে, তবুও পৃথিবীর মোট খাবারের ১৯ শতাংশই ফেলা যায়

Apr 12, 2024 | 2:02 PM

United Nations Report: পৃথিবীবাসীর একাংশ যখন দেদারে খাবার নষ্ট করছে, তার পরিনাম ভোগ করতে হচ্ছে অপর অংশকে। মোট যে খাবার নষ্ট হয়েছে তা দিয়ে অন্তত ১০০ কোটি মিল (Meal) তৈরি হত। অর্থাৎ ১০০ কোটির বেশি মানুষের মুখের গ্রাস কেবল মাত্র ফেলা গিয়েছে। ‘পূর্ণিমার চাঁদকে ঝলসানো রুটি’ হিসাবে দেখা তখনই বন্ধ হবে, যখন খাবার নষ্টের এই প্রবণতায় ইতি পড়বে।

Food Waste: ৭৮ কোটি বাঁচে খিদে নিয়ে, তবুও পৃথিবীর মোট খাবারের ১৯ শতাংশই ফেলা যায়
প্রতীকী ছবি

Follow Us

নয়াদিল্লি: প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতিতে পৃথিবীর বুকে যতই বিস্ময়কর কর্মকাণ্ড চলুক না কেন, ক্ষুধার রাজত্বের অবসান কিন্তু এখনও হয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও কয়েক কোটি মানুষ পেটে খিদে নিয়েই ঘুমাতে যান বা তাঁদের খাবারে পুষ্টির অবস্থা খুবই করুণ। কিন্তু এ নিয়ে পৃথিবীর অপর একটি অংশের তেমন মাথাব্যথা নেই। খাবার নষ্ট নিয়ে সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের (United Nations) প্রকাশিত রিপোর্ট কিন্তু এমন কথাই বলছে। সেই রিপোর্ট জানান দিচ্ছে, ২০২২ সালে গোটা বিশ্বে যে পরিমাণ খাদ্য উৎপাদিত হয়েছে, তার ২২ শতাংই নষ্ট হয়েছে। অর্থাৎ ওই বছর ১০৫ কোটি মেট্রিক টন খাবার নষ্ট হয়েছে। ২০২১ সালে খাবার নষ্টের পরিমাণ ছিল ১৭ শতাংশ।

ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (UNEP) ও ওয়েস্ট অ্যান্ড রিসোর্স অ্যাকশন প্রোগ্রাম (WRAP) যৌথ ভাবে খাদ্যনষ্ট সংক্রান্ত রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে। মূলত গৃহস্থালী, ফুড সার্ভিস এবং রিটেলারদের ডেটা বিশ্লেষণ করে এই রিপোর্ট প্রস্তুত করেছে। কিছু দেশ থেকে পর্যাপ্ত তথ্যও তারা পায়নি। কিন্তু যে তথ্য মিলেছে, তাও পরিস্থিতিতে বোঝাতে যথেষ্ট।

ওই রিপোর্টে উঠে এসেছে, খাবার নষ্টের অধিকাংশই ঘটেছে গৃহস্থালীতে। পৃথিবীতে মোট খাবার নষ্টের প্রায় ৬০ শতাংশই হয়েছে বাড়িতে। ২৮ শতাংশ খাবার নষ্ট হয়েছে রেস্তোঁরা-হোটেলে। এবং রিটেলারদের কাছে খাবার নষ্ট হয়েছে ১২ শতাংশ। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি ব্যক্তি এক বছরে খাবার নষ্ট করেছেন প্রায় ৭৯ কেজি। মোট যে খাবার নষ্ট হয়েছে তা দিয়ে অন্তত ১০০ কোটি মিল (Meal) তৈরি হত। অর্থাৎ ১০০ কোটির বেশি মানুষের মুখের গ্রাস কেবল মাত্র ফেলা গিয়েছে। যেখানে পৃথিবীর ৭৮ কোটির বেশি মানুষ ভালভাবে খেতে পান না বা তাঁদের খাবারে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব রয়েছে।

‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়’

এই রিপোর্ট তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করা ক্লেমেনটাইন ও’কোনর খাদ্য নষ্টের বিষয়টিকে ‘প্রতারণা’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। এ বিষয়ে বলেছেন, “এর কোনও মানে হয় না। এটা একটা জটিল সমস্যা। যদিও সহযোগিতা এবং সিস্টেমেটিক ব্যবস্থা নিলে এর সমাধান সম্ভব। এই রিপোর্ট যখন প্রকাশিত হল তখন বিশ্বের ৭৮ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ খিদের জ্বালায় ভোগেন। অন্য অনেক এলাকা খাদ্যসঙ্কটের মুখোমুখি।” শুধু মানুষের খিদে নয়, এই পরিমাণ খাদ্য নষ্ট গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণও বাড়াচ্ছে বলে উল্লেখিত হয়েছে ওই রিপোর্টে। বিশ্বে নিঃসৃত গ্রিন হাউস গ্যাসের ৮ থেকে ১০ শতাংশ দায়ী এই নষ্ট খাবার।

পৃথিবীবাসীর একাংশ যখন দেদারে খাবার নষ্ট করছে, তার পরিনাম ভোগ করতে হচ্ছে অপর অংশকে। বুসারা সেন্টার ফর বিহেভিওরাল ইকোনমিক্সের প্রজেক্ট অ্যাসোসিয়েট ফাদিলা জুমারের কথাতেও উঠে এসেছে এই বিষয়টি। তিনি বলেছেন, “মানবতার নিরিখে খাবার নষ্টের অর্থ গরিরদের কাছে কম খাবার পৌঁছনো।” ‘পূর্ণিমার চাঁদকে ঝলসানো রুটি’ হিসাবে দেখা তখনই বন্ধ হবে, যখন খাবার নষ্টের এই প্রবণতায় ইতি পড়বে।

Next Article