নয়া দিল্লি : বিগত দুই মাস ধরে চলা অভিযানের ইতি টেনেছে দিল্লি পুলিশ। ঋণের নামে ৫০০ কোটি টাকার তোলাবাজির ব়্যাকেট ফাঁস করল দিল্লি পুলিশ। এদিন এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে সারা দেশ থেকে ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারির পর দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব়্যাকেট ১০০ টি অ্য়াপ্লিকেশন ব্যবহার করে ঋণ গ্রহীতাদের ব্যক্তিগত তথ্য়ের অ্যাক্সেস করত প্রতারকরা। এই অ্যাপগুলি হল, ক্যাশ পোর্ট, রুপি ওয়ে, লোন কিউব, ওয়াও রুপি, স্মার্ট ওয়ালেট, জায়ান্ট ওয়ালেট, হাই রুপি, সুইফট রুপি, ওয়ালেটুইন, ফিশক্লাব, ইয়াহক্যাশ, ইম লোন, গ্রোট্রি, ম্যাজিক ব্যালেন্স, ইয়োক্যাশ, ফরচুন ট্রি, সুপার কয়েন, রেড ম্যাজিক। অন্ততপক্ষে ৫১ টি মোবাইল, ২৫ টি হার্ড ডিস্ক, ৯ টি ল্যাপটপ, ১৯ টি ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, তিনটি গাড়ি ও চার লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত দু’মাস ধরে চলা এই অপারেশনের পর্যালোচনা করার পর ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লি, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ এবং অন্যান্য রাজ্য এই নেটওয়ার্ক বিস্তৃত ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লখনউয়ের একটি কল সেন্টার থেকে এই গ্য়াং কাজ করত। প্রায় ১০০ টির মতো অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে তারা ক্ষুদ্র ঋণ দিত। কোনও ব্যবহারকারী অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার পর সেই অ্য়াপকে অনুমতি দেওয়ার পরই ব্যবহারকারীরা নিজেদের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পেয়ে যেতেন। অ্য়াপটি ইনস্টল করার কয়েক মিনিটের মধ্যে টাকা পেয়ে যেতেন গ্রাহকরা। ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (IFSO) কেপিএস মালহোত্রা জানিয়েছেন, ঋণ গ্রহীতাদের ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্টে টাকা ঢোকার পরেই বিভিন্ন নম্বর থেকে ঋণ গ্রহীতাদের ফোন করা হত। ঋণ গ্রহীতাদের মর্ফ করে নগ্ন ছবি সোশ্যাল মিডিয়া ও পর্ন সাইটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হত। এইভাবেই ঋণ দেওয়া টাকার পরিমাণের থেকে বেশি টাকা আদায় করত এই ব়্যাকেট।
সমাজ ও স্টিগমার কথা ভেবে ঋণগ্রহীতারা এই গ্য়াংয়ের হাতে টাকা তুলে দিতেন। তারপর হাওয়ালার মাধ্য়মে চিনে পাঠানো হত বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এই অসাধু কাজে ব়্যাকেটটি একাধিক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিল বলে জানা গিয়েছে। প্রতিটি অ্যাকাউন্টে ১ কোটির বেশি টাকা ঢুকেছিল। এই ব়্যাকেটে জড়িক থাকার অভিযোগে গোটা দেশ থেকে ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে বেশ কয়েকটি ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ ও হার্ড ডিস্কও। গ্রেফতীার হওয়া ব্যক্তিরা পুলিশকে জানিয়েছে, চিনা নাগরিকদের নির্দেশে এই ব়্যাকেট চালানো হত। এরপর বেশ কয়েকজন চিনা নাগরকিকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাদের গ্রেফতারির চেষ্টা চলছে।