শিলং: যৌন মিলনে লিপ্ত হবে কি হবে না, সেই বিষয়ে ‘সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম’ ১৬ বছরের কিশোরী। তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ মেঘালয় হাইকোর্টের। যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা আইন বা পকসো আইনের অধীনে অভিযুক্ত এক ব্যক্তি, তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া মামলা বাতিল করার জন্য আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন মেনে নিয়েছে মেঘালয় হাইকোর্ট। রায় ঘোষণার সময় এই তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছে আদালত। আবেদনকারীর বিরুদ্ধে হওয়া এফআইআরটি খারিজ করে দিয়ে, বিচারপতি ডব্লিউ ডিয়েংদোহ বলেছেন, “এই বয়সের কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বিবেচনা করে, এই আদালত মনে করে যে, তারা যৌন মিলন-সহ নিজের ভালর বিষয়ে সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম।”
জানা গিয়েছে, অভিযোগকারী পরিবারের বাড়িতে আসা-যাওয়া ছিল আবেদনকারীর। সেখানেই ওই ১৬ বছরের কিশোরীর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তাঁর। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। এরপর, আবেদনকারীর মামার বাড়িতে গিয়ে তারা যৌন মিলনে লিপ্ত হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরদিন এই বিষয়ে জানতে পেরে, ওই কিশোরীর মা আবেদনকারীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় অপহরণ এবং পকসো আইনের দুটি ধারায় এফআইআর দায়ের করেছিলেন। মেঘালয় হাইকোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া মামলা খারিজের আবেদন করেছিলেন আবেদনকারী। তিনি জানান, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দেওয়া বিবৃতিতে এবং আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় ওই কিশোরী নিজেই জানিয়েছে যে সে আবেদনকারীর প্রেমিকা। যৌন মিলনে যে তার সম্মতি ছিল, তার উপর জোর খাটানো হয়নি, তাও জানিয়েছে কিশোরী মেয়েটি। কাজেই, তাঁর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করাই যায় না বলে, আদালতে দাবি করেন আবেদনকারী।
দুই পক্ষের যুক্তি এবং পূর্ববর্তী আইনি নজিরগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করে আদালত জানায়, ওই কিশোরীর বয়স ১৬ বছর। অর্থাৎ সে নাবালিকা। তবে, যৌন মিলনে সে লিপ্ত হবে কি হবে না, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো সচেতনতা রয়েছে তার। রায় দেওয়ার সময়, মাদ্রাজ হাইকোর্টের একটি মামলার উদাহরণও দেন বিচারপতি ডব্লিউ ডিয়েংদোহ। ২০২১ সালের ওই ঘটনায়, এক কিশোরীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে। ওই মামলার ক্ষেত্রে রায় দেওয়া হয়েছিল, ওই কিশোরী যৌন মিলনের বিষয়ে সচতন এবং সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম। তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বিবেচনা করে এই অনুমান করা যুক্তিসঙ্গত বলে জানিয়েছিল আদালত।