তিরুবনন্তপুরম: পড়াশোনায় বেশ ভাল, ক্লাসেও যথেষ্ট মনোযোগী ছিল বছর ১৬-র কিশোরী। হঠাৎই একদিন স্কুলে আসা বন্ধ করে দিল কিশোরী। সহপাঠীদের কাছে জিজ্ঞাসা করেও সদুত্তর মেলেনি, বাধ্য হয়েই ওই ছাত্রীর বাড়িতে খোঁজ নেওয়ার জন্য স্কুলের কর্মীকে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকেই জানা গেল, ওই কিশোরীর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। নাবালিকা হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে তাঁর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হল, এই নিয়ে পরিবারের সদস্য়দের প্রশ্ন করতেই সামনে এল ভয়ঙ্কর ঘটনা। জানা গেল, অন্য কেউ নয়, নাবালিকার ধর্ষকের সঙ্গেই তাঁর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে কেরলের (Kerala) তিরুবনন্তপুরমে। বাল্য বিবাহ (Child Marriage) ও ধর্ষণের (Physical Assault) অভিযোগে মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার মধ্যে ধর্ষকও রয়েছে। এছাড়া নাবালিকার বাবা ও যিনি বিয়ে দিয়েছিলেন, তাদের দুজনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে ১৬ বছরের কিশোরী (তখন ১৪-১৫ বছর বয়স ছিল)-কে ধর্ষণ করে ২৩ বছরের ওই যুবক। সেই সময় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানায় নির্যাতিতার পরিবার। চার মাস জেলেও ছিল অভিযুক্ত। কিন্তু পরে জামিন পেয়ে যায় অভিযুক্ত। এরপরই ফিরে এসে ওই যুবক ফের নাবালিকার বাড়িতে চড়াও হয় এবং ফের তাঁকে ধর্ষণ করে। এই ঘটনা একদিনে থেমে থাকেনি, দিনের পর দিন এই অত্যাচার চলতে থাকে।
দীর্ঘদিনের এই অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতেই কিশোরীর পরিবার ধর্ষকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত ১৮ জানুয়ারি ওই কিশোরীর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতিই কিশোরী যে স্কুলে পড়ত, সেই স্কুলের শিক্ষিকারা তাঁর সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করে। এরপরই গোটা বিষয়টি সামনে আসে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মূল অভিযুক্ত ধর্ষক সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসো আইন, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক স্থানীয় মাফিয়াদের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধের অভিযোগও রয়েছে।