স্কুল থেকে বেরিয়ে সোজা মেট্রোয় ঝাঁপ! ১৬-র কিশোরের সুইসাইড লেটার পড়লে বুক কাঁপবে…
Student Death: অপমান সহ্য় করতে পারেনি কিশোর। প্রতিদিন গাড়ি করেই স্কুলে যাওয়া-আসা করলেও, মঙ্গলবার স্কুলের পিছনের গেট দিয়ে বেরিয়ে যায় এবং মেট্রো স্টেশনে গিয়ে আত্মহত্যা করে। কিশোরের ব্যাগ থেকে যে সুইসাইড লেটার পাওয়া গিয়েছে, তাতে তিনজন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে গিয়েছে।

নয়া দিল্লি: ব্যস্ত দুপুর। স্কুল ছুটি হতেই সোজা মেট্রো স্টেশনে চলে গিয়েছিল বছর ষোলোর কিশোর। মেট্রো স্টেশনে ঢুকেই সোজা উচু প্ল্যাটফর্ম থেকে ঝাঁপ দিল লাইনে। সব শেষ। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করার সময়ই কিশোরের ব্যাগ থেকে একটা হাতে লেখা চিঠি পায়। সুইসাইড লেটার। তাতে কী লেখা জানেন? শৌর্য্য পটেলের মৃত্যু নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দিল্লিকে।
১৬ বছরের এক কিশোরের সুইসাইড লেটারে লেখা, “সরি মাম্মি, এতবার তোমার মন ভাঙলাম, এবার শেষবার মন ভাঙব। স্কুলের শিক্ষকরা এমনই, কী বলব?”। দাদার জন্য চিঠিতে লেখা, “সরি ভাইয়া, আমি তোমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি, ঝগড়া করেছি, সম্মান দিইনি”। বাবার উদ্দেশে শৌর্য্য লিখে যায়, “সরি পাপা, তোমার মতো ভাল মানুষ হওয়া উচিত ছিল আমার।”
মঙ্গলবার দুপুরে দিল্লির একটি নামী বেসরকারি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আত্মহত্যা করে। অভিযোগ, বিগত এক বছর ধরে তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এমনকী তাঁকে কটাক্ষও করেছেন শিক্ষকরা। সম্প্রতি তাঁর মা-বাবা স্কুলে অভিযোগ জানালে ওই ছাত্রকে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
মৃত পড়ুয়ার বাবার দাবি, ঘটনার দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার স্কুলে ডান্স প্রাকটিসের সময় পড়ে যায় শৌর্য্য। এরপর তাঁকে প্রকাশ্যেই সমস্ত পড়ুয়ার সামনে অপমান-অপদস্থ করেন শিক্ষক। কাঁদতে কাঁদতে স্টেজ থেকে নেমে আসে শৌর্য্য। তখনও শিক্ষক বলেছিলেন, “যত খুশি কাঁদো, আই ডোন্ট কেয়ার।”
এই অপমান সহ্য় করতে পারেনি কিশোর। প্রতিদিন গাড়ি করেই স্কুলে যাওয়া-আসা করলেও, মঙ্গলবার স্কুলের পিছনের গেট দিয়ে বেরিয়ে যায় এবং মেট্রো স্টেশনে গিয়ে আত্মহত্যা করে। কিশোরের ব্যাগ থেকে যে সুইসাইড লেটার পাওয়া গিয়েছে, তাতে তিনজন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে গিয়েছে। শৌর্য্যের ওই চিঠির ভিত্তিতেই তিন শিক্ষক ও স্কুলের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। তাদের ইতিমধ্যেই স্কুল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
ছেলের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েন শৌর্য্যের বাবা, প্রদীপ পাটিল। তিনি বলেন, “এক বছর ধরে শিক্ষকদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করত আমাদের কাছে। আমরা যখনই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তুলতে চেয়েছি, তখনই আমাদের বলা হয়েছে যে আমার ছেলের ক্লাসে আরও মনোযোগী হওয়া উচিত। অঙ্কে ভাল নয় ওঁ, নম্বর কম ওঁর। শৌর্য্য একটা বাচ্চা। আর এই বয়সে বাচ্চারা অমনোযোগী হয়ে পড়ে। তাই বলে শিকরা ওর সঙ্গে যে আচরণ করত তা কখনওই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা কথা বলতে গেলে টিসি দিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়েছিল।”
