নয়া দিল্লি: সোমবার (১৮ জুলাই) রাজধানী দিল্লিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল সিকিম পুলিশের তিন কর্মীর। গুলি চালিয়েছে তাঁদেরই এক সহকর্মী, দিল্লি পুলিশকে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএনআই। এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিকিম পুলিশের ওই কর্মীদের দিল্লির হায়দারপুর এলাকায় একটি জলের প্ল্যান্টে মোতায়েন করা হয়েছিল। সেখানেই গুলিচালনার ঘটনা ঘটেছে। দিল্লি পুলিশ আরও জানিয়েছে, আহত এক পুলিশকর্মীকে এক নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁরও মৃত্যু হয়েছে। গুলিচালনার পর, অভিযুক্ত পুলিশকর্মী নিজেই আত্মসমর্পণ করে। দিল্লি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু, কেন সে হঠাৎ এমন কাণ্ড করল, তা এখনও জানা যায়নি।
রোহিণীর ডেপুটি পুলিশ কমিশনার প্রণব তায়াল বলেছেন, ‘সিকিম পুলিশ কর্মীদের হায়দারপুর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে মোতায়েন করা হয়েছিল। সে তার তিন সহকর্মীকে গুলি করেছিল, যার মধ্যে দুজন মারা গিয়েছেন। সিকিম পুলিশের তৃতীয় কর্মী বর্তমানে রোহিণীর ডক্টর বাবা সাহেব আম্বেদকর হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে।’
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আত্মসমর্পণকারী অভিযুক্ত সিকিম পুলিশের ওই কর্মীর নাম প্রবীন রাই। তার বয়স ৩২ বছর। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাটালিয়ন বা আইআরবিএন (IRBn)-এর অংশ হিসাবে ওই প্ল্যান্টের নিরাপত্তার জন্য সিকিম পুলিশের বাকিদের সঙ্গে তাকেও মোতায়েন করা হয়েছিল। তার তিন সহকর্মীর মধ্যে দুজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় বিএসএ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু বাঁচানো যায়নি। দিল্লি পুলিশ আরও জানিয়েছে, এই গুলি চালানোর ঘটনার বিষয়ে এদিন বিকেল ৩টে নাগাদ কেএনকে মার্গ থানায় একটি ফোনকল এসেছিল। অন্যদিকে অভিযুক্ত প্রবীন রাই সময়পুর বাদলি থানায় আত্মসমর্পণ করেন।
অদ্ভুতভাবে, ঠিক দুই দিন আগেই জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুর জেলার একটি সেনা শিবিরে ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ বাহিনীর এক জওয়ান তার তিন সহকর্মীকে গুলি করে আহত করে। তারপর নিজে আত্মঘাতী হয়েছিল। ঘটনাটি ঘটেছে দেবিকা ঘাট কমিউনিটি সেন্টারে। ওই জওয়ান বাহিনীর অষ্টম ব্যাটালিয়নের সদস্য ছিলেন। বর্তমানে জম্মু ও কাশ্মীরে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের দ্বিতীয় অ্যাড-হক ব্যাটেলিয়নের ‘এফ’ কোম্পানিতে মোতায়েন করা হয়েছিল তাকে।
গত সপ্তাহে আবার জম্মু ও কাশ্মীরেরই পুঞ্চ জেলার সুরানকোট এলাকায়, একে অপরের দিকে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল ভারতীয় সেনার দুই জওয়ানের বিরুদ্ধে। ওই ঘঠনায় দুই সেনা নিহত এবং একজন আহত হয়েছিলেন। জানা গিয়েছিল, কালাকোটের বাসিন্দা ইমরান আহমেদ এবং মেনধরের ইমতিয়াজ আহমেদের মধ্যে কোনও ব্যক্তিগত বিষয়ে উত্তপ্ত তর্কবিতর্ক হয়েছিল। এরপরই তারা একে অপরকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া শুরু করেছিলেন। অন্য দুই সেনাকর্মী সেই বন্দুকযুদ্ধের মাঝে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তাঁদের একজনের মৃত্যু হয়েছিল।