মুম্বই: খাবারের বিল হয়েছিল ১০,০০০ টাকা। সেই টাকা কে মেটাবে, এই নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ২০ বছরের জন্মদিনের দিনই চার বন্ধুর হাতে প্রাণ গেল এক যুবকের। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে গত সপ্তাহে মুম্বইয়ের গোভান্দির বাইগানওয়াড়ি এলাকায়। মঙ্গলবার (৬ জুন) মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, নিহত যুবকের নাম সাবির আনসারি। তাঁকে হত্যার দায়ে গুজরাটের আহমেদাবাদ থেকে শাহরুখ ও নিশার নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত অপর দুইজন এখনও নাবালক। তাদেরকে জুভেনাইল হোমে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ৩১ মে জন্মদিন ছিল ২০ বছরের সাবিরের। ওইদিন সকালে চার বন্ধুর সঙ্গে একটি ধাবায় তাঁর জন্মদিন উদযাপনের আয়োজন করেছিলেন তিনি। খাবারের বিল এসেছিল প্রায় ১০,০০০ টাকা। বাকি চারজনকে সাবির অনুরোধ করেছিল, যাতে সকলে মিলে ভাগাভাগি করে ওই বিল মেটানো হয়। বাকিরা রাজি না হওয়ায়, এই নিয়ে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। চার অভিযুক্ত সাবিরকে জানায়, তারা পরে তাঁকে ওই টাকা দিয়ে দেবে। তাদের আশ্বাস পেয়ে সাবির নিজের পকেট থেকেই খাবারের বিল পরিশোধ করে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। দুপুর ২টো নাগাদ সে বাড়ি ফিলে এসেছিল। এরপর সে অভিযুক্তদের কাছে টাকা চাইতে গিয়েছিল। কিন্তু, তারা তা দিতে অস্বীকার করে। ফিরে এসে সাবির ঘটনাটি তাঁর অন্যান্য বন্ধুদের জানিয়েছিলেন।
পরে রাত ৮টা নাগাদ, শিবাজি নগর এলাকার একটি স্কুলের কাছে, তাঁর অন্যান্য বন্ধুদের নিয়ে জন্মদিন উদযাপন করছিলেন সাবির। সেই সময় অভিযুক্ত চারজনও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। সেখানে উপস্থিত হয়ে ওই চারজন সাবিরকে গালিগালাজ করে। দুই পক্ষে মারামারি শুরু হয়। এরপর, একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাবিরকে বেশ কয়েকবার কোপ মেরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ফেলে ওই চারজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল শিবাজি নগর থানার পুলিশ। সাবিরকে তারা হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শাহরুখ ও নিশারের বয়স যথাক্রমে ১৯ এবং ২২ বছর। তারা দুজনেই আদতে উত্তর প্রদেশের গোন্ডার বাসিন্দা। ঘটনার পর তারা গুজরাটে পালিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে গোন্ডায় পালানোর চেষ্টা করছিল তারা। কিন্তু, ২ জুন আহমেদাবাদ থেকে তাদের গ্রেফতার করেছিল মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ। অন্যদিকে নাবালক দুই অভিযুক্ত নিজেরাই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। তাদের দুজনেরই বয়স ১৭ বছর। অভিযুক্ত শাহরুখ ও নিশারের বিরুদ্ধএ হত্যা-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা করা হয়েছে।