বেঙ্গালুরু: ভারতের শ্রম বাজার সম্পর্কে ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতে শিক্ষিত যুবদের চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা, অশিক্ষিতদের তুলনায় অনেক কম। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অশিক্ষিতদের তুলনায় স্নাতকদের মধ্যে বেকারত্বের হার প্রায় ৯ গুণ বেশি! এই রিপোর্ট প্রকাশ হতে না হতেই সামনে এল এক চমকে দেওয়া ঘটনা। সম্প্রতি, চুরির দায়ে বেঙ্গালুরুতে এক ২৬ বছরের মহিলা যুবতীকে গ্রেফতার করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। একসময় এক তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় চাকরি করতেন তিনি। কোভিড মহামারির সময় তাঁর চাকরি চলে গিয়েছিল। অনেক চেষ্টা করেও আর চাকরি পাননি তিনি। অগত্যা শুরু করেছিলেন চুরি করতে। আর ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছিলেন পাকা চোরে।
২৬ বছরের ওই যুবতীর নাম জ্যাসি আগরওয়াল। আদতে তিনি নয়ডার বাসিন্দা। চাকরি করতে এসেছিলেন বেঙ্গালুরুতে। কোভিড-১৯ মহামারির সময় সেই চাকরিটি হারিয়েছিলেন তিনি। এরপর, আরও অনেক জায়গায় চাকরির চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পাননি। আর তারপর তিনি যে বাড়িতে পেইং গেস্ট হিসেবে থাকতেন, সেই বাড়ি থেকে ল্যাপটপ এবং আরও বেশ কিছু ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট চুরি করেছিলেন তিনি। বেঙ্গালুরু থেকে সেগুলি নিয়ে তিনি নিজ শহরে নয়ডায় গিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। সহজেই হাতে এসেছিল বেশ কিছু টাকা। এরপর থেকে তিনি বেঙ্গালুরু শহরের বিভিন্ন পেইং গেস্ট হাউসে গিয়ে চুরি করা শুরু করেছিলেন। ধীরে ধীরে এই তথ্য প্রযুক্তি কর্মী পূর্ণ সময়ের চোরে পরিণত হয়েছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, জ্যাসি লক্ষ্য করতেন, কোন পেইং গেস্ট হাউস কখন খালি থাকে। যখন লোকজন থাকত না, সেই সময় তিনি সংশ্লিষ্ট পেইং গেস্ট হাউসের ঘরে ঢুকতেন। অনেকেই চার্জ দেওয়ার জন্য ঘরে ল্যাপটপ রেখে যান। সেই ল্যাপটপগুলি তিনি চুরি করতেন। বেঙ্গালুরু শহর জুড়ে তিনি এই কাজ করা শুরু করেছিলেন। পুলিশের মতে, বেশ কিছুদিন ধরে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
একটি পেইং গেস্ট হাউস থেকে অভিযোগ এসেছিল পুলিশের কাছে। তারা জানিয়েছিল, তাদের পেইং গেস্ট হাউস থেকে গত কয়েক মাসে একের পর এক ল্যাপটপ চুরি গিয়েছে। এরপর, পুলিশ তদন্তে নামে। ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে, জ্যাসিকে শনাক্ত করেছিল পুলিশ। পুলিশ দেখেছিল, জ্যাসি চুপিসাড়ে পেইং গেস্ট হাউসগুলিতে প্রবেশ করে, কিছুক্ষণ পর চুরি করা গ্যাজেট হাতে চলে যায়। এরপর, ২৬ মার্চ, জ্যাসিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে ২৪টি ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। যেগুলির সম্মিলিত মূল্য ১০-১৫ লক্ষ টাকারও বেশি।