নয়া দিল্লি: ট্রেন লেট হওয়া দেরিতে আসার ঘটনা ভারতে নতুন কিছু নয়। আধঘণ্টা বা এক ঘণ্টা ট্রেল দেরি হওয়াটা স্বাভাবিক বলেই মনে করা হয় এই দেশে। এই কারণে সাধারণ মানুষ অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজে ট্রেনের যাত্রা এড়িয়ে যান। তবে অনেক ক্ষেত্রে ট্রেনই হয় একমাত্র মাধ্যম। এই ট্রেন লেট হওয়ার জন্য যদি যাত্রীর কোনও অসুবিধা হয়, তাহলে রেলের কাছে জানানো যায় অভিযোগ। সম্প্রতি সেরকমই একটি অভিযোগের ভিত্তিতে রেলের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পেলেন এক যাত্রী।
অভিযোগ জানানো হয়েছিল বছর তিনেক আগে। আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে জরিমানার টাকা পেতে চলেছেন তিনি। এই ঘটনা সাধারণ যাত্রীদের জন্য একটি নজির।
অভিযোগটি জানিয়েছিলেন, মধ্য প্রদেশের জব্বলপুরের বাসিন্দা অরুণ কুমার জৈন। ২০২২ সালের ১১ মার্চ জব্বলপুর থেকে দিল্লির হজরত নিজামুদ্দিন যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট কেটেছিলেন তিনি। ট্রেনের নির্ধারিত সময় ছিল বিকাল ৩টে ৩০ মিনিট। পরের দিন অর্থাৎ ১২ মার্চ ভোর ৪টে ১০ মিনিটে হজরত নিজামুদ্দিন স্টেশনে পৌঁছনোর কথা ছিল ট্রেনটির। কিন্তু ট্রেন প্রায় ৩ ঘণ্টা দেরীতে পৌঁছয় সেই ট্রেন। ফলে সেখান থেকে যে ট্রেনে ওঠার কথা ছিল, সেটা ‘মিস’ হয়ে যায়।
রেলের এই গাফিলতি নিয়ে অভিযোগ তুলে অরুণ কুমার জৈন কনজিউমার ফোরামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রায় তিন বছর আইনি লড়াইয়ের পর ন্যায়বিচার পেলেন অরুণ কুমার।
কোনও সমস্যা যাতে না হয়, তার জন্য অরুণ কুমার একটি ট্রেন থেকে অন্য ট্রেনের মধ্যে প্রায় তিন ঘন্টার পার্থক্য রেখেই ট্রেনের টিকিট বুক করেছিলেন। তবে ট্রেন তিন ঘণ্টা দেরি হওয়ায় তাঁর পুরো পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এর জন্য রেলের অবহেলাকে দায়ী করেন তিনি।
রেল দফতরও এ বিষয়ে নিজেদের পক্ষে সওয়াল করে। কিন্তু সঠিক কাগজপত্র কেউ দিতে পারেননি। তিন বছর পর রেল দফতরকে দোষী সাব্যস্ত করল কনজিউমার ফোরাম। রেলওয়েকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেছে ফোরাম। এর মধ্যে রয়েছে ৮০৩ টাকা ছিল টিকিটের দাম। মানসিক হয়রানির জন্য ৫,০০০ টাকা এবং মামলার শুনানির খরচ বাবদ ২,০০০ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৪৫ দিনের মধ্যে ওই টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রেলকে। বার্ষিক ৯ শতাংশ হারে সুদ সহ পরিশোধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলাটি যাত্রীদের অধিকার রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ।