নয়া দিল্লি: বারংবার বারণ করেছিল মা। কিন্তু, তার পরিবার শোনেনি। ৩-মাসের ছোট্ট অসুস্থ মেয়েটিকে তুলে দিয়েছিল মহিলা তান্ত্রিকের হাতে। নিউমোনিয়ার চিকিৎসায় সেই মহিলা তান্ত্রিক লোহার রড গরম করে অন্ততপক্ষে ৫১বার ছ্যাঁকা দিয়েছিল শিশুকন্যাটির গায়ে। তাতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল মেয়েটি। শেষ পর্যন্ত তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশুকন্যাটি। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের শাহদোলে।
জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরেই নিউমোনিয়ায় ভুগছিল শিশুকন্যাটি। পরিবারের লোকজন তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কিন্তু, তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। তার মা রোশনী কোল মেয়েকে শাহদোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, বাড়ির লোকজন জোর করেন, স্থানীয় এক মহিলা তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য। শেষ পর্যন্ত ওই মহিলার কাছেই নিয়ে যাওয়া হয় শিশুকন্যাটিকে। রোশনী কোলের বাধা সত্ত্বেও, শিশুকন্যাটির চিকিৎসা শুরু করেন ওই তান্ত্রিক। একটি লোহার রড গরম করে ছ্যাঁকা দিতে থাকেন ৩ মাসের মেয়েটিকে। মেয়েটি যন্ত্রণায় আর্তনাদ করতে থাকে। সেই সময়ও পরিবারের লোকজন রোশনী কোলকে বুঝিয়েছিলেন, এটাই চিকিৎসার একমাত্র উপায়।
এই অত্যাচার চলার মধ্য়েই শিশুটি নেতিয়ে পড়েছিল। এরপর আর কারোর কথা না শুনে সন্তানকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন রোশনী কোল। কিন্তু, শাহদোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় মেয়েটির। সন্তানের মৃত্যুর পর, স্থানীয় থানায় গিয়ে ওই মহিলা তান্ত্রিক এবং তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই মহিলা তান্ত্রিকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির উপযুক্ত ধারায় মামলা দায়ের করেছে শাহদোল থানার পুলিশ। তবে ঘটনার পর থেকেই ওই মহিলা তান্ত্রিক পলাতক। তার সন্ধান চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, দ্রুত তাঁকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।