সংক্রমণ বাড়লেও বাড়েনি সচেতনতা, মাস্ক না পরায় একদিনেই জরিমানা বাবদ আয় ৩২ লাখ!

বিগত ১০ মাসে বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (BMC) ৩১ কোটি টাকারও বেশি অর্থ আদায় করেছে করোনাবিধি (COVID-19 Norms) ভাঙার অপরাধে। চলতি মাসের ১৯ তারিখে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে মাস্কহীন অবস্থায় ধরা হয়।

সংক্রমণ বাড়লেও বাড়েনি সচেতনতা, মাস্ক না পরায় একদিনেই জরিমানা বাবদ আয় ৩২ লাখ!
লোকাল ট্রেন চালু হতেই লাটে উঠেছে দূরত্ববিধি।
Follow Us:
| Updated on: Feb 24, 2021 | 4:56 PM

মুম্বই: একদিনেই জরিমানা বাবদ আদায় ৩২ লাখ টাকা! যেখানে করোনা সংক্রমণ (COVID-19) ফের বৃদ্ধি পাওয়ায় একাধিক জেলায় লকডাউনের ঘোষণা করছে মহারাষ্ট্র (Maharashtra) সরকার, সেখানেই কেবল মুম্বই (Mumbai) থেকে একদিনেই মাস্ক না পরায় জরিমানা বাবদ আদায় করা হল ৩২ লাখ টাকা।

চলতি মাসে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতেই রাজ্যবাসীকে লকডাউনের সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে (Uddhav Thackeray)। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষ যাতে মাস্ক পরে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের। মুম্বইয়ে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হতেই যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন স্টেশনে মার্শালদেরও পাঠানো হয়েছিল। তাঁরাই একদিনে প্রায় ১৬ হাজারেরও বেশি মানুষের কাছ থেকে মাস্ক না পরায় জরিমানা বাবদ ৩২ লক্ষ টাকা আদায় করেছে।

এই বিষয়ে এক মার্শাল বলেন, “যাত্রীদের মাস্ক না পরার কারণ জিজ্ঞাসা করলেই তাঁরা অদ্ভুত কারণ দেখান। কেউ বলেন, মাস্ক খুঁজে পাচ্ছেন না। কেউ আবার বলেন, দমবন্ধ হয়ে আসছিল বলে মাস্ক খুলেছিলেন।” যাঁরা মাস্ক পরছেন না, তাঁদের কীভাবে ধরছেন, সেই বিষয়ে তিনি বলেন, “ভিড়ের মধ্যে গিয়ে একে একে সকলকে ধরা সম্ভব নয়। তাই আমরা দূর থেকে দাঁড়িয়ে থেকে ছবি তুলি এবং তারপর তাঁদের কাছে যাই। আমরা বহুবার বোঝানোর চেষ্টা করলেও অনেকেই মানতে চান না।”

আরও পড়ুন: ফের করোনার চোখরাঙানি! দেশে হানা নতুন ২ স্ট্রেনের

দূরত্ববিধি বজায় রেখে যাতায়াতের নির্দেশ দেওয়া হলেও টিকিট কাউন্টার কিবা ট্রেনের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বা অন্য কোনও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। অন্যদিকে, সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, মার্শালরা কেবল দুর্বলদেরই ধরে জরিমানা করছেন। যাঁরা শক্তিশালী, তাঁদের ধারেকাছেও যাচ্ছেন না মার্শালরা। এভাবে তাঁরা সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করে টাকা আদায় করছে সরকার। তাঁদের প্রশ্ন, এতই যদি সমস্যা, তবে সাধারণ মানুষকে যাতায়াতে অনুমতিই বা দেওয়া হচ্ছে কেন?

সম্প্রতি জরিমানা সংক্রান্ত প্রকাশিত তথ্যে জানা গিয়েছে, বিগত ১০ মাসে বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (BMC) ৩১ কোটি টাকারও বেশি অর্থ আদায় করেছে করোনাবিধি ভাঙার অপরাধে। চলতি মাসের ১৯ তারিখে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে মাস্কহীন অবস্থায় ধরা হয়।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে বলেছিলেন, “যদি সাধারণ মানুষ মাস্ক না পরেন, তবে আগামী ৮ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই লকডাউন (Lockdown) জারি করা হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” ইতিমধ্যেই অমরাবতী, আকোলা, যাভতমল, পুণে সহ একাধিক জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রথমে কন্টেনমেন্ট জ়োন (Containment Zone) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অমরাবতীতে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন (Lockdown) ঘোষণা করা হয়। আগামী সপ্তাহ অবধি পুণের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণাও করেছে পুণের জেলা প্রশাসন। রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৬২১৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গিয়েছেন ৫১ জন। এই নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২১ লাখ ১২ হাজার ৩১২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৫৪ হাজার ৬০৪।

আরও পড়ুন: টাকা দিয়ে করোনা ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে, ঘোষণা কেন্দ্রের