নয়া দিল্লি: রবিবার (১৯ জুন) নয়াদিল্লির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে ৪৪তম দাবা অলিম্পিয়াডের জন্য মশাল দৌড়ের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মশাল দৌড় অলিম্পিক গেমস-এর অন্যতম ঐতিহ্য। তবে, দাবা অলিম্পিয়াডে এর আগে কখনও মশাল দৌড়ের আয়োজন করা হয়নি। এই বছর, প্রথমবার এই মশাল দৌড়ের আয়োজন করেছে আন্তর্জাতিক দাবা সংস্থা, ফিডে (FIDE)। কাজেই, দাবা অলিম্পিয়াডে ভারতেই প্রথম মশাল দৌড় দেখা গেল। ঐতিহাসিক এই মশাল দৌড়ের সূচনা করার পর, অনুষ্ঠানে ভাষণও দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষরা মস্তিষ্কের বিশ্লেষণাত্মক বিকাশের জন্য চতুরঙ্গ এবং দাবার মতো খেলাগুলির আবিষ্কার করেছিলেন। যে শিশুরা দাবা খেলে তারা পরবর্তীকালে ভাল সমস্যা সমাধানকারীতে পরিণত হয়। গত ৮ বছরে, ভারত দাবাতে দারুণ উন্নতি করেছে’।
১৯২৭ সালে শুরু হয়েছিল দাবা অলিম্পিয়াড। এই বছর থেকেই প্রথমবার মশাল দৌড় শুরু হল। তবে, এরপর থেকে প্রত্যেক দাবা অলিম্পিয়াডেই মশাল দৌড় দেখা যাবে। ভারতের চতুরঙ্গ খেলা থেকে আধুনিক দাবা খেলার জন্ম। সেই ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়ে ‘ফিডে’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রত্যেকবারই দাবা অলিম্পিয়াডের মশাল দৌড় শুরু হবে দাবার আঁতুড়ঘর ভারতেই। ভারত থেকে সমস্ত মহাদেশ ঘুরে সেই মশাল গিয়ে গিয়ে পৌঁছবে আয়োজক দেশে। এদিন, নয়া দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে প্রথমে মশালটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে তুলে দেন ‘ফিডে’ সভাপতি আরকাদি ডভোরকোভিচ। এরপর, মশালটি জ্বালিয়ে সেটি তুলে দেন ভারতের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার তথা পাঁচবারের বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ন বিশ্বনাথন আনন্দের হাতে।
Prime Minister Narendra Modi launches the torch relay for the 44th Chess Olympiad at Indira Gandhi Stadium in Delhi pic.twitter.com/p6xay8afaJ
— ANI (@ANI) June 19, 2022
আগামী ৪০ দিনে এই মশাল ঘুরবে ভারতের ৭৫টি শহরে। প্রতিটি শহরেই সংশ্লিষ্ট রাজ্যের দাবা গ্র্যান্ডমাস্টাররা মশালটি গ্রহণ করবেন। মশালের শেষ গন্তব্য তামিলনাড়ুর মহাবলিপুরম। প্রসঙ্গত, ২৮ জুলাই থেকে ১০ অগাস্ট পর্যন্ত চেন্নাইয়ে বসছে দাবা অলিম্পিয়াডের ৪৪তম সংস্করণের আসর। ভারতে এই প্রথমবার দাবা অলিম্পিয়াড আয়োজিত হচ্ছে৷ আর এশিয়াতে আয়োজিত হচ্ছে ৩০ বছর পর। ১৮৯ টি দেশ এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
এর আগে ৯ জুন, চেন্নাইয়ে ৪৪তম দাবা অলিম্পিয়াডের লোগোর উন্মোচন করেছিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিন। উপস্থিত ছিলেন অল ইন্ডিয়া দাবা ফেডারেশনের সভাপতি সঞ্জয় কাপুর, সেক্রেটারি ভরত সিং চৌহান প্রমুখ। ভরত চৌহানই এই অলিম্পিয়াডের ডিরেক্টর। তিনি বলেছেন, ‘এই প্রথমবার ভারত এই মাত্রার একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এই অলিম্পিয়াডের মাসকট হবে দাবা বোর্ডে স্টান্টম্যান হিসাবে পরিচিত ‘নাইট’ (ঘোড়া)’। সঞ্জয় কাপুর বলেছিলেন, ‘আমরা এই অলিম্পিয়াডকে ভারতের অন্যান্য ক্রীড়া ইভেন্টের সামনে একটি মাইলফলক হিসাবে স্থাপন করতে চাই। এই অলিম্পিয়াড শুধুমাত্র ইতিহাসই তৈরি করবে না, একটা গোটা প্রজন্মকেও অনুপ্রাণিত করবে। এই ইভেন্টকে সাফল্যমণ্ডিত করতে এআইসিএফ সবরকম চেষ্টা করবে।’