ইম্ফল: গত কয়েকদিনের হিংসায়, মণিপুরে, অন্ততপক্ষে ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকালে সাংবাদিক বৈঠক করে জানালেন সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই হিংসায় কে বা কারা উসকানি দিয়েছিল এবং সরকারি কর্মীদের মধ্যে কারা কারা নিজেদের দায়িত্ব পালন করেননি, তা নির্ধারণ করতে এই ঘটনার উচ্চ-স্তরের তদন্ত করা হবে। রাজ্যবাসীকে তিনি ভুল তথ্য এবং গুজব না ছড়ানোর বিষয়ে সতর্কও করেছেন। এন বীরেন সিং বলেন, “৩ মে-র দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় অন্ততপক্ষে ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ২৩১ জন। সেই সঙ্গে ১৭০০-র কাছাকাছি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য আমি রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন করছি। আটকে পড়া মানুষদের তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কাজও শুরু করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, মণিপুরের বিভিন্ন স্থানে রাজ্যের এবং রাজ্যের বাইরে থেকে আসা যে সমস্ত মানুষ আটকে পড়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের সম্ভাব্য সকল প্রকার সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত, ২০,০০০ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারপরও ১০,০০০ মানুষ বিভিন্ন জায়গায় আটকে আছেন। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে তাঁরা নিজেদের গন্তব্যে যেতে পারছেন না। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, একেবারের প্রথমদিন থেকে আজ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। বেশ কয়েক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়ে রাজ্য সরকারকে সাহায্য করেছেন তিনি।
এদিকে, এদিনই মণিপুরের ব্যাপক প্রাণহানি এবং সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই ব্যাপক হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসনের উদ্যোগের গতি বাড়ানোর জন্য কেন্দ্র এবং মণিপুর সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেইসঙ্গে ধর্মীয় উপাসনালয়গুলিকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, হিংসার সময় উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে বেশ কয়েকটি ধর্মীয় উপাসনালয়কে হামলার নিশানা করা হয়েছিল। এদিন আদালতে কেন্দ্র জানিয়েছে, গত দুই দিনে মণিপুরে আর কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ২৩,০০০-এরও বেশি মানুষকে সামরিক শিবিরে নিরাপদে রাখা হয়েছে।