ভোপাল: প্রযুক্তি যেমন আশীর্বাদ, তেমনই আবার অভিশাপও। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েই ভয়ঙ্কর অপরাধ চলছিল দিনের পর দিন। নিষ্পাপ, সহজ-সরল কিশোরী ও যুবতীরা শিকার হচ্ছিল পাশবিক লালসার। তবে পাপ তো বাপকেও ছাড়ে না। যতই স্বর বদলে টোপ দিক না কেন, ছোট একটা ক্লু-ই অপরাধীর কাছে পৌঁছে দিল পুলিশকে। এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুবতীদের স্কলারশিপের টোপ দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। প্রমাণের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তি ও তাঁর তিন সহকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, অনলাইনে অ্যাপ ব্যবহার করেই ভয়েস মর্ফ করত অভিযুক্ত। গলার স্বর বদলে অভিযুক্ত কথা বলত মহিলার কণ্ঠে। স্কুল পাশ করা কিশোরী ও যুবতী, যারা কলেজে ভর্তি হতে চায়, তাদের স্কলারশিপ পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়েই ডাকত জঙ্গলে। সেখানেই তাদের ধর্ষণ করত অভিযুক্তরা।
ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে মধ্য প্রদেশের সিধি জেলায়। মূলত আদিবাসী যুবতীদেরই মিথ্যা কথা বলে, কণ্ঠস্বর বদলে ফাঁসাত অভিযুক্ত। তারপর জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে চলত পাশবিক অত্যাচার। সম্প্রতিই এক আদিবাসী যুবতী পুলিশে ধর্ষণের অভিযোগ জানান। এরপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। জানা যায়, এভাবে একাধিক যুবতীই নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্ত আগে একটি মিলে কাজ করতেন। অশিক্ষিত হলেও, প্রযুক্তি সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত, সেই কারণেই ভয়েস ফিশিং অ্যাপ ব্যবহার করে আদিবাসী কলেজের পড়ুয়াদের প্রতারিত করতেন। কলেজের এক শিক্ষিকার নাম করে ছাত্রীদের ফোন করতেন এবং বলতেন যে স্কলারশিপ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন। ওই অঞ্চলের একটি জঙ্গলে আসতে বলতেন যুবতীদের। সেখানে যাওয়ার পর বাইক নিয়ে পৌঁছত অভিযুক্ত ও সাঙ্গপাঙ্গরা। যুবতীদের জঙ্গলের গভীরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করত অভিযুক্তরা।
হেলমেট ও সবসময় হাতে গ্লাভস পরে থাকত অভিযুক্ত। তবে এক যুবতী তাঁর হাতে পোড়া দাগ দেখে নিয়েছিল। এই সূত্র ধরেই তদন্ত চালায় পুলিশ। শেষমেশ ধরা পড়ে অভিযুক্ত ও তাঁর তিন সঙ্গী। প্রশাসনের তরফে অভিযুক্তের বাড়িও বুলডোজার দিয়ে ভেঙে-গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পরই সাইবার সেলের তরফে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব নয় সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।