লখনউ : ফলের রাজা আম। শেষ পাতে হোক বা শুধু ফলাহারেই আমের জুরি মেলা ভার। সেই আমেরই রয়েছে ৩০০ টি প্রজাতি। কেউ কি জানতেন তা? নাকি অনেকটা আম খাচ্ছি আঁটির খোঁজ রেখে কী করব সেরকম বিষয়। আম খাচ্ছেন কিন্তু সেই আমেরই যে ৩০০ রকমের প্রজাতি রয়েছে এবং তা রয়েছে আমাদের ভারতবর্ষেই তা শুনে চমক তো হওয়ারই কথা। আমের মধ্যে রয়েছে ঐশ্বর্য, আনারকলি, সচিন প্রজাতির আমও। এবং ৩০০ টি প্রজাতির আবিষ্কারক হলেন স্কুল ছুট আশি ঊর্ধ্ব কালিম উল্লাহ খান।
কালিম উল্লাহ খানের আমের বাগান দেখবে চোখ কপালে উঠে যাওয়ার জোগাড়। ৩০০ টিরও বেশি ধরনের আম রয়েছে তাঁর এই বাগানে। মালিহাবাদে রয়েছে তাঁর এই সাধের আমের বাগান। তিনি বলছেন, ‘গত কয়েক দশক ধরে প্রখর রোদে পুড়ে কঠোর চাষের পুরস্কার এগুলি।’ তাঁর কথায়, ‘খালি চোখে এগুলিকে শুধুমাত্র গাছ মনে হতে পারে। যদি মনের দূরবীন দিয়ে দেখেন এটি গাছ, ফলের বাগাম এবং বিশ্বে বৃহত্তম আমের কলেজ এটি।’ পড়াশোনায় তেমন মন ছিল না। তাই ছেড়ে দিয়েছিলেন স্কুল। কিশোর বয়সেই শুরু করেন আম নিয়ে গবেষণা। নতুন ধরনের আম তৈরি করতে বিভিন্ন ধরনের গাছ একসঙ্গে করলেন। তিনি একটি গাছ বানিয়েছিলেন যেখানে সাত ধরনের নতুন ফল হতে পারে। কিন্তু ঝড়ে তাঁর সাধের সেই গাছ নষ্ট হয়ে যায়।
তবে ১৯৮৭ সাল থেকে তাঁর অন্যতম সঙ্গী হয়ে ওঠে ১২০ বছরের পুরনো একটি নমুনা বা আম গাছ। এই গাছ থেকে তিনি ৩০০ বিভিন্ন ধরনের আমের ফলন করেছিলেন। প্রতিটি আমেরই রং, আকার, স্বাদ ভিন্ন ভিন্ন। আমের যেমন ভিন্ন ধরন রয়েছে। সেরকমই রয়েছে ভিন্ন নামও। তিনি তাঁর প্রথম আবিষ্কার করা আমের নাম রেখেছিলেন ঐশ্বর্য। বিশ্ব সুন্দরী তথা বলিউড অভিনেত্রীর নামে আম এখনও পর্যন্ত তাঁর ‘সেরা আবিষ্কার’। খান বলেছেন, ‘এই আমটি সেই অভিনেত্রীর সুন্দর। একটি আমের ওজন এক কেজিরও বেশি।এর বাইরের রং ক্রিমসন। স্বাদে খুব মিষ্টি।’
তবে শুধু বিশ্ব সুন্দরীতেই থেমে নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামেও রয়েছে আম। আমের নামে রয়েছে আরও চমক। ক্রিকেটের নায়ক সচিন তেন্ডুলকার, আনারকলি আমেও ভরা তাঁর বাগান। কালিমের কথায়, ‘মানুষ আসবে যাবে, তবে সারাজীবনের জন্য থেকে যাবে আম। আরও কয়েক বছর পরে যখন এই সচিন আম খাবে মানুষ সেই মুহূর্তে ক্রিকেটের হিরোকেই স্মরণ করবেন।’ তিনি জানিয়েছেন,মরুভূমিতেই আমের চাষ করতে পারেন। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত কালিম এই গাছদের জড়িয়েই বাঁচতে চান।