মুম্বই: গত কয়েকদিন ধরে ভারতে ফের উত্তরোত্তর বাড়ছে কোভিড-১৯-এর দাপট। কোভিড মহামারির একেবারে প্রথম থেকে ভারতে সবথেকে কোভিড-ধ্বস্ত রাজ্য ছিল মহারাষ্ট্র। সেই মহারাষ্ট্রেই আবার ধীরে ধীরে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে কোভিড পরিস্থিতি। সরকারি বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় এই পশ্চিমী রাজ্যে কোভিড-১৯-এর কারণে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১১১৫টি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্যে এখন চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫,৪২১। করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে, বুধবার বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বা বিএমসি একটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উপদেশাবলী জারি করেছে। নাগরিকদের কোভিডের উপযুক্ত আচরণ করতে বলা হয়েছে। গত সপ্তাহেই অবশ্য বিএমসি মুম্বইয়ের সমস্ত সরকারি হাসপাতালে কর্মচারী, রোগী এবং দর্শনার্থীদের ফেস মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছিল। এদিনের নির্দেশিকাতে, ভিড় এবং কম বায়ু চলাচল করে এমন জায়গা এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে সব-অসুস্থতা থাকা ব্যক্তি এবং বয়স্কদের এই নির্দেশ মেনে চলতে অনুরোধ করা হয়েছে।
তবে শুধু মহারাষ্ট্র নয়, গোটা দেশেই ধীরে ধীরে কোভিড সংক্রামিতের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। তবে এই নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক। মন্ত্রক জানিয়েছে, করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের এক্সবিবি.১.১৬ সাব-ভ্যারিয়েন্টের কারণেই ভারতে ফের বাড়ছে কোভিড সংক্রমণ। বুধবার সকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছিল গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ৭,৮৩০ টি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। গত সাতমাসের মধ্যে একদিনে এত বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েনি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ভারতে আগামী ১০-১২ দিন ধরে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়বে। তারপর অবশ্য ফের করোনার দাপট ধীরে ধীরে কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, কোভিড-১৯ বর্তমানে প্রায় ‘এন্ডেমিক’ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। কোনও মহামারি রোগ যখন কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলের নিয়মিত রোগে পরিণত হয়, তখন সেই মহামারি রোগ ‘এন্ডেমিক’ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে ধরা হয়। আর মহামারি রোগ এন্ডেমিক পর্যায়ে পৌছে গেলে সংক্রামিতের সংখ্যা আর না বেড়ে বেশ কিছু সময় ধরে একই জায়গায় থাকে। কাজেই ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রামিতের সংখ্যা বাড়লেও, খুব অল্প সংখ্যক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে এবং মৃত্যুর হার অনেক কম থাকবে। তবে, কোনওরকম ঝুঁকি না নিয়ে ইতিমধ্যেই কোভিড-১৯ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রের সরকার। হাসপাতালগুলির প্রস্তুতি কেমন আছে, তা খতিয়ে দেখতে সোম এবং মঙ্গলবার – দু’দিন ধরে সারা দেশে মক ড্রিল হয়েছে। বেশ কয়েকটি রাজ্য কোভিড-১৯ নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে। উত্তরাখণ্ড-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে ফের ফেস মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।