মুম্বই: বাড়ির এক ঘরে পড়ে তিনটি মৃতদেহ। অন্যান্য বিভিন্ন ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আরও ছয়টি মৃতদেহ। নয়টি দেহের মধ্যে পাঁচটি মহিলার আর বাকি চারটি পুরুষের। সোমবার (২০ জুন) মহারাষ্ট্রের সাংলিতে একই পরিবারের নয়জন সদস্যকে তাঁদের বাড়িতেই মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে তারা ওই নয়জন একসঙ্গে আত্মহত্যা করেছেন বলে সন্দেহ করছে। তবে, এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে থাকাটাও অসম্ভব নয়। কারণ পুলিশ জানিয়েছে, তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তারা কোনও সুইসাইড নোট পায়নি, বা এই একসঙ্গে একজনের মৃত্যুর বিষয়ে কোনও লেখা পায়নি। এই ঘটনা অনেকেরই স্মৃতিতে উসকে দিয়েছে দিল্লির বুরারি এলাকার গণ-আত্মহত্যার ঘটনার কথা।
রাজধানী মুম্বাই থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সাংলি জেলার মহিসাল শহর। মহিসালেরই এক বাড়ি থেকে এদিন ওই পাঁচ মহিলা এবং চার পুরুষের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে সাংলি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই পরিবার চিকিৎসক পরিবার। একাধিক সদস্য ডাক্তারি পেশার সঙ্গে যুক্ত। সাংলির পুলিশ সুপার দীক্ষিত গেদাম বলেছেন, ‘আমরা একটি বাড়ি থেকে নয়টি মৃতদেহ পেয়েছি। তিনটি মৃতদেহ এক জায়গায় ছিল। আর ছয়টি দেহ বাড়ির অন্যান্য বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া গিয়েছে।
Maharashtra | Nine members of a family found dead in Sangli, police investigation underway pic.twitter.com/lGblowncdI
— ANI (@ANI) June 20, 2022
সরকারিভাবে এই অস্বাভাবিক নয়টি মৃত্যুকে, এখনই গণ-আত্মহত্যা বলতে চাইছে না সাংলি পুলিশ। পুলিশ সুপার দীক্ষিত গেদাম জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। তারা ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে সূত্রের অনুসন্ধান করছে। তদন্তের এই পর্যায়ে, কীভাবে এই নয়জনের মৃত্যু হল, সেটা জানাটাই পুলিশের কাছে অগ্রাধিকার পাচ্ছে। আত্মহত্যার বিষয়ে কোন নোট না পাওয়া গেলেও, প্রাথমিকভাবে মৃতদেহগুলির অবস্থা দেখে পুলিশের তদন্তকারী কর্তাদের অনুমান, পরিবারের সকলেই কোনও বিষাক্ত পদার্থ খেয়েছিলেন। বিষক্রিয়াতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। তবে, এই বিষয়টি ময়নাতদন্তের পরই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। ময়নাতদন্তেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। যদি সকলেরই বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়ে থাকে, সেই ক্ষেত্রে আরও একটি প্রশ্ন চলে আসবে। ওই বিষ কী সকলে জেনেশুনেই খেয়েছিলেন, না কি, তাঁদের অজ্ঞাতেই সেই বিষ খাওয়ানো হয়েছিল?
প্রসঙ্গত ২০১৮ সালে, উত্তর দিল্লির বুরারি এলাকাতেও প্রায় একই রকম একটি ঘটনা ঘটেছিল। সাত মহিলা-সহ একই পরিবারের মোট এগারো জন সদস্যের রহস্যজনক পরিস্থিতিতে মৃত্যু হয়েছিল। পরিবারের ১০ জন সদস্যকে চোখ বাঁধা অবস্থায় সিলিং থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছিল দিল্লি পুলিশ। এক ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধার দেহ পড়ে ছিল মেঝেতে। মৃতদের মধ্যে সাতজন ছিলেন মহিলা এবং বাকি চারজন পুরুষ। তাদের মধ্যে পাঁচজন ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক। ২০ বছর ধরে ওই বাড়িতে থাকত তারা। তদন্তে জানা গিয়েছিল, ওই পরিবারের তন্ত্র সাধনায় জড়িয়ে পড়েছিল। তন্ত্রের এক আচার হিসাবেই একসঙ্গে আত্মঘাতী হয়েছিলেন তাঁরা।