Rafale নাকি F-16, রণভূমিতে এগিয়ে কে? পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ

ঋদ্ধীশ দত্ত | Edited By: সুমন মহাপাত্র

Jun 17, 2021 | 1:48 PM

প্রযুক্তিগতভাবে এফ-১৬ও রাফালের তুলনায় কোনও অংশে কম যায় না। তবে রাফালের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য এমন রয়েছে যা এই যুদ্ধবিমানকে বাকিদের থেকে আলাদা করে দেয়।

Rafale নাকি F-16, রণভূমিতে এগিয়ে কে? পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ
অলঙ্করণ-অভীক দেবনাথ

Follow Us

TV9 বাংলা ডিজিটাল: ভারতীয় বায়ুসেনায় (Indian Air Force) যেটুকু ফাঁক ফোকর ছিল, রাফাল এসে তার বেশিরভাগটাই এখন ঢেকে দিয়েছে। পাকিস্তান (Pakistan), চিন (China), নেপালের (Nepal) মতো প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো যখন একরোখা ভারত বিরোধিতার রাস্তা বেছে নিয়েছে। তখন এই ধরনের কোনও ‘তুরুপের তাস’ প্রয়োজন ছিল। একেবারে সঠিক সময়ে তা এসে গিয়েছে সেনাবাহিনীর দক্ষ কমান্ডরদের হাতে।

রাফালের আগমন বায়ুসেনাকে ধারে ও ভারে অনেকটা শক্তিশালী করেছে ঠিকই, তবে তা বলে আত্মতুষ্টিতে ভোগার অবস্থা এখনও তৈরি হয়নি। কেননা, পাশেই পাকিস্তান বায়ুসেনা বহু বছর ধরে এফ-১৬ (F-16) বিমান নিয়ে বসে রয়েছে। মূলত যে কারণে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কেন্দ্রীয় সরকার রাফাল আমদানির উপর জোর দিয়েছিল। প্রযুক্তিগতভাবে এফ-১৬ও রাফালের তুলনায় কোনও অংশে কম যায় না। তবে রাফালের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য এমন রয়েছে যা এই যুদ্ধবিমানকে বাকিদের থেকে আলাদা করে দেয়। দেখে নেব পাকিস্তানের এফ-১৬ ও ভারতের রাফালের মধ্যে এমন কিছু তুলনা যা দুই বোমারুর মধ্যে ফারাকটা পরিষ্কার করে তুলে ধরবে (Comparison Between Rafale And F-16)।

এফ-১৬ ও রাফালের জন্মবৃত্তান্ত:

মার্কিন বায়ুসেনার বিমান নির্মাণকারী সংস্থা লকহিড মার্টিনের হাত ধরে ১৯৭৮ সালে প্রথমবার আত্মপ্রকাশ করে এফ-১৬। বয়সের বিচারে রাফাল অনেকটাই ‘ছোট’। ১৯৯১ সালে ফ্রান্সের ড্যাসল্ট এভিয়েশনের হাত ধরে জন্ম নেয় রাফাল। একে ফরাসি বায়ুসেনার সামিল করা হয় ২০০১ সালে।

যুদ্ধ ময়দানে উতরেছে কে?

চতুর্থ প্রজন্মের এফ-১৬ হোক, বা পঞ্চম প্রজন্মের রাফাল; সর্বোচ্চ প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দুই বিমানই পরীক্ষিত। ড্যাসল্টের রাফাল ২০০৬-২০১১ সালের মধ্যে আফগানিস্তানে ফরাসি বায়ুসেনার একাধিক মিশনে অংশ নিয়েছে। এর কার্যকারিতা সম্পর্কে তাই ১০০ শতাংশ নিশ্চিত বিমানের নির্মাতারা।

অন্যদিকে, গত কয়েক দশকে যুদ্ধে সর্বাধিক ব্যবহৃত বিমানের নাম এফ-১৬। ২০০১ থেকে টানা কয়েক বছর আফগানিস্তানে এই যুদ্ধবিমানই ব্যবহার করে এসেছে মার্কিন বায়ুসেনা।

গতিবেগ ও ক্ষমতায় কে এগিয়ে?

বিধ্বংসী এই দুই ফাইটার জেটের গতিবেগের তুলনা করলে দেখা যায়, এফ-১৬ কিছুটা হলেও এগিয়ে রাফালের তুলনায়। পাক বায়ুসেনার হাতে থাকা বিমানের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২৪০০ কিলোমিটার। অন্যদিকে রাফালের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২২২ কিলোমিটার।

তবে ক্ষমতার প্রশ্নে উত্তরটা অবশ্যই হবে রাফাল। কেননা ফরাসি এই বিমানটি ডবল ইঞ্জিন বিশিষ্ট। একটি ইঞ্জিন কোনও ভাবে বিকল হলেও ‘কুছ পরোয়া নেহি’। কিন্তু, এফ-১৬ বিমানে রয়েছে মাত্র একটি ইঞ্জিন। তাই পৃথিবীর অন্যতম সফল যুদ্ধবিমান হওয়া সত্ত্বেও এর দুর্ঘটনার কবলে পড়ার নজির রয়েছে। রাফালের যা নেই।

কার মিসাইল কত বেশি বিধ্বংসী?

এফ-১৬ বিমানে ব্যবহার হওয়া মিসাইলের নাম ‘অ্যমরাম’। ভাসমান অবস্থায় ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা যে কোনও লক্ষ্যবস্তুতে অব্যর্থ নিশানা লাগাতে সক্ষম এই মিসাইল।

আরও পড়ুন: শাহের নয়া অস্ত্র ‘গুপকার গ্যাং’ আসলে কী? জোট থেকেই বা কেন বেরিয়ে এল কংগ্রেস?

তবে ‘এয়ার টু এয়ার’ মিসাইল ছোড়ার প্রযুক্তিকে এককাঠি উপরে নিয়ে গিয়েছে রাফাল। এই যুদ্ধবাজ বিমানের জন্য তৈরি হওয়া বিশেষ মিসাইলটির নাম হল ‘মিটিওর’। শত্রুপক্ষের টার্গেট হওয়ায় থাকুক বা মাটিতে, ১৫০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকলেই তাকে নিমিষে গুঁড়িয়ে দেওয়া যাবে। আগামী সময় ‘হ্যামার’ নামক আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির আরেকটি মিসাইলও তৈরি হচ্ছে রাফালের জন্য।

ভার বহনে কে বেশি সক্ষম?

যতই তাবড় মিসাইল হোক না কেন, তা বহন করার ক্ষমতা যদি সংশ্লিষ্ট বিমানের না থাকে, তবে যুদ্ধ শুরুর আগেই শেষ। এই ভার বহনের ক্ষমতার নিরিখেও রাফাল এগিয়ে রয়েছে এফ ১৬-এর তুলনায়। রাফালের নিজের ওজন ১০ টন হলেও ২৪,৫০০ কেজির বিস্ফোরক নিয়ে সে উড়তে পারে। অন্যদিকে ২১,২৮২ কেজি বিস্ফোরক নিয়ে ওড়ার ক্ষমতা রয়েছে এফ ১৬-এর।

বেশি এলাকা জুড়ে দাপাতে সক্ষম কে?

পাকিস্তানের এফ-১৬ এই একটি বিষয়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে রাফালের তুলনায়। ফরাসি রাফাল নিজের ঘাঁটি থেকে উড়ে ৩৭০০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে যুদ্ধ চালাতে স্বচ্ছন্দ। কিন্তু, মার্কিন এফ-১৬ আরও ৫০০ কিলোমিটার বেশি, অর্থাৎ ৪২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা দাপিয়ে বেড়াতে পারে।

কোন বিমানের রেডার প্রযুক্তি বেশি উন্নত?

এ ক্ষেত্রেও পাকিস্তানের হাতে থাকা এফ ১৬-কে কয়েক গোল দিয়েছে রাফাল। এফ ১৬-এর রেডার ৮৪ কিলোমিটারের মধ্যে একসঙ্গে ২০টি লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। তবে রাফাল ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা ৫০টি লক্ষ্যবস্তুকে একসঙ্গে শেষ করে দিতে সক্ষম।

আরও পড়ুন: লাভ হল না ক্ষতি! তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়ে কোন নেতা আজ কোথায় দাঁড়িয়ে?

Next Article