মাংস কিনতে এসেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল বছর ৩৫-এর যুবক শাহজাদ। জন্মসূত্রে মিরাটের বাসিন্দা শাহজাদ বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের নয়ডার বাস করতেন। বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা মাংস কিনতে গিয়েই খুন হন তিনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা অনান্য দিনের মতোই গুলজারের দোকানে মাংস কিনতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই সামান্য তোয়ালে নিয়ে ঝগড়া থেকে মর্মান্তিক পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছেন শাহজাদ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুসারে ১১৭ নম্বর মাংসের দোকানে মাংস কেনার জন্য অপেক্ষা করছিল শাহজাদা এবং আরেকজন গ্রাহক। পরিচয় অজানা সেই গ্রাহকের পরনে থাকা একটি তোয়ালে ধার চেয়েছিল শাহজাদ। যা থেকে ক্রমে বাদনুবাদে জড়িয়ে পড়েন দু’জন। এক সময় হঠাৎ সেই অপরিচিত ব্যক্তি মাংসের দোকানে পড়ে থাকা একটি ছুরি তুলে নিয়ে সজোরে ঢুকিয়ে দেন শাহজাদের পেটে।
রক্তাক্ত পেট চেপে ধরে শাহজাদ প্রায় ৪০ মিটার দৌড়ে কাছের একটি মোড়ের কাছে আসে। সাহায্যের জন্য কাকুতি মিনতি করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। সামনে একটি কালভার্টের কাছে এসে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শাহজাদ।
তবে বিপদ এখানেই শেষ নয়, এর পরেই সেই ব্যক্তি ছুরি হাতে এগিয়ে এসে আরও অনেকবার আঘাত করে শাহজাদকে, যতক্ষণ না সে ওঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনা দেখে বাকিরা সকলে স্তব্ধ হয়ে গেলেও নির্বিকার ওই ব্যক্তি ফিরে আসে দোকানে। এবং তাঁর মাংস নিয়ে ফের চলে যায়।
প্রতক্ষ্যদর্শীদের ফোন পেয়েই ছুটে আসে পুলিশ। তৎক্ষণাৎ মরদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়। প্রথমে খুনী সম্পর্কে পুলিশের কাছে প্রাথমিক কোনও তথ্য না থাকলেও, পুলিশের ৩টি দল তদন্ত শুরু করে। কাছাকাছি এলাকায় খোঁজ চালানোর সঙ্গে সঙ্গেই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গোপন সূত্রে পুলিশ অভিযুক্তের পরিচয় জানতে পারে। জানা যায়, অভিযুক্ত বিহারের বাসিন্দা অমরজিত মাহাতো। শুক্রবার ভোরের দিকে,১১৭ নম্বর সেক্টরের সীমান্তবর্তী জঙ্গল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ অমরজিতকে অ্যারেস্ট করতে গেলে অভিযুক্ত পিস্তল দিয়ে পুলিশের দিকে গুলি চালায়। পুলিশের পালটা গুলি পায়ে লাগে অভিযুক্তের। এরপরেই তাঁকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযুক্তের কাছ থেকে শাহজাদের হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি, সঙ্গে পিস্তল এবং তাজা কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর মৃত শাহজাদ তিন সন্তানের পিতা। তাঁর স্ত্রী সালমা রান্নার কাজ করেন। শাহজাদ, সম্প্রতি চালকের চাকরি হারিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিলেন।
মাংসের দোকানে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও তাতে পুরো ঘটনার একটু অংশ রয়েছে। ছুরির প্রথম আঘাতের পরেই পালিয়ে যান শাহজাদ। তাঁকে ছুরি হাতে তাড়া করেন অভিযুক্ত। পুলিশ তদন্তের অংশ হিসাবে আশেপাশের দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করেছে। ঘটনার পর থেকেই মাংসের দোকানের মালিক গুলজার নিখোঁজ।