নয়া দিল্লি: কংগ্রেসের পদক্ষেপকে ‘ইতিবাচক উন্নয়ন’ বলল আপ। দীর্ঘ টালবাহানার পর, অবশেষে রবিবার (১৬ জুলাই) কংগ্রেস বলেছে, দিল্লির প্রশাসনিক পরিষেবা বিষয়ে কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতা করবে তারা। আগামীকাল, সোমবার (১৭ জুলাই) বেঙ্গালুরুতে বিরোধী জোটের দ্বিতীয় বৈঠক হওয়ার কথা। ঠিক তার আগের দিন, কংগ্রেস-আপ-এর মধ্যে এক প্রকার সমঝোতার ছবি দেখা গেল। কেন্দ্রের অধ্যাদেশের বিরোধিতার বিষয়ে কংগ্রেস তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা পরই আম আদমি পার্টির সাংসদ তথা জাতীয় মুখপাত্র রাঘব চাড্ডা টুইট করেন, “কংগ্রেস দিল্লি অধ্যাদেশের দ্ব্যর্থহীন বিরোধিতা করার কথা ঘোষণা করেছে। এটা একটা ইতিবাচক উন্নয়ন।” শুধু তাই নয়, কংগ্রেস তাদের অবস্থান জানানোর কয়েক ঘণ্টা পরই, সোমবার বেঙ্গালুরুর বৈঠকে তারা যোগ দেবে বলে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে আপ।
রবিবার বিকেলে, ‘দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি’ নিয়ে আলোচনার জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের বাসভবনে এক বৈঠক করে আপের রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটি। সেখানেই বিরোধীদের আসন্ন দুই দিনের বৈঠকে অংশ নেওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়। তারপরই দলের সিদ্ধান্ত জানান রাঘব চাড্ডা। কাজেই, কংগ্রেস-আপের মনোমালিন্য, জট – যাই বলা হোক না কেন, আপাতত কাটল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এর আগে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেনুগোপাল জানান, দিল্লির প্রশাসনিক নিয়োগ সম্পর্কে কেন্দ্রের অধ্যাদেশ জারির বিরোধিতার বিষয়ে তাদের দলের অবস্থান স্পষ্ট। বিরোধী দল-শাসিত কোনও রাজ্যে রাজ্যপালের মাধ্যমে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ করার জন্য কেন্দ্রের যে কোনও পদক্ষেপের বিরোধিতা করবে কংগ্রেস। এই বিষয়ে যখনই কোনও বিল সংসদে পেশ করা হবে, কংগ্রেস তার বিরোধিতা করবে। তিনি বলেন, “আমরা গতকাল এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার এবং রাদ্যপালদের মাধ্যমে রাজ্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনও প্রচেষ্টাকেই আমরা সমর্থন করব না। আমরা দিল্লি অধ্যাদেশও সমর্থন করব না।”
প্রশাসনিক নিয়োগের অধিকার উপরাজ্যপালের নয়, দিল্লির নির্বাচিত সরকারের হাতেই থাকবে। সুপ্রিম কোর্টের এই স্পষ্ট নির্দেশ সত্ত্বেও, গত মে মাসে দিল্লির আমলাদের নিয়োগ ও বদলি সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। এই অধ্যাদেশে, কার্যত সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অস্বীকার করা হয়েছে। গ্রুপ-এ অফিসারদের নিয়োগ এবং বদলির জন্য একটি জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিস অথরিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে অধ্যাদেশে। এরপরই, রাজ্যসভায় এই অধ্যাদেশ সংক্রান্ত বিলের বিরোধিতা করার জন্য বিজেপি-বিরোধী সকল দলগুলির সমর্থন চেয়েছে আপ। কংগ্রেস সেই বিরোধিতায় সামিল হলে তবেই তারা বিরোধী জোটের বৈঠকে যোগ দেবে বলে জানিয়েছিল কেজরীবালের দল। এর আগে পটনায় অনুষ্ঠিত প্রথম বৈঠকে অংশ নিলেও, পরে আপ জানিয়েছিল, কংগ্রেস ‘টিম প্লেয়ার’এর মতো আচরণ করছে না। হাত শিবির দিল্লি অধ্যাদেশের বিরোধিতা না করলে, কংগ্রেস আছে এমন কোনও জোটে তারা অংশ নেবে না।