ত্রিপুরা: ২৫ নভেম্বর আগরতলায় পুরভোট। তার আগে ২২ ডিসেম্বর ফের ত্রিপুরায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। পুরভোটের আগে তাতছে টিলার রাজ্য। বিপ্লবগড়ে তার আগেই ঘুরে এসেছেন বাবুল সুপ্রিয়। বাবুলের পরই ত্রিপুরা সফরে ফিরহাদ হাকিম। অভিষেকের আগে ত্রিপুরায় দলের প্রথম সারির নেতারা।
একাধিক আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কার্যত জিতে গিয়েছে শাসকদল বিজেপি। বহু জায়গায় সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তবে ত্রিপুরা নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না তৃণমূল। ২৫শে নভেম্বর ত্রিপুরায় ১৩টি পুরসভা ও ৬ টি নগর পঞ্চায়েতে ভোট হবে। তার আগে বাংলার ৯জন তৃণমূল নেতাকে পাঠানো হয়েছে ত্রিপুরায়।
গত কয়েকদিন ধরেই ত্রিপুরায় তৃণমূলের বিভিন্ন নেতৃত্ব রয়েছেন। সুস্মিতা দেব টানা পড়ে রয়েছেন সেখানে। পাশাপাশি এ রাজ্য থেকে গিয়েছেন জুন মালিয়া, সায়নী ঘোষ, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের একাধিক নেতা। রয়েছেন বিধায়করাও। যেহেতু ত্রিপুরায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বার বার সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠছে, সে কারণে এদিন ত্রিপুরায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করছে তাঁরা।
তাঁদের মূলত দু’টি দাবি। প্রথমটি হল, ভিভিপ্যাট এবং সিসিটিভিতে যথাযথ ভাবে নজরদারি চালাতে হবে। না হলে নির্বাচনের ক্ষেত্রে সন্ত্রাস বা কারচুপির অভিযোগ বেশি করে উঠবে। একই সঙ্গে তৃণমূলের অভিযোগ, যে ভাবে লাগাতার সন্ত্রাস চলছে ত্রিপুরায়, তাদের প্রার্থী-কর্মিসমর্থকদের উপর হামলা হচ্ছে তা রুখতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। ত্রিপুরায় বিরোধী যে সমস্ত প্রার্থীরা রয়েছে, তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতেও এদিন সরব হয় তৃণমূল।
এদিনের অবস্থানে শামিল হন বাবুল সুপ্রিয়ও। বাবুলের বক্তব্য, “এখানে যে ভাবে গুন্ডামি হচ্ছে, সিসিটিভি না রাখা, ভিভিপ্যাট না রাখা। এগুলো ভোট বিধির উপেক্ষা ছাড়া কিছুই নয়। এগুলো চলতে পারে না। বাইক নিয়ে গুন্ডারা ছেলেদের ভয় দেখাচ্ছে, প্রার্থীদের হুমকি দিচ্ছে। পুলিশ আর সরকারের মধ্যে যে সমীকরণ এটা খুব খারাপ। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।”
বৃহস্পতিবার রাতেও প্রচারে বেরিয়ে হামলার মুখে পড়েন রাজ্যের প্রথম সারির তৃণমূল নেতা আশিসলাল সিং। তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়ে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের অভিযোগের নিশানায় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। অশান্তির ঘটনায় পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
এই প্রেক্ষিতে এবার ত্রিপুরার মাটিতে গরম করতে চলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে এক দিনের সফরে ত্রিপুরা যাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রচারের কাজ সেরে ফিরবেন তিনি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ত্রিপুরা পৌঁছবেন ২১ নভেম্বর। পরের দিনও তিনি বেশ কিছু কাজ নিয়ে রাজধানী আগরতলায় থাকবেন। ফলে অভিষেক-অমিত শাহ দ্বৈরথের সাক্ষী থাকবে আগরতলা।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতেও ত্রিপুরা সফরে গিয়েছিলেন অভিষেক। বিপ্লব দেবের সরকারকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে এসেছিলেন তিনি। সভা থেকে তিনি বলেছিলেন, “গোয়ায় তিন মাসের মধ্যে তৃণমূল সরকার তৈরি হবে। ত্রিপুরায় মানুষের সমর্থন আমাদের দিকে। মানুষের ভালোবাসাকে পাথেয় করে, মমতার ছবি মাথায় নিয়ে ত্রিপুরায় ২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সরকার প্রতিষ্ঠা করবে তৃণমূল”।
বিজেপি শাসিত রাজ্যে গিয়ে অভিষেক এও দাবি করেন, “তৃণমূল চাইলে এখনই একের পর এক বিজেপি বিধায়ককে দলে টানতে পারে, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তা করবে না। তাঁর কথায়, ‘আমার সঙ্গে সবার যোগাযোগ আছে। একটা সুইচ টিপলেই বিজেপি ভেঙে ১৫ জন বিধায়ক চলে আসবেন আমাদের দিকে। কিন্তু আমরা সেটা চাই না। ২০২৩ সালে বিজেপিকে উপড়ে ফেলাই লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে আমরা সফল হবই।” এবার ফের সেই রাজ্যে যাচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘গোয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন? নিজের রাজ্যে মন দিন’, খেজুরির নির্যাতিতার বাড়িতে অগ্নিমিত্রা