নয়া দিল্লি: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং-এর কাছে দরবার করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ক্ষেত্রে বাংলার বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানাবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তৃণমূল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর কাছ থেকে সময় চাওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষ্যে সমস্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রক এবং দফতরগুলি বন্ধ। সূত্রের খবর, বুধবার গিরিরাজ সিং-এর সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবার সন্ধ্যাতেই চারদিনের সফরে দিল্লি গিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গিরিরাজ সিং-এর সঙ্গে বৈঠক ছাড়া দিল্লিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদকের আর কোনও কর্মসূচি আছে কিনা, তা জানা যায়নি। দিল্লি রওনা হওয়ার সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও এই বিষয়ে কিছু জানাতে চাননি।
গত বুধবার শহিদ মিনারের সভামঞ্চ থেকেও বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, “২০২১ সালে (পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে) হেরে যাওয়ার পর কেন্দ্র একশো দিনের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। গ্রামীণ সড়ক যোজনা, আবাস যোজনা – সব টাকা বন্ধ। পরিষেবামূলক কাজের সব টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি নরেন্দ্র মোদী সভা করে বলেছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে বাংলার মানুষের হাতে দুটো লাড্ডু তুলে দেবেন। আজ সত্যিই বাংলার মানুষের হাতে কেন্দ্রীয় সরকার লাড্ডু তুলে দিয়েছে।” কেন্দ্রীয় বাজেট প্রস্তাব পেশ করার সময় বাংলার বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে থাকার প্রসঙ্গও তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, বাংলায় বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলে দেওয়া হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, “কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির ব্র্যান্ডিং-ই বদলে দেওয়া হয়েছে।” শহিদ মিনারের মঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “বাংলায় রাস্তা হলে, কার নামে হওয়া উচিত? বাংলা আবাস যোজনা, বাংলা সড়ক যোজনা, কার নামে হওয়া উচিত?”
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে দিল্লি গিয়ে মনরেগা প্রকল্পেও দুর্নীতি হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং-এ কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব জবকার্ড আধারের সঙ্গে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল মোদী সরকার। এরপরই, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১ কোটি জবকার্ড ‘ফেক’ বলে বাতিল করেছিল রাজ্য সরকার। অর্থাৎ, গত ১০ বছর ধরে এই ‘ফেক’ জবকার্ডগুলি পিছু ১০০ দিবের কাজ প্রকল্পে কেন্দ্রের থেকে অর্থ নিয়েছে বাংলার সরকার। এই বিষয়ে গিরিরাজ সিং-এর কাছে নথি জমা দিয়ে তদন্ত দাবি করেছেন শুভেন্দু।
বাংলার বকেয়ার দাবিতে মাসখানেক আগে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গিরিরাজ সিং-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদদের এক প্রতিনিধি দলও। সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো সিনিয়র নেতারা সেই দলে ছিলেন। এবার খোদ তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকই বাংলার প্রাপ্যের দাবি জানাতে চলেছেন।