নয়া দিল্লি: ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ কমিটি নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। কেন্দ্রের গঠিত প্যানেলে সদস্য হতে অস্বীকার করেছেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। তবে, রবিবার সরকার তথা বিজেপি দাবি করেছে, কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণার আগে এই বিষয়ে সম্মতি নেওয়া হয়েছিল অধীরের। কংগ্রেস নেতা সম্মতি দিয়েছিলেন। এবার, এই অভিযোগ ওড়ালেন অধীর। সোমবার এই প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেছেন, “এই অভিযোগের সূত্র কী, সরকারকে বলতে হবে।”
অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন, কমিটি গঠনের আগের রাতে তাঁকে ফোন করা হয়েছিল ঠিকই, তবে, তিনি সদস্য হওয়ার বিষয়ে সম্মতি দেননি। তাঁর দাবি, কমিটি গঠনের আগের দিন, রাত ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর দফতরের মুখ্য সচিব প্রমোদ কুমার মিশ্র তাঁকে ফোন করে এক দেশ এক নির্বাচন প্রস্তাবের বিষয়ে সরকারের কমিটি গঠনের কথা জানান। তাঁকে সেই কমিটিতে রাখা হচ্ছে,সেই কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, অধীর চৌধুরীর দাবি, তিনি আগে এই বিষয়ে সমস্ত নথিপত্র চেয়েছিলেন। সেই সকল নথি খতিয়ে দেখে তবে কমিটির সদস্য হওয়ার বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে তাঁকে কোনও নথিপত্র না পাঠিয়েই কমিটির সদস্য হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করে দেওয়া হয়। অধীর বলেছেন, “সরকারের হাতে পেগাসাস আছে। সিবিআই-ইডি আছে। ঠিক বলছি কি না, ফোন রেকর্ড খতিয়ে দেখুক সরকার। ভুল বলে থাকলে জেলে পুড়ুক।”
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর), সরকারে পক্ষ থেকে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল। বিরোধী দলগুলির পক্ষ থেকে শুধুমাত্র সদস্য করা হয় অধীর চৌধুরীকে। প্রধান বিরোধী শক্তি কংগ্রেসের সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে কমিটিতে রাখা হয়নি। শনিবার রাতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখে অধীর চৌধুরী জানিয়েছিলেন, তিনি এই কমিটির সদস্য হবেন না। এই কমিটি গঠনের পিছনে কেন্দ্রের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলে দেন তিনি। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে তিনি ‘সাংবিধানিকভাবে সন্দেহজনক, বাস্তবসম্মতভাবে অসম্ভাব্য’ বলেছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে এই বিষয়ে আকস্মিক চর্চা শুরু করার পিছনে সরকারের কোনও গোপন উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। খাড়্গেকে কমিটিতে না রাখাটা সংসদীয় গণতন্ত্রের অপমান বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
কমিটিতে রয়েছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অধীররঞ্জন চৌধুরী ছাড়া আছেন, রাজ্যসভার প্রাক্তন বিরোধী নেতা গুলাম নবি আজাদ, অর্থ কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এনকে সিং, লোকসভার প্রাক্তন মহাসচিব সুভাষ সি কাশ্যপ, বিশিষ্ট আইনজীবী হরিশ সালভে এবং প্রাক্তন মুখ্য ভিজিল্যান্স কমিশনার সঞ্জয় কোঠারি। এছাড়া, বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে কমিটির বৈঠকগুলিতে যোগ দেবেন আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল।