Voter List-Election Commission: ভোটার তালিকার নিয়ম চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা ADR-র, পিটিশন দিলেন মহুয়াও
Election Commission: তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্রও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনিও রিট পিটিশন দাখিল করে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বাতিল করার আবেদন জানিয়েছেন।

নয়া দিল্লি: ভোটার তালিকা নিয়ে বড় পদক্ষেপ করেছে নির্বাচন কমিশন। নিবিড়ভাবে ভোটার তালিকা সংশোধনের নিয়ম আনা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করল অলাভজনক সংস্থা অ্যাসেসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস। তাদের দাবি, নতুন ভোটার তালিকা সংশোধনের নিয়মে লক্ষাধিক বা কয়েক কোটি ভোটারের নাম বাদ পড়তে পারে। পরিযায়ী শ্রমিক, দলিত, আদিবাসীদেরও নাম বাদ পড়তে পারে।
চলতি বছরের শেষভাগেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই সে রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেই নিয়মে বলা হয়েছে, ভোটার পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য আধার কার্ড বা রেশন কার্ড দেখালে চলবে না। দেখাতে হবে জন্মের প্রমাণপত্র। যদি সেই প্রমাণপত্র না দেখাতে পারেন, তাহলে নাম বাদ যাবে ভোটার তালিকা থেকে।
নির্বাচন কমিশনের এই নিয়ম নিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে এডিআর। তাদের দাবি, নির্বাচন কমিশনের এই নিবিড় সংশোধনে বিহারের কয়েক কোটি ভোটারের নাম বাদ পড়তে পারে। সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের অভিযোগ, এত দিন রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল যোগ্য ভোটারদের বেছে তালিকায় নাম তোলা। এখন ভোটার হিসেবে যোগ্যতা প্রমাণের দায় আমজনতারই। গরিব, প্রান্তিক মানুষ সমস্যায় পড়বেন। অনেক মানুষ ভোটাধিকার হারাবেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্রও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনিও রিট পিটিশন দাখিল করে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বাতিল করার আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “যারা আগে ভোট দিয়েছেন, তাদেরও নতুন করে নিজেদের বৈধ ভোটার প্রমাণ করতে বলা হচ্ছে। দেশে প্রথমবার নির্বাচন কমিশন এমন পদক্ষেপ করেছে। নতুন ভোটারদের ক্ষেত্রে নিজের পাশাপাশি মা-বাবার নাগরিকত্বের প্রমাণও দিতে হবে। না দিতে পারলে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাবে। এটা সংবিধানের ৩২৬ ধারার বিরোধী।”
আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গেও বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। রাজ্যেও যেন এই নির্দেশ না দেওয়া হয়, সেই আবেদনও জানিয়েছেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, কংগ্রেস সহ একাধিক বিরোধী দলও মামলা করতে পারে।
যদিও নির্বাচন কমিশনের দাবি, তাদের সিদ্ধান্তে কোনও ভুল নেই। ভুয়ো ভোটার বাছাই করতে বা যারা দীর্ঘদিন ধরে ভোটার দেন না, তাদের নাম দেওয়ার জন্য এই নিবিড় সংশোধনের প্রয়োজন। এতে যদি কিছু ভোটারের নাম বাদ যায়, তাতে কিছু করার নেই।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, ২০০৩ সালের ভোটার তালিকায় যাদের নাম রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না। তবে যাদের জন্ম ১৯৮৭ সালের আগে, তাদের ভোটার তালিকায় নাম তোলা বা রাখার জন্য জন্মের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে। ১৯৮৭ সাল থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে যাদের জন্ম, তাদের নিজের ও বাবা-মায়ের জন্মের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে।
এই প্রমাণপত্রের মধ্যে জন্ম প্রমাণপত্র, পাসপোর্ট, পেনশন পেমেন্ট অর্ডার, পার্মানেন্ট রেসিডেন্স সার্টিফিকেট, ফরেস্ট রাইট সার্টিফিকেট, কাস্ট সার্টিফিকেটের মতো নথি গ্রহণ করা হবে। তবে আধার কার্ড গ্রহণযোগ্য নয়।
বিরোধীদের দাবি, অধিকাংশ প্রান্তিক মানুষ বা পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছে জন্মের প্রমাণপত্র নেই। এই নিয়মে তারা বৈধ ভোটার হওয়া সত্ত্বেও ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ পড়বে।





