প্রয়াগরাজ: কথায় আছে, কুম্ভে স্নান করলে নাকি মানব জীবনের সমস্ত পাপ ধুয়ে যায়। ১২ বছর অন্তর হয় পূণ্য কুম্ভ। তবে এবারের কুম্ভ আরও বিরল। ১৪৪ বছর বাদে সূর্য, চন্দ্র, বৃহস্পতি, পৃথিবী-একই সরলরেখায় আসছে। এই জন্য এবারের কুম্ভ পরিচিত মহাকুম্ভ নামে। প্রয়াগরাজে আয়োজিত কুম্ভে আনুমানিক ৪০ কোটি পূণ্যার্থী স্নান করতে আসবেন। বহু সাধু-সন্তরা এসেছেন দেশ-বিদেশ থেকে। এর মধ্যে নজর কেড়েছেন বহু বাবা বা সাধুরা। কেউ বছরের পর বছর ধরে এক হাত তুলে রেখেছেন, কেউ আবার শুধু চা খেয়ে রয়েছেন। এর মধ্যে একজন বিখ্যাত হয়েছেন, যিনি আইআইটি বাবা নামে পরিচিত।
তাঁর নামই পরিচয়। আইআইটি বাবার আসল নাম অভয় সিং। ঝরঝরে ইংরেজিতে তাঁর কথায় অবাক হয়েছিলেন সাংবাদিকরা। জিজ্ঞাসা করতেই জানা যায়, হরিয়ানার বাসিন্দা ওই সাধু আইআইটি বম্বে থেকে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। যেখানে মাসে মাসে লক্ষাধিক টাকা উপার্জনের পথ খোলা ছিল তাঁর সামনে, সেখানেই তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন ধর্মের জন্য। শিবের উপাসক তিনি।
আইআইটি বম্বে থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি চার বছর মুম্বইয়ে ছিলেন। বড় কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কিন্তু তাতে মন টিকত না। কারণ, তাঁর পেশা অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং হলেও, নেশা ছিল ফটোগ্রাফি। ঠিক যেন থ্রি ইডিয়টস-র গল্প। সেখানে যেমন ফারহান ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষে এসে নিজের নেশা ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফিকে বেছে নিয়েছিলেন, তেমনই অভয়ও নিজের নেশাকে বেছে নেন মোটা টাকার মাইনের চাকরি ছেড়ে।
আর ফটোগ্রাফির নেশাই তাঁকে ধর্মের কাছাকাছি নিয়ে আসে। বদলাতে শুরু করে জীবন। একটি কোচিং সেন্টারও খোলেন, ফিজিক্স পড়াতেন। কিন্তু মনের শান্তি কোথাও মিলছিল না। এরপরেই বড় সিদ্ধান্ত নেন। পুরো জীবনটাই শিবের আরাধনায় উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নেন।
সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ জনপ্রিয় আইআইটি বাবা। তাঁর ২৯ হাজার ফলোয়ার্স রয়েছে ইন্সটাগ্রামে। সেখানে তিনি যোগাসন, ধ্যান ও প্রাচীন ধর্মীয় রীতি-নীতি নিয়ে পোস্ট করেন। আইআইটি বাবা বলেন, “আমি বিজ্ঞানের মাধ্যমে আধ্যাত্মিকতা বুঝেছি। সবই শিব। সত্য হল শিব। শিবই সুন্দর।”