নয়া দিল্লি: দেশের মাটিতে একসময়ে চিতার অবাধ বিচরণ হলেও, পরিবর্তিত পরিবেশ ও যথেচ্ছ শিকারের কারণে ভারত থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এশিয়াটিক চিতার (Asiatic Cheetah) প্রজাতি। ১৯৪০-র দশকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া চিতা ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। গত বছর তাঁর জন্মদিনেই সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকার নামিবিয়ার (Namibia) জঙ্গল থেকে ভারতের মাটিতে পা রাখে ৮টি চিতা (Cheetah)। এরপরে সম্প্রতিই দ্বিতীয় ধাপে আরও বেশ কয়েকটি চিতা আনা হয়। মধ্য প্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে (Kuno National Park) ছাড়া হয়েছে বিদেশ থেকে আনা ওই চিতাগুলি। তবে এই চিতাদের নিয়েই বর্তমানে সমস্যায় পড়েছেন বন দফতর থেকে শুরু করে প্রশাসন। কারণ একের পর এক চিতার মৃত্যু হচ্ছে কুনোর জঙ্গলে। বিগত এক মাসের মধ্য়েই কুনোর জাতীয় উদ্যানে মৃত্যু হয়েছে সাশা ও উদয় নামের দুটি চিতার। এরপরই বহু পশুপ্রেমীরা প্রশ্ন তুলেছেন, তবে কি ভারতে চিতা আনার সিদ্ধান্ত ভুল? দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের তরফে জানানো হল, চিতাগুলিকে এক দেশ থেকে অন্য় দেশে স্থানান্তরের গোটা প্রক্রিয়াটিই অত্য়ন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, ফলে দুটি চিতার মৃত্যুর ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
নামিবিয়া থেকে ভারতে আনা দুটি চিতার মৃত্যুর পরই অনেকে দাবি করেছেন, মধ্য প্রদেশের কুনোর উদ্যানে মানিয়ে নিতে পারছে না চিতাগুলি। আবহাওয়ার পরিবর্তন থেকে শুরু করে শিকারের অভাব, বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেছেন তারা। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বন দফতর সূত্রে জানানো হল, বড় মাংসাশী প্রাণীর পুনর্বাসনের ব্য়বস্থা অত্যন্ত জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বন, মৎস্য ও পরিবেশ দফতরের রিপোর্টে মধ্য় প্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে দুই চিতার মৃত্য়ুকে স্বাভাবিক বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। এই ধরনের প্রকল্পের ক্ষেত্রে এই মৃত্যুহার প্রত্যাশিত। ওই রিপোর্টের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বড় মাংসাশী প্রাণীর পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া অত্য়ন্ত জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ। এই প্রকল্পের এটাই সবথেকে কঠিনতম পর্যায়। উন্মুক্ত অঞ্চলে চিতাগুলিকে ছেড়ে দেওয়ার পর তাদের নিত্য়দিনের জীবনের উপরে নিয়ন্ত্রণ স্বাভাবিকভাবেই কমতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে আঘাত লাগা ও মৃত্যুর ঘটনা বাড়তে থাকে। প্রকল্প শুরুর সময়ই এই বিষয়গুলি পর্যালোচনা করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গত রবিবার, ২৪ এপ্রিল কুনোর জাতীয় উদ্যানে দ্বিতীয় চিতার মৃত্যু হয়। এর আগে গত ২৭ মার্চ সাশা নামক সাড়ে চার বছরের একটি চিতার মৃত্যু হয়। দুটি চিতারই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে না আনা হলেও, কার্ডিওপুলমোনারি ফেলিওরের কারণে উদয় ও সাশার মৃত্যু হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।