চণ্ডীগঢ়: কয়েকমাস ধরেই একের পর এক ঘটনায় সংবাদ শিরোনামে পঞ্জাব। মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরেই তিনি যে আর কংগ্রেসে থাকবেন না স্পষ্টতই সেকথা জানিয়ে দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। এরপরেই চরণজিৎ চান্নিকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন সনিয়া রাহুলরা। নয়া মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেওয়ার পরে একের পর এক বিষয় নিয়ে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বাদানুবাদ একেবারে প্রকাশ্যে চলে এসেছিল।
অন্যদিকে সব রকম জল্পনা অবসান ঘটিয়ে নিজে পূর্ব ঘোষণা মত নয়া দল ঘোষণা করলেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। তাঁর নয়া দলের নাম পঞ্জাব লোক কংগ্রেস। অভিমানী ক্যাপ্টেন আগেই জানিয়েছিলেন আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট করেই লড়াই করবে তাঁর নতুন দল। এই আবহেই নতুন করে ঐক্যের বার্তা দিল পঞ্জাবের কংগ্রেস সরকার। তারা জানিয়েছে, মন্ত্রী এবং বিধায়করা দৃঢ়ভাবে মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নির পিছনে রয়েছেন এবং রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।
ক্যাপ্টেন অমরিন্দরের নয়া দল ঘোষণার পরেই বৈঠকে বসেন পঞ্জাবের শীর্ষ কংগ্রেস নেতৃত্ব। সনিয়া গান্ধীকে চিঠিতে অমরিন্দর লিখেছিলেন, একদল ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য তাঁকে বুঝিয়েছেন যে রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা তাঁকে সমর্থন করেননা। তারপরেই কংগ্রেসের এই বৈঠক রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
কংগ্রেস ছাড়ার পর রীতিমতো হুমকির সুরে অমরিন্দর জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর মন্ত্রিসভার যে সদস্য অবৈধ বালি উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত তিনি তাদের নাম প্রকাশ্যে আনবেন। এমনকি তিনি আরও জানিয়েছিলেন অনেক কংগ্রেস নেতাই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তিনি দল তৈরি করলে তারাও একে একে সেই দলে যোগ দেবেন। এরপরেই কংগ্রেসের অভ্যন্তরে দুশ্চিন্তা দেখা দেয়, তড়িঘড়ি দলের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের একসঙ্গে থাকার বার্তা দেন নয়া মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ চন্নি।
বৈঠকের পরে, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে বিধায়ক এবং মন্ত্রীরা মুখ্যমন্ত্রী চন্নিকে তার “সাহসী সিদ্ধান্তের” জন্য স্বাগত জানিয়েছেন। বিবৃতিতে, বিধানসভা অধিবেশন ডেকে কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন বাতিল করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপের উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম কমানোর কথা ঘোষণা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন দলের বিধায়করা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রাজ্য দলের প্রধান নভজ্যোত সিং সিধু বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরেই বিভিন্ন ইস্যুতে সিধুুর সঙ্গে কংগ্রেস ও সরকারে বিরোধ জনমানসে কংগ্রেস বিড়াম্বনা বাড়িয়ে তুলছিল। এই বৈঠকে সিধু উপস্থিত থাকায় সাময়িক স্বস্তি কংগ্রেস শিবিরে। আগামি দিনে পঞ্জাবে রাজনীতি কোনদিকে যায় সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।