নয়া দিল্লি : শনিবার নয়া দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা (Fumio Kishida)। জাপানের প্রধানমন্ত্রী দুই দিনের সফরের জন্য ভারতে এসেছেন। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই বৈঠকে ইন্দো-জাপান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক থেকে শুরু করে, আর্থিক বিনিয়োগ, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক এবং রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যু নিয়েও দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেছেন যে, আন্তর্জাতিক আইনকানুনের উপর ভিত্তি করে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে উপনীত হতে হবে।
এদিন বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে ইউক্রেনের বর্তমান সংঘাত নিয়ে আলোচনা করেছি। অনেক ঝামেলার কারণে গোটা বিশ্ব আজ কাঁপছে। ভারত ও জাপানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের মতামত প্রকাশ করেছি। ইউক্রেনে রাশিয়ার গুরুতর আক্রমণ সম্পর্কে কথা বলেছি। আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।” প্রধানমন্ত্রী কিশিদার আরও সংযোজন, “আমাদের উভয় দেশের উচিত একটি উন্মুক্ত ও মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সৃষ্টির জন্য প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করা। ভারতের সঙ্গে মিলে জাপান যুদ্ধের অবসানের চেষ্টা চালিয়ে যাবে এবং ইউক্রেন ও তার প্রতিবেশী দেশগুলিকে সাহায্য় পাঠানো অব্যাহত রাখবে।”
ইউক্রেন ইস্যুর পাশাপাশি অন্যান্য অনেক বিষয় নিয়েই আলোচনা করেছেন দুই প্রধানমন্ত্রী। যুগ্ম সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন, “ভারত-জাপান অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করা শুধুমাত্র দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়। এই সম্পর্ক ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতাকে বাড়িয়ে তুলবে।” কিশিদার সংযোজন, “বিশ্ব এই সময়ে বেশ কিছু ঘটনার সাক্ষী হচ্ছে। ভারত ও জাপানের মধ্যে গণতন্ত্র এবং দেশের আইনের মত অভিন্ন মূল্যবোধ রয়েছে। উভয় দেশের উচিত কোয়াডের মতো প্ল্যাটফর্মে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা যাতে আমরা একটি মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিশ্চিত করতে পারি।”
প্রসঙ্গত, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকে একের পর এক শহরে গোলা বর্ষণ, মিসাইল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রুশ সেনাবাহিনী। এক মাস হতে চলল ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিত মেলেনি। দুই পক্ষের প্রতিনিধি একাধিক বৈঠকে বসেছে। কিন্তু তাতে কোনও সুরাহা হয়নি। আন্তর্জাতিক আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। আন্তর্জাতিক আদালত অবিলম্বে সামরিক অভিযানে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে রাশিয়াকে। কিন্তু সেই রায় মানেনি রাশিয়া।