‘তৃতীয় ঢেউ অবশ্যম্ভাবী’ কবে আছড়ে পড়বে আগামী সংক্রমণ, জানালেন এইমস কর্তা

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

Jun 19, 2021 | 11:58 AM

টিকাকরণ সম্পূর্ণ না হওয়া অবধি সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের বেশি হলেই সেখানে যাতে লকডাউন করা হয়, তার উপর জোর দেন এইমস কর্তা ডঃ গুলেরিয়া।

তৃতীয় ঢেউ অবশ্যম্ভাবী কবে আছড়ে পড়বে আগামী সংক্রমণ, জানালেন এইমস কর্তা
উপচে পড়া ভিড় রাস্তাঘাটে। ছবি:PTI

Follow Us

নয়া দিল্লি: কিছুতেই রোখা যাবে না সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ (Third Wave of COVID-19)। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তা আছড়ে পড়তে পারে দেশে, এমনটাই সতর্কবাণী শোনালেন এইমসের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া। সংক্রমণ কমতেই যেখানে ধীরে ধীরে বিভিন্ন রাজ্য আনলকের পথে হাঁটছে, সেই সময় টিকা সঙ্কটের কারণে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে সকলকে ডিসেম্বরের মধ্যে টিকাকরণ। সেক্ষেত্রে কোভিশিল্ডের দুটি ডোজ়ের মধ্যে সময়ের ব্যবধানও খারাপ বুদ্ধি নয় বলেই মনে করছেন এইমস (AIIMS) প্রধান।

ভারতে প্রথম খোঁজ মেলা করোনার ডেল্টা প্রজাতি বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ডঃ গুলেরিয়াও। তিনি বলেন, “করোনাভাইরাসের এই মিউটেশন বা অভিযোজনের জন্য আলাদাভাবে নজর দিতে হবে।” ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকেই অভিযোজিত হয়ে ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তবে এতকিছুর মাঝেও সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। আনলক প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলেন, “আনলক প্রক্রিয়া শুরু হতেই সাধারণ মানুষের মধ্যে ফের করোনাবিধি নিয়ে গা-ছাড়া মনোভাব দেখা দিয়েছে। সংক্রমণের প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ থেকেও আমরা শিক্ষা নিইনি। ফের ভিড়, জমায়েত শুরু হয়েছে। ফের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। আগামী ছয় থেকে আট সপ্তাহ বা তার পরই সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। পরোটাই নির্ভর করছে সাধারণ মানুষ কতটা করোনা বিধি মেনে চলছেন এবং জমায়েত এড়িয়ে যাচ্ছেন।”

দেশে করোনা টিকাকরণ সম্পর্কে তিনি জানান, এখনও অবধি দেশের মোট জনসংখ্যার কেবল পাঁচ শতাংশই দুটি টিকা পেয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের লক্ষ্য ১৩০ কোটির মধ্যে ১০৮ কোটি মানুষকেই বছরের শেষভাগের মধ্যে টিকা দেওয়া। টিকাকরণের গতির সঙ্গে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের প্রসঙ্গ টেনে ডঃ গুলেরিয়া বলেন, “সংক্রমণের একটি ঢেউ  তৈরি হতে মোটামুটি তিন মাস সময় লাগে, তবে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তার থেকেও কম সময়ে সংক্রমণের ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। করোনা বিধি মানার পাশাপাশি কড়া নজরদারিও প্রয়োজন। গতবারই আমরা দেখেছি যে বাইরে থেকে নতুন একটি ভ্য়রিয়েন্ট এসে কীভাবে তা রূপ বদলেছে এবং দ্রুত হারে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। ভাইরাসের মিউটেশন হবে, তা জানা বিষয়। সেই কারণেই কড়া নজরদারি রাখা প্রয়োজন।”

টিকাকরণ সম্পূর্ণ না হওয়া অবধি সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের বেশি হলেই সেখানে যাতে লকডাউন করা হয়, তার উপর জোর দেন এইমস কর্তা ডঃ গুলেরিয়া। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে ব্রিটেন সহ একাধিক দেশে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেই জানান এইমস কর্তা। তিনি বলেন, “ভাইরাসে ক্রমাগত মিউটেশন হচ্ছে, তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। যেভাবে সংক্রমণের দুটি ঢেউয়ের মধ্যে ব্যবধান কমছে, তাও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রথম ঢেউয়ের সময় সংক্রমণ দ্রুতগতিতে ছড়াচ্ছিল না। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে ভাইরাস আরও দ্রুত ছড়িয়েছে। আগামিদিনেও সংক্রমণ আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি।”

আরও পড়ুন: টিকা নিয়ে সুরক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীরা, ৯৪ শতাংশ সুরক্ষা মিলছে সংক্রমণ থেকে, জানাল স্বাস্থ্যমন্ত্রক 

Next Article