নয়া দিল্লি: রাত পোহালেই সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু। তার আগে রবিবার বিকালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সভাপতিত্বে সর্বদলীয় বৈঠক (All Party Meeting) সম্পন্ন হল। যদিও এই বৈঠকে সংসদীয় বুলেটিন ছাড়া কোনও এজেন্ডা স্পষ্ট করেনি সরকার। অর্থাৎ কী নিয়ে এই অধিবেশন তা এদিনও স্পষ্ট হল না। অধিবেশনের এজেন্ডা নিয়ে কেন এত গোপনীয়তা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। যদিও সরকারের দাবি, এই অধিবেশনকে স্পেশাল অধিবেশন বলছে না তারা। এই নিয়ে অধিবেশন শুরুর আগেই সর্বদলীয় বৈঠকে কংগ্রেসের সঙ্গে বচসা বাধে সরকার পক্ষের। এছাড়া মঙ্গলবার গণেশ পুজো করে নতুন সংসদ ভবনে প্রবেশ থেকে সংসদের নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র কেবল ইংরেজি ভাষায় করা নিয়েও বিতর্ক বাধে।
আগামী কাল, ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচদিন সংসদের বিশেষ অধিবেশন বসছে। যদিও এটা বিশেষ অধিবেশন বলতে নারাজ কেন্দ্র। কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, যদি স্পেশাল সেশন না হয় তাহলে প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং জিরো আওয়ার কেন থাকবে না? তবে স্পেশাল সেশন হোক বা না হোক, এই পাঁচ দিনের অধিবেশনে অন্তত একদিন জনগণের ইস্যু নিয়ে আলোচনা করতে হবে বলে এদিন সর্বদলীয় বৈঠকে প্রস্তাব দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং রাজ্যের বকেয়া নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। লোকসভা ও রাজ্যসভায় মহিলা আসন সংরক্ষণ বিল সংসদে পাশ করানোরও দাবি জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, এদিনের বৈঠকেই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত বিলের বিরোধিতা করে সমস্ত বিরোধীদল। বিলকে অসংবিধানিক অগণতান্ত্রিক এবং বিচার ব্যবস্থার বিরোধী বলেও দাবি বিরোধীদের। নির্বাচনের মাত্র কয়েক দিন আগে কেন এই বিল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তৃণমূল।
এদিন সর্বদলীয় বৈঠকে অনন্তনাগে সেনা জওয়ানদের শহিদ হওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন ফারুক আব্দুল্লাহ। বৈঠকের শুরুতেই তিনি দাবি করেন, সরকারের উচিত শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো। তাঁর সেই দাবি মেনে বৈঠকের শেষে কাশ্মীরে শহিদ জওয়ানদের স্মৃতিতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সূত্রের খবর, সংসদে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করবে বিরোধীরা।
অন্যদিকে, এদিন সকালে নতুন সংসদ ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে বিরোধীদের অসম্মান করা হয়েছে বলেও সর্বদলীয় বৈঠকে অভিযোগ ওঠে। ডিএমকে সাংসদ তিরুচি শিবার অভিযোগ, এদিন সকালের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ছাড়া অন্য কোনও সংসদীয় দলের নেতাদের বসার চেয়ার দেওয়া হয়নি। অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র শুধুমাত্র ইংরেজিতে লেখা হয়েছে। অন্য ভাষার প্রতি এটা অন্যায়। এছাড়া আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে অনেক দেরিতে। সর্বদলীয় বৈঠকে আমন্ত্রণপত্র ছিঁড়ে প্রতিবাদও জানান তিরুচি শিবা। সংসদের অভ্যন্তরেও এভাবে আমন্ত্রণপত্র ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানানোর হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আবার মঙ্গলবার, গণেশ চতুর্থীর দিন পুজো করে নতুন সংসদ ভবনে প্রবেশ করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর বিরোধিতা করে এদিনের বৈঠকে সিপিআই-এর তরফে জানানো হয়, সংবিধান অনুযায়ী আমাদের দেশ ধর্মনিরপেক্ষ। সংসদ ভবন সব ধর্মের। কোনও একটি নির্দিষ্ট ধর্মের রীতিনীতি সংসদের অভ্যন্তরে মানাতেই আপত্তি। আবার চন্দ্রবাবু নাইডুর গ্রেফতারি নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে টিডিপি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের নেতাদের মধ্যে তুমুল বাদানুবাদ হয়।